ঘর পাচ্ছে ২২ হাজার পরিবার
০৮ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪২ পিএম | আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
ভ‚মিহীন ও গৃহহীন অসহায় মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আরও ২২ হাজার ১০১টি পরিবার নতুন ঘর পেতে যাচ্ছে। আজ বুধবার বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা এসব ঘর পরিবারগুলোর কাছে তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দেশের ১২৩টি উপজেলাকে সম্পূর্ণ ভ‚মিহীন-গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে ১২টি জেলার সব উপজেলা এই কৃতিত্বের অধিকারী হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে এসব ঘর দেওয়া হচ্ছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১ পরিবার ভ‚মিসহ স্থায়ী নীড় পেয়েছে, যাদের থাকার জন্য নিজের কোনো জায়গা বা ঘর ছিল না। গত ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, ২০ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং মুজিববর্ষে তৃতীয় পর্যায়ে দুই ধাপে মোট ৫৯ হাজার ১৩৩টি ঘর বিতরণ করা হয়েছে। এবার ২২ হাজার ১০১টি ঘর দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে বিতরণ করা মোট ঘরের সংখ্যা হবে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১টি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভ‚মিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ২২ হাজার ১০১টি বাড়ি হস্তান্তরের মধ্যে দিয়ে আরও ১২টি জেলাকে গৃহহীন ও ভ‚মিহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন। ৪১টি জেলার আরও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভ‚মিহীন ঘোষণা করা হবে। এর ফলে গৃহহীনমুক্ত মোট উপজেলা হবে ৩৩৪টি এবং সম্পূর্ণ গৃহহীন ও ভ‚মিহীনমুক্ত জেলা হবে ২১টি।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগীদের মধ্যে এসব ঘর হস্তান্তর করবেন। ভিডিও কনফারেন্সে তিনটি আশ্রয়ণ প্রকল্প– খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত সোনার বাংলা পল্লি, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমান উল্ল্যাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে যুক্ত হবেন তিনি। উপকারভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথাও বলবেন প্রধানমন্ত্রী। মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহ ও ভ‚মিহীন থাকবে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালের মে মাসে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ৬৩ হাজার ৯৯৯টি একক গৃহ হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে ৭৪৩টি ব্যারাকে ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসনও করা হয়। একই বছরের জুনে দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণ করা ঘরের সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ৬৭৪টি। চলতি বছরের মার্চে চতুর্থ পর্যায়ের ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। এ পর্যায়ের অবশিষ্ট ঘর আজ হস্তান্তর করা হবে।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় চারটি পর্যায়ে এরই মধ্যে সারাদেশে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১টি পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবারে গড়ে পাঁচজন করে সদস্য হিসাবে মোট ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৩৫ জন ছিন্নমূল মানুষ পুনর্বাসিত হয়েছেন। উপকারভোগীর সংখ্যা ও পুনর্বাসন পদ্ধতি বিবেচনায় এটি বিশ্বের বৃহত্তম সরকারি পুনর্বাসন কর্মসূচি।
তিনি বলেন, চতুর্থ পর্যায়ের ঘরগুলো হস্তান্তরের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা সম্পূর্ণ ভ‚মিহীন-গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে। এর আগে দুই দফায় আরও ৯টি জেলার সব উপজেলাসহ মোট ২১১টি উপজেলাকে ভ‚মিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মুজিববর্ষের বিশেষ কর্মসূচি হিসেবে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় অবৈধ দখলে থাকা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে গৃহহীনদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। সারাদেশে এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা খাস জমির পরিমাণ ৬ হাজার ২০০ একর। যার আনুমানিক স্থানীয় বাজার মূল্য ৩ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া আরও ৩২৩ একর জমি কিনে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে, যার বাজার মূল্য ২১৫ কোটি টাকা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেন। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভ‚মিহীনদের বাড়ি ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ নেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬০৭টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৪১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ জন (একটি পরিবারে পাঁচ সদস্য ধরে)।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প ইতোমধ্যে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৭ পরিবারকে সরাসরি পুনর্বাসন করেছে এবং ভ‚মি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কর্মসূচির অধীনে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯০ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি
যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা
আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প
হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি
রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'
‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’
যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত
ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার
ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস
ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি
কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫
ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি
উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন
বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের
নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত
সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প