আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট হয়নি
০২ জুন ২০২৩, ১১:০০ পিএম | আপডেট: ০২ জুন ২০২৩, ১১:০০ পিএম
পুঁজিবাজার নিয়ে প্রশ্ন শুনে বিব্রত অর্থমন্ত্রী, অর্থসচিবের অপারগতা :: বিগত এক বছরে কেউ কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নেয়নি :: লক্ষ্যে পৌঁছতে অতীতে ফেল করিনি এবারও ফেল করব না :: আইএমএফের পরামর্শগুলো শুনলে বাংলাদেশ সফল হবে :: মূল্যস্ফীতি নিয়ে সারা বিশে^র মতো এ সরকারও শঙ্কিত :: দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে
দেশের গরীব মানুষের কথা চিন্তা করে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আইএমএফের শর্ত মেনে বা তাদের প্রেসক্রিপশনে বাজেট প্রণয়ন করা হয়নি। তাদের সার্বিক পরামর্শ যা আছে, যা তারা বলে, সেখান থেকে যেটুকু গ্রহণ করা উচিত সেটুকু আমরা গ্রহণ করবো। গতকাল শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে ১৪ বছরে মোট ১৫টি বাজেট দিয়েছে। সবগুলো বাজেটই জনকল্যাণ ও গরীববন্ধব। আগামী অর্থবছরের পুরো বাজেটই গরিব মানুষের জন্য উপহার। বর্তমান সরকার এক কোটি পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে সুলভমূল্যে চাল-ডাল-চিনি-তেল দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ উপকারভোগী হচ্ছেন। প্রস্তাবিত বাজেটে এর আওতা ও বিধাব-বয়স্কসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতা বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে আইএমএফের শর্ত বা পরামর্শের কোনো সম্পর্ক না নেই। তবে তাদের (আইএমএফ) পরামর্শ শুনলে বাংলাদেশ সফল এবং লাভবান হবে। তবে তিনি জানান, আইএমএফ লোনের (ঋণ) পাশাপাশি বাংলাদেশকে সার্বিক পরামর্শ দেয়।
জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পরের দিন অর্থমন্ত্রীর বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গত এক বছরে একজনও কালো টাকা সাদা করেননি। সুযোগ দেওয়ার পরেও কেউ এই সুযোগ নেয়নি। আমি গত বছরের বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলাম, কেউ যদি অপ্রত্যাশিত টাকা দেশে নিয়ে আসে, তাহলে সেই টাকার কোনও কর দিতে হবে না। গত বাজেটে এ সুযোগটি দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রত্যাশিত টাকা বাংলাদেশে আসেনি। তাই এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আর্থিক খাতে সুশাসন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পুরোটাই গরিব মানুষের জন্য। দেশে মধ্যম আয়ের জনসংখ্যার হার বেশি। কিন্তু তারা ট্যাক্স দেয় না। যদি সবাই ট্যাক্স দিতো তাহলে অন্যদের ভাগে কম ট্যাক্স দিতে হতো। এখন সময় এসেছে সবাইকে ট্যাক্স পেমেন্ট করতে হবে। তিনি বলেন, ধীরে ধীরে আমাদের কর্মসংস্থান বাড়ছে। ইতোমধ্যে আমরা দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষকে চাকরি দিয়েছি। এটা আমাদের অর্জন। আরো কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য আমরা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। গত বছর বাজেট ঘোষণায় আমি চাকরির ব্যাপারে যেসব প্রতিশ্রæতি করেছিলাম সেগুলো পালন করেছি। আমরা মেইড ইন বাংলাদেশ কালচারটা জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছি। এ দেশে যা জিনিস তৈরি হবে, তা দিয়ে আমাদের প্রয়োজন মিটবে।
বাজেট প্রণয়ণে আইএমএফের প্রভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই এখন অ্যালায়েন্স। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আমরা কোনো পণ্য না পেলে খুঁজি বিকল্প কোন দেশে পাওয়া যাবে। আইএমএফের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের সবার সার্বিক বিষয়ে তারা দেখে। তারা শুধু ঋণ দিয়েই সাহায্য করে না। তারা কিছু প্রজেক্টও সাজেস্ট করে। কোন কোন বিষয়গুলো ডেলিভার করা যাবে সেগুলোও তারা সাজেস্ট করে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, আএমএফের পরামর্শ শুনলে সফল হবো। তাদের ওভারঅল প্রেসক্রিপশন থাকে। তবে সেখান থেকে যেটুকু গ্রহণ করা যায় করব। বাকি সব আমরা আমাদের মতো করব।
৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে সরকার ব্যর্থ হবে না দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার বিগত বাজেটে দেওয়া প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন করেছে। ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করেছে। এবারও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় সম্ভব। এবারও বাজেট বাস্তবায়নে সফল হবে সরকার।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রথমবারের মতো আয়কর রিটার্ন পেতেও ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা টিএনআই খোলে তাদের কর দেওয়ার সামর্থ্য আছে। কর দিতে না চাওয়ার মানসিকতা থেকে জাতিকে বের হতে হবে। আপনারাই আগে বলতেন এ দেশে মিডিল ইনকাম জনসংখ্যার হার বেশি, কিন্তু তারা ট্যাক্স দেয় না। এরা সবাই যদি ট্যাক্স দিতে তাহলে অন্যদের ভাগে কম ট্যাক্স দিতে হত। আমি মনে করি, এখন সময় এসেছে সবাইকে ট্যাক্স পেমেন্ট করতে হবে।
বাজেটে এবার রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন মন্ত্রী। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কী সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, সরকার যখন প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন এনবিআর রাজস্ব ছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এখন সেটা ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যদি ৫৯ হাজার কোটি টাকা থেকে এখন যদি তিন লাখ কোটি টাকাতে যায়, যেটুকুন বাড়তি বলছেন, এটা আমরা অর্জন করবো। আমাদের প্রজেকশন যেগুলো আছে, আমরা ফুলফিল করতে পারব। গত পাঁচ বছরে আমরা যে বাজেটগুলো দিয়েছি, প্রতি বছরই বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, তা সবসময় প্রচার করেছি। ফেল করিনি, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও ফেল করব না।
মানুষের কর্মদক্ষতা ও দায়বদ্ধতার ওপর ভর করেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সবকিছুর মূলে হচ্ছে এ দেশের মানুষ, জনগোষ্ঠী। তাদের কর্মদক্ষতা, দেশের প্রতি তাদের মায়ামমতা, মানুষের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা। এটা অসাধারণ এক উদাহরণ আমি মনে করি। সেজন্য আমার বড় বিশ্বাস, আপনার (প্রশ্নকর্তা) মতো করে আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের পরাজয় নেই। লক্ষ্যে পৌঁছিতে অতীতে ফেল করিনি ইনশাআল্লাহ, আমরা বিজয়ী হবই হব, ফেল করবো না।
ডলারের দাম ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে দেশের ব্যাংক খাতে তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে। এতে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের সুদ ব্যয় বেড়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি হবে জানিয়ে বলেন, প্রতি ডলারের দাম এখন ১০৮ টাকা ১০ পয়সা। পাশপাশি সুদহারের সীমা প্রত্যাহার ও ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার কাজ চলছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় চলতি হিসাবে ঘাটতি বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের চার দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বেড়ে ১৮ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার হয়েছে। পাশাপাশি, রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন ও বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে আর্থিক হিসাবও নেতিবাচক অবস্থানে চলে এসেছে। তিনি বলেন, বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক চেষ্টায় বাজারে সাময়িক তারল্যসংকট তৈরি করে। এর প্রভাবে ব্যাংক উৎস হতে ঘাটতি অর্থায়নে সরকারের সুদ ব্যয় বৃদ্ধি পায়। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিলে আরোপ করা সুদহারের সীমা প্রত্যাহারের কাজ চলছে। একই সঙ্গে মার্কিন ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার কাজ চলছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের জুনের ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে কমে ২০২২ সালের জুনে ৪১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন হয়। রিজার্ভ ক্রমান্বয়ে আরও কমে বর্তমানে ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। একই সঙ্গে মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার মূল্যমান কমেছে। ২০২২ সালের জুনে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ছিল ডলারপ্রতি ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা। গত ২৪ মে বিনিময় হার দাঁড়িয়েছে প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ১০ পয়সা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) পাঠাতে উৎসাহ দিতে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। আগে এ প্রণোদনা দুই শতাংশ ছিল। তবে ২০২২ সালের প্রথম দিন থেকে তা বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করার ঘোষণা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রবাসী আয় খাতে প্রণোদনা বাবদ ৬২ বিলিয়ন টাকা ব্যয় করা হয়েছে। নতুন করে সহজে রেমিট্যান্স পাঠানোর উপযোগী মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসসহ (এমএফএস) অন্যান্য পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশি ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে সব ফি মওকুফ করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপের প্রভাবে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি আয় বাড়ানোর উপযোগী কার্যক্রম বাস্তবায়নের ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক অর্থায়ন ছাড়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজার নিয়ে একটি শব্দও বলা হয়নি। বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি অনেকখানি বিব্রত হন। পরে কে এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন সেটিও খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে অর্থ সচিবকে উত্তর দিতে বললে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এসময় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন বলেন, শেয়ার বাজারের বিষয়ে আমাদের বাজেটে উল্লেখযোগ্য কোনো বিষয় উপস্থাপনায় রাখা হয়নি। এই বিষয়ে কী কী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে এখন আমরা গভর্নর স্যারের কাছ থেকে জানতে পারি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্যার আমাদের সঙ্গে আছে। তিনি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।
পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটি এক্সেস কমিশনারের ভেতরে শেয়ার বাজার নিয়ে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। আমরা সিকিউরিটি এক্সেস কমিশনারের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে যে সমস্ত সমস্যা পলিসি ছিল, গত এক বছরের তিন থেকে চারটি সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটে দুইটি অংশ, একটা ইকুইট মার্কেট আরেকটা বন্ড মার্কেট। বন্ড মার্কেট কীভাবে ডেভেলপ করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে যে সমস্ত সাপোর্ট দেওয়া দরকার আমরা সেগুলো দিচ্ছি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। ঘাটতি মেটানো চ্যালেঞ্জ হবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। এমন প্রশ্রে জবাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ঋণ নিলে বেসরকারি খাতের কোনো সমস্যা হবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার সঙ্কট মোকাবিলায় প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজারে বিক্রি করেছে। তার মানে ২ লাখ কোটি টাকা বাজার থেকে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকে গেছে। এই টাকা যদি বাজারে থাকত তাহলে সরকারের ১ লাখ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া কোনো বিষয় হতো না। এখন যেহেতু বাজারে তারল্য সঙ্কট আছে, সেজন্য সরকার বন্ডের মাধ্যমে নিচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়লে যে মূল্যস্ফীতি বাড়বে, তার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ, ২ লাখ কোটি টাকা তুলে এনে ৭০ হাজার কোটি টাকা ছাড়লে টাকার সরবরাহ (ক্যাসেল আউট) কম থাকছে। আমাদের মানি সাপ্লাই যদি দেখেন, ওয়ান অব দ্য লোয়েস্ট এই রিজিওনের মধ্যে। জিডিপির মাত্র ৪০ শতাংশ মানি সাপ্লাই। যেটা ইন্ডিয়াতে ডাবল, ৭৬-৭৭ শতাংশ। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়াতে প্রায় ১০০ শতাংশ। তাই, সরকার ঋণ নিচ্ছে বলে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, এটা ঠিক না। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে বিশ্ববাজারে তেলের দাম, গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
গরমে যেন শেষ সিলেট !
গল টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা
প্রেতাত্মাদের উসকে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন হাসিনা
ময়মনসিংহে অস্ত্রসহ ডাকাত দলের ছয় সদস্য গ্রেপ্তার
খাগড়াছড়িতে হামলা, প্রতিবাদে ইবির আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নানকে জেলহাজতে প্রেরণ
কালীগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন আটক
হাবিপ্রবিতে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ভিসি নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
ফ্যাসিবাদী দোসর মিডিয়া লীগে সংস্কার জরুরী
যৌথবাহিনীর হাতে সিলেট আটক বিপুল পরিমান ভারতীয় পণ্য
পরাজিত শক্তি এবং সুবিধাবাদীরা সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে লিপ্ত- বিমানবন্দরে সংবর্ধনা কালে যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা মুশাহীদ
নোয়াখালীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ‘জুলুম-নির্যাতন করে আস্তাকুঁড়ে চলে গেছেন কাদের মির্জা’
পুলিশের সামনে হামলা বিএনপি ও যুবদল নেতা আহত
গাজীপুরে ছুটির দিনেও ২৫ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা জাতিসংঘে তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা
তিন জেলাসহ সাত বিভাগের ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ
তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আইএসপিআর এর বিবৃতি
দুই দিনেই পরাজয়ের ধ্বনি শুনছে বাংলাদেশ
ছাত্রআন্দোলনে শহীদ ছাত্রদলনেতা ওয়াসিমের কবর জিয়ারতে কেন্দ্রীয় নেতারা
অনেক সচিবসহ কর্মকর্তারা নাশকতা করার চেষ্টা করছে:রিজভী