যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
০৫ জুন ২০২৩, ১১:১৭ পিএম | আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩, ১২:০৪ এএম
দেশের বিদ্যুৎ সেক্টরের জন্য আরো একটি দুঃসংবাদ যে কোনো সময় বন্ধ হয়েছে যেতে পারে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিদিন ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট চালু রাখতে প্রয়োজন পড়ে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লার।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সর্বশেষ কয়লা মজুদের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদান না করলেও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নতুন করে কয়লার চালান না এলে আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এর উৎপাদন।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর উৎপাদনে যাওয়ার ২০ থেকে ২২ দিন পরই আমদানিকৃত কয়লার স্বাভাবিক মজুদ শেষ হয়ে যায়। ডলার সঙ্কটে এলসি খুলতে না পারায় রিজার্ভ কয়লা দিয়ে আরও পাঁচদিন উৎপাদন চালু রাখা হয়। পরে রিজার্ভ কয়লার মজুদ শেষ হয়ে গেলে গত ৪ জানুয়ারি সকালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর মাত্র ২৭ দিনের মাথায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার প্রথম ইউনিটটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে কয়লা সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এক মাসের মাথায় আবার উৎপাদনে ফেরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। গত ১৫ এপ্রিল রাত থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আবারও বন্ধ হয়ে যায় এই মেগা প্রকল্পের উৎপাদন। তিন দিন বন্ধ থাকার পর ১৮ এপ্রিল সচল হলেও কয়লা সঙ্কটে ২৩ এপ্রিল রাত থেকে ফের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৬ মে আবারও বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হয়।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম জানান, বর্তমানে ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা এসেছে। সামনে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আসবে। আমাদের মোট এক লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ ছিল। সেটাই ধাপে ধাপে আসছে। মূলত, সঙ্কট তো হচ্ছে ডলার নিয়ে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যেন এ সঙ্কট মোকাবিলা করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা যায়।
তিনি আরো জানান, নিয়মিত ৫৬০ থেকে ৫৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে ৪৬০ মেগাওয়াট ঢাকার জাতীয় গ্রিডে এবং ২০০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হয়।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু রাখতে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে ১ লাখ মেট্রিকটন কয়লায় মোট ২০ দিন উৎপাদন সচল রাখা সম্ভব। প্রথম দফায় আমদানিকৃত এই ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা দিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে উৎপাদন চলছে। এ হিসাবে ক্রয়াদেশকৃত কয়লা সময় মত এসে না পৌঁছালে আগামী ৪ থেকে ৫ দিন উৎপাদন চলবে। বাকী ৫০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা এলে দৈনিক ৫ হাজার মেট্রিকটন হিসাবে ১০ থেকে ১১ দিন উৎপাদন চলতে পারে। এরপর নতুন করে কয়লা না এলে বন্ধ হয়ে যাবে উৎপাদন। নতুন করে কয়লার ক্রয়াদেশ আপাতত নেই বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
এদিকে, বারবার কয়লার অভাবে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে প্রকল্পটি নিয়ে সরকারের শুরু থেকেই অদূরদর্শিতাকেই দায়ি করছেন সংশ্লিষ্টরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক একজন ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির আগে একটি পরিপূর্ণ পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। উৎপাদন সচল রাখতে কীভাবে জ্বালানির যোগান দেয়া হবে, সেটা আগে নিশ্চিত করা উচিত ছিল। এখন চালু করার পর অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন কয়লা আসবে।
তিনি আরো বলেন, একটি ইউনিট সচল রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, দুটো ইউনিট চালু হলে অবস্থা আরো নাজুক হয়ে পড়তো। সরকারকে এখন এটি চালু রাখতেই হবে কারণ যৌথ মালিকানার প্রতিষ্ঠান এটি। পরিকল্পনায় ভুল থাকায় বারবার কয়লার অভাবে রামপালের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ মালিকানায় সমান অংশীদারিত্বে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। এই প্রকল্পের মূলধনের ৩০ শতাংশ করে ৬০ শতাংশ উভয় দেশের এবং বাকী অংশ ভারতীয় ঋণ। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের যাবতীয় কাজ করেছে এবং এখন কেন্দ্রটি পরিচালনা করছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
লিসান্দ্রো মার্তিনেজকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পাচ্ছেনা আর্জেন্টিনা
খালাস পেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক এপিএস অপু
পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক তল্লাশি
আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ১৮.৪৬ বিলিয়ন ডলার
অফিস-আদালতসহ সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয় : রিজভী
পার্লামেন্টে ক্ষমা
ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তায় নতুন প্রহরী: রোবট কুকুর!
লুকিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করায় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে বহিস্কার
মাকে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ছেলে গ্রেফতার
সীমান্তে ৪ বাংলাদেশী নারী আটক
গুলি বর্ষণকারী ৭৪৭ পুলিশ শনাক্ত গ্রেফতারের উদ্যোগ নেই
সিলেটে মতবিনিময় সভা করলো নেজামে ইসলাম পার্টির
স্বামী স্ত্রীকে শর্ত লাগিয়ে তালাক দেওয়ার পর শর্ত উঠিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে।
আন্তঃনগর ট্রেনের সময় পরিবর্তন করুন
জনপ্রশাসনে মেধাশূন্যতা : কারণ ও প্রতিকার
ভারতীয় হেজিমনি ও আওয়ামী লীগের আত্মঘাতী রাজনীতি
বিতর্ক পরিহার করতে হবে
ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে যাবে না
নির্বাচনে হারার পর প্রথমবার জনসমক্ষে বাইডেন ও কমলা