রাজধানীর রমনা এলাকায় গত রোববার গুলিবিদ্ধ হন মানিক নামের এক যুবক। যিনি শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এবং পরিবহন ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর কর্মচারি। বাচ্চুর পরিবহন ব্যবসা দেখভাল করেন মানিক। গত রোববার মানিকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা ছিনতাই ছিল না। বরং মানিক নামের ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হন তার নিয়োগকারী বাচ্চুর বেইলি রোডের লেক ভিউ অ্যাপার্টমেন্টে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) বলছে, বাসা থেকে গুলিবিদ্ধ মানিককে হাসপাতালে নিয়ে যান বাচ্চু নিজেই। যে গাড়িতে মানিককে হাসপাতালে নেয়া হয় সেটিও বাচ্চুর। ডিবির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, এটা ছিনতাইয়ের ঘটনা নয়। আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছিনতাইয়ের নাটক সাজানো হয়। তিনি বলেন, এ ঘটনায় বাচ্চু ও তার বাসার কর্মী মহিউদ্দিন রুবেল নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। পাশাপাশি পুলিশ পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করেছে। জব্দ করা হয়েছে একটি গাড়ি, যেটিতে করে গুলিবিদ্ধ মানিককে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে গতকাল আদালেতে পাঠানো হয়েছে।

বাচ্চু আগামি কমিটিতে শাহবাগ থানা আ’লীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশী। রমনা থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, আমরা কর্ণফুলী ও আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে গুলির কোনো কোনো ঘটনার সত্যতা পাইনি।’
ডিবি সূত্র জানায়, নিরাপত্তাকর্মীরা পুলিশকে জানান, গত রোববার বিকেলে গুলির ঘটনার পর বাচ্চু নিজে মানিককে কোলে করে বাসার নিচে নিয়ে আসেন। গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। বাচ্চু শুরুতে পুলিশের কাছে বলেন, ছিনতাইকারীরা মানিককে গুলি করেছেন। লেক ভিউ অ্যাপার্টমেন্টের তত্ত্বাবধায়ক রমজান আলী বলেন, ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে বাচ্চু ও তার সহকারী মহিউদ্দিন থাকেন। বাচ্চুর পরিবারের সদস্যরা থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। মানিক প্রায় প্রতিদিনই বাচ্চুর ফ্ল্যাটে আসতেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির কর্মকর্তারা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাচ্চ দাবি করেন, তার লাইসেন্স করা পিস্তল পরিষ্কার করছিলেন মহিউদ্দিন। এ সময় অসাবধানতাবশত ঘটনাটি ঘটে। মহিউদ্দিনও একই বক্তব্য দিয়েছেন। তবে ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, মহিউদ্দিন তার নিয়োগকর্তাকে বাঁচাতে এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। মানিকের বুকের এক পাশে গুলি লেগেছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।