রাজধানীতে ভাড়া বাসায় ১৫ থানার কার্যক্রম
১৩ মে ২০২৩, ১০:৫৩ পিএম | আপডেট: ১৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) তথ্যমতে, রাজধানীতে সব মিলিয়ে ৫০টি থানার কার্যক্রম চলছে। এরমধ্যে নিজস্ব ভবনে ৩১টি থানার কার্যক্রম চলছে । কমিউনিটি সেন্টার ও আবাসিক ভবন ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে ১৫টি থানার। তিনটি থানার কার্যক্রম চলছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে। আর বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের একটি ভবনে চলছে বিমানবন্দর থানার কার্যক্রম। ভাড়া বাসায় ১৫টি থানার কার্যক্রম চালাতে গিয়ে প্রতিমাসে সরকারকে গচ্ছা দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। কিন্তু দূর হচ্ছে না পুলিশ সদস্যদের কষ্ট ।
ভাড়া বাড়িতে থানার কার্যক্রম করা পুলিশ সদস্যরা বলেছেন, এখানে যেমন রয়েছে পর্যাপ্ত জায়গার অভাব, তেমনি গার্ড রুম ও অস্ত্র গোলাবারুদ রাখার স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেই। গুরুত্বপূর্ণ মামলার রেকর্ড, আলামত জব্দকৃত গাড়ি থানার আশপাশে রাস্তায় রাখায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে। থানা কমপেল´ না না থাকায় রাস্তায় রাখতে হচ্ছে যানবাহন। যে কারনে থানার সামনের রাস্তায় সব সময় লেগে থাকে যানজট। ফলে থানায় সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের নানা বিড়ম্বনায় শিকার হতে হচ্ছে।
বর্তমানে ভাড়া বাড়িতে কার্যক্রম করা থানাগুলো হচ্ছে, বংশাল, মুগদা, কলাবাগান, রমনা, কামরাঙ্গীরচর, আদাবর, শাহ আলী, উত্তরখান, দারুস সালাম, কদমতলী, বাড্ডা, রূপনগর, উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম, হাতিরঝিল ও ভাসানটেক থানা। নিজস্ব ভবনে না হওয়া সত্ত্বেও ডিএমপির চারটি থানাকে কোনও ভাড়া গুনতে হয় না। এই চার থানার মধ্যে গুলশান, বনানী ও মতিঝিলের কার্যক্রম চলছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে। আর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের একটি ভবনে চলছে বিমানবন্দর থানার কার্যক্রম।
গত ১০ বছর ধরে ভাড়া ভবনে চলছে উত্তরা পশ্চিম থানার কার্যক্রম। ছোট ছোট কক্ষ ও পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে কষ্টের শেষ নেই। শুধু পুলিশ কিংবা আনসার সদস্য নয়, সেবা নিতে আসা সাধারণ নাগরিকদের পরতে হয় নানা বিড়ম্বনায়। এ সমস্যা সমাধানে কয়েকমাস আগে উত্তরা চৌরাস্তায় স্থায়ী ভবন নির্মাণে জমি বরাদ্দের দাবিতে মানববন্ধন ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে উত্তরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, স্থানীয় এলাকাবাসী, বিভিন্ন সংগঠন, পেশাজীবী লোকজন। সোসাইটির দাবি, উত্তরায় অনেক কমার্শিয়াল প্লট খালি রয়েছে, যা অনেকেই প্রভাব খাটিয়ে দখল করে দোকানপাট করেছে। সেখান থেকে থানার জন্য জায়গা বরাদ্দ দিলে তাদের সমস্যা দূর হবে। বেঁচে যাবে মোটা অঙ্কের ভবন ভাড়া।
ডিএমপি লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন বলেন, ‘লালবাগ বিভাগের দুটি থানার জন্য প্রতি মাসে প্রায় আট লাখ টাকা এবং রমনা বিভাগের কলাবাগান থানার জন্য তিন লাখ টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। অন্যান্য থানার জন্যেও ভাড়া গুনতে হয় ডিএমপির এস্টেট শাখাকে। এ কারণে ডিএমপির বাকি থানার নিজস্ব ভবনের জন্যে আলাপ-আলোচনা চলছে।
মতিঝিল, রমনা, শাহবাগ ও রামপুরাসহ বিভিন্ন থানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, থানাগুলোতে থাকার ভালো কোনও জায়গা নেই। থানায় থাকার ব্যবস্থা রয়েছে শুধু নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা সদস্যদের। থানা ভবনে অফিসারদের জন্য বিশ্রাম কোয়ার্টারসহ সদস্যদের জন্য কোয়ার্টার না থাকায় বিভিন্ন সময় সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। এসব থানায় অফিসারদের জন্য বিশ্রামাগার ও ফোর্সদের (পুলিশ কনস্টেবল) জন্য কোয়ার্টার রাখা জরুরি।
অনেক থানার খাবার পানি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে আনতে হয়। এসব নিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলছেন, একই বিভাগের মধ্যে থানা হওয়ার পরও একেকটা একেক রকম। এর সমাধান হওয়া দরকার। মতিঝিল থানার ফোর্সদের জন্য প্রতিদিন দুই বার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস থেকে থানার পানি আনা হয়, যা থানার সামনে ট্যাংকিতে রাখা হয়। সেখান থেকে পুলিশ সদস্য ও পথচারীরা পান করেন।
পান্থপথে ছয়তলা ভবন ভাড়া নিয়ে চলছে কলাবাগান থানা। এ থানার এক কর্মকর্তা বলেন, নিচে রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। এই ভবনে থানার সব ফোর্সের থাকার ব্যবস্থা নেই। কিছু ফোর্স পুরাতন কলাবাগান থানা ভবনে থাকে। আর তেঁতুলতলা খেলার মাঠে থানার কাজ করার উদ্যোগ থাকলেও সেটা এখন খেলার মাঠ করা হয়েছে। তিনি বলেন, তেঁতুলতলা মাঠটা খেলার মাঠ করা হয়েছে। এখনও থানা করার জন্য নতুন করে জায়গা দেওয়া হয়নি। এছাড়া এখন স্থায়ী থানা ভবনের কোনও পরিকল্পনাও নাই।
আদাবর থানার সামনে সব সময় যানজট লেগে থাকে। থানার এবং আগন্তকদের গাড়ির জন্য এ সমস্যা শুরু থেকেই। তবে গতকাল শনিবার থানাচির ওসি সাকির মাহমুদ জোবায়ের ইনকিলাবকে বলেন, থানার জন্য নিজস্ব জায়গা বরাদ্ধ হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই বাউন্ডারিসহ থানা নির্মানের কাজ শুরু হবে।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার জাফর হোসেন বলেন, ‘লালবাগ বিভাগে এখনও বংশাল ও কামরাঙ্গীরচর থানা ভাড়া বাসায় চলছে। এতে যেমন পুলিশ সদস্যদের ভোগান্তি হচ্ছে তেমনই হচ্ছে বাড়তি টাকা খরচ। এই দুই থানার জন্য এলাকায় জায়গা খোঁজা হচ্ছে। পেলে হয়তো থানা দুটির স্থায়ী ব্যবস্থা হবে। বর্তমানে ডিএমপির এস্টেট শাখা থেকে থানা দুটির ভাড়া বহন করা হয়। প্রতিমাসে প্রায় আট লাখ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে।’
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘ভাড়া ভবনে ডিএমপির থানার কার্যক্রম চলায় প্রতিমাসে সরকারকে একটি মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সেই ব্যয় সংকোচন করতে ইতোমধ্যে ১৫টি থানার কয়েকটির জন্য জমি পেয়েছে ডিএমপি। আরও কয়েকটি থানার জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এছাড়া বেশকিছু থানা এলাকায় জমি খোঁজা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের কাজ এতো সহজ নয়। সব সরকারি প্রক্রিয়া। জমি অধিগ্রহণ শেষে সেটার উন্নয়ন করে থানা ভবন বানানো দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। তবে এ সমস্যা বেশি দিন থাকবে না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম