তুরস্কের আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের অর্ধেকের বেশি ভোট গণনা শেষে এগিয়ে রয়েছেন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। তবে গণনা এগুনোর সাথে সাথে ব্যবধান কমে আসায় দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণ আশা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মূল খেলোয়াড় হতে পারেন তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিনান ওগান। দেশটির স্থানীয় সময় গতকাল সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোটাররা এদিন একইসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট দিয়েছেন। প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন ২০ বছর ধরে তুরস্কের ক্ষমতায় থাকা জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) রজব তাইয়্যেব এরদোগান তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) কেমাল কিলিকদারোগলুর চেয়ে সুস্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।
তুরস্কের আইন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত ৯টার (বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা) আগে নির্বাচনের কোনো ফলাফল ঘোষণা করা হবে না। অর্থাৎ, বাংলাদেশ সময় রাত ১২টার পর থেকে ভোটের ফলাফল ঘোষণার কথা। তবে, প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার আগে সেই আইনে পরিবর্তন এনেছে তুরস্কের নির্বাচন বোর্ড।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটির তথ্য মতে, এ পর্যন্ত ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যালটের গণনা সম্পন্ন হয়েছে। এতে এরদোগান পেয়েছেন ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে, কিলিকদারোগলু পেয়েছেন ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। সিনান ওগান পেয়েছেন ৫ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট।
গতকাল সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভিড় করতে থাকে ভোটাররা, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। এদিনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে পাঁচ জোটের মাধ্যমে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল এবং ১৫০ স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়ছেন তিন প্রার্থী। তবে, এরদোগান ও কিলিকদারোগলুয়ের মধ্যে মূল লড়াই হচ্ছে।
ভোটগ্রহণের জন্য সারা দেশে এক লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫টি ব্যালট বক্স স্থাপন করা হয়। এবার নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ছিল ছয় কোটি ৪১ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে বিদেশে অবস্থানরত ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ভোটার তাদের ভোট দিয়ে দিয়েছেন। আর এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট ৪৯ লাখ নতুন ভোটার।
প্রতিজন ভোটার ভোট দিতে দুটি করে ব্যালট পান। একটি পার্লামেন্ট বাছাইয়ের জন্য এবং অন্যটি প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জন্য। নির্বাচনে জয়ীরা আগামী পাঁচ বছর দেশটির ক্ষমতায় থাকবে। তুরস্কের নির্বাচন অনুযায়ী, গতকালের এ ভোটে কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দ্বিতীয় ধাপে ভোট হবে। আর দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে ২৮ মে।
একে পার্টি সদর দফতরে উদযাপন শুরু : আল জাজিরার আমের লাফি, ইস্তাম্বুল থেকে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই একেপি সদর দফতরের সামনে উদযাপন শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটা প্রত্যাশিত নয় যে, ৩০ শতাংশ ভোট গণনা হওয়ার পরে প্রতিটি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট শতাংশের অনেক পরিবর্তন হবে। একেপি ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে যা সাধারণত বিজয়ের বক্তৃতার আগে হয়’।
এদিকে রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) পক্ষ থেকে নিজেদের এগিয়ে থাকার দাবি করা হচ্ছে। পার্টির পক্ষ থেকে রাতেই একটি প্রেস কনফারেন্স করার কথা জানিয়েছেন আল-জাজিরার সংবাদদাতা। সূত্র : আল-জাজিরা।