ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১

নান্দনিক হবে ঢাকা গেট

Daily Inqilab একলাছ হক

২৪ মে ২০২৩, ১০:৪৯ পিএম | আপডেট: ২৫ মে ২০২৩, ১২:০৩ এএম

ঢাকা গেট, রমনা গেট অথবা মীর জুমলার গেট যে নামেই ঢাকা হয় না কেন ঢাকা গেট নামেই বেশি পরিচিত। দীর্ঘদিন অযতœ অবহেলায় পড়ে থাকলেও নতুন রূপ পাচ্ছে এই ঢাকা গেট। নান্দনিক রূপে দেখা যাবে এক সময়ের অবহেলিত এই স্থাপনাটি। ঢাকা গেট নান্দনিক রূপে ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যক্রম হাতে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দোয়েল চত্বর এলাকায় বাংলা একাডেমি যেতে চোখে পড়বে হলদে রঙের মোগল আভিজাত্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা তোরণটি। ঢাকার সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে ৩৫০ বছরের প্রাচীন এই তোরণ ঢাকা গেট। সড়কের দুই পাশে গেটটির দুটি অবশিষ্টাংশ। এটি ঐতিহ্যবাহী মীর জুমলার গেট বা ঢাকা গেট।
এদিকে, ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর সংস্কার, সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও এই প্রথম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঐতিহ্যের একটি স্থাপনার সংস্কার শুরু করেছে। এছাড়া আমরা লালকুঠিতেও সংস্কার শুরু করেছি। সুতরাং ধাপে-ধাপে, পর্যায়ক্রমে আমাদের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোকে সংস্কার, সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা করব। যাতে করে বহির্বিশ্বের পর্যটকরা এসে ঢাকাকে বুঝতে পারে, জানতে পারে এবং শিখতে পারে।
ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা অন্যতম লক্ষ্য জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, নির্বাচনের সময় আমি বলেছিলাম ঢাকার যে ঐতিহ্য আছে এই ঐতিহ্যকে আমাদের ধারণ করতে হবে, সংরক্ষণ করতে হবে। শুধু দেশবাসী নয় বহির্বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। তারই একটি শুভ সূচনা আমরা করতে পারছি। এই ঐতিহাসিক ঢাকা ফটক যেটা রমনা ফটক নামেও পরিচিত ছিল একসময় তৎকালীন বাংলার সুবেদার মীর জুমলা এটি নির্মাণ করেছিলেন। সেই সময়ের চিত্র যদি আপনারা দেখেন, এই ফটকই ছিল ঢাকার মূল প্রবেশদ্বার ছিল। বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে আসার পরেই এই প্রবেশদ্বার দিয়েই সকলে ঢাকায় প্রবেশ করতো এবং এই ফটকের চারিপাশে হাতি দ্বারা পাহারারত অবস্থায় থাকতো। এরকম চিত্রও আমরা দেখেছি। আমরা সেই ইতিহাসকে, সেই ঐতিহাসিক চিত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, আমরা গত ৫০ বছর ধরে আমরা চেষ্টা করছি ঢাকার ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে। খুবই আনন্দের দিন এজন্য যে, আমাদের বর্তমান মেয়রই একমাত্র মেয়র যিনি ঢাকার ঐতিহাসিক কীর্তিগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছেন। ঐতিহাসিক ঢাকা গেট তথা রমনা গেটের সংস্কার কাজ শুরু হলো। এই ভেবে বেশি আনন্দ লাগছে।
জানা যায়, মোগল আমলে বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করতে ব্যবহার করা হতো এই তোরণ। সেই সময় এর নাম ছিল মীর জুমলার গেট। পরে কখনো ময়মনসিংহ গেট কখনো ঢাকা গেট এবং অনেক পরে নামকরণ করা হয় রমনা গেট। এ গেট রমনায় প্রবেশ করার জন্য ব্যবহার করা হতো বলে পরে সাধারণ মানুষের কাছে এটি রমনা গেট নামেই পরিচিতি পায়। তবে বাংলাদেশ সরকারের গেজেট অনুসারে এ তোরণ এবং আশপাশের জায়গার নাম দেওয়া হয়েছে মীর জুমলার গেট।
আওরঙ্গজেব বাংলার সুবেদার করে পাঠান মীর জুমলাকে, যিনি ছিলেন একজন ইরানি তেল ব্যবসায়ীর ছেলে। বাংলার সুবেদার হওয়ার পরে তিনি এই গেট নির্মাণ করেন নগর নিরাপত্তার জন্য। তৎকালীন বাংলার রাজধানী ঢাকা প্রায়ই বহিরাগত দস্যু দ্বারা আক্রান্ত হতো। ১৬৬৩ সালে মূলত মগ দস্যুদের থেকে ঢাকাকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে ঢাকার উত্তর দিকে এই গেট নির্মাণ করেন। সেই সময় মীর জুমলা গেটসংলগ্ন এলাকায় একটি নয়নাভিরাম বাগান গড়ে তোলেন, যার নাম ছিল বাগ-ই-বাদশাহি বা সম্রাটের বাগান। ঢাকার যে কয়টি নিদর্শন ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎস তার মধ্যে মোগল আমলের ঢাকা গেট উল্লেখযোগ্য। ঢাকা গেট তৎকালীন ঢাকার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিকসহ অনেক ইতিহাসের সাক্ষী। ###


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বিচারবিভাগ নিয়ে আজ রোডম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি

বিচারবিভাগ নিয়ে আজ রোডম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি

নেছারাবাদে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার নিহতদের স্মরণে বিএনপির আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল

নেছারাবাদে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার নিহতদের স্মরণে বিএনপির আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল

নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চায় চীন: শি জিনপিং

নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চায় চীন: শি জিনপিং

পতিত স্বৈরাচারের দোষর মিডিয়া আর স্বার্থান্বেষী মহল পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে

পতিত স্বৈরাচারের দোষর মিডিয়া আর স্বার্থান্বেষী মহল পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে

পাকিস্তান-ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টও মুলতানে

পাকিস্তান-ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টও মুলতানে

৭০টির বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সিআইআইই-তে অংশ নেবে

৭০টির বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সিআইআইই-তে অংশ নেবে

সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা

সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে আজ প্রতিনিধিদল যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে আজ প্রতিনিধিদল যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে

৩ হাজার কয়েদির সাজা মওকুফ অথবা হ্রাস করতে যাচ্ছে ইরান

৩ হাজার কয়েদির সাজা মওকুফ অথবা হ্রাস করতে যাচ্ছে ইরান

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর শ্রীলংকায় প্রথম নির্বাচন আজ

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর শ্রীলংকায় প্রথম নির্বাচন আজ

জুনে ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন ১৭ শতাংশ কমেছে

জুনে ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন ১৭ শতাংশ কমেছে

রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

গারো পাহাড়ের বালু খেকোদের বিরুদ্ধে এসিল্যান্ডের সতর্কবার্তা

গারো পাহাড়ের বালু খেকোদের বিরুদ্ধে এসিল্যান্ডের সতর্কবার্তা

রেকর্ডের মালা গেঁথে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

রেকর্ডের মালা গেঁথে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর, চীনকে ঠেকাতে কোয়াড কি এখনও প্রাসঙ্গিক?

মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর, চীনকে ঠেকাতে কোয়াড কি এখনও প্রাসঙ্গিক?

টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক

টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের