জনতার প্রতিরোধে এবার ভোট চুরির সব আয়োজন ব্যর্থ হয়ে যাবে
২৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩০ পিএম | আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১০:২১ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়ে একটি অবৈধ সরকার অবৈধভাবে দেশ পরিচালনা করছে। কিন্তু আজকের এই প্রেক্ষাপটে, ভোট চুরির প্রকল্প এই যে রেজিম এটার মধ্যে কারা আছে? এর মধ্যে আছে, দুর্নীতিবাজ দুর্বৃত্ত রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, লুটেরা ব্যবসায়ী, আছে আওয়ামী জাতীয় বিচারক লীগ। এটা নতুন এডিশন। ভোট চুরির প্রকল্পে নতুন সংযোজন আওয়ামী বিচারক লীগ। তবে জনতার প্রতিরোধ ভোট চুরির সব আয়োজন ব্যর্থ হয়ে যাবে। তিনি গতকাল বুধবার বিকালে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের আইনজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির একদফা দাবির সমর্থনে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট চট্টগ্রামের উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের আহবায়ক সাবেক পিপি এড. আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে ও প্রধান সমন্বয়কারী এড. জহুরুল আলমের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক এড. জয়নুল আবেদীন, যুগ্ম আহবায়ক এড. সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এড. এ এস এম বদরুল আনোয়ার, বাংলাদেশ ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. জসীম উদ্দীন সরকার, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নাজিম উদ্দীন চৌধুরী।
আমীর খসরু বলেন, যাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম চালাচ্ছে এর মধ্যে বিচারক লীগ নতুন সংযোজন। আমাদের একটি বিষয় বুঝতে হবে। সেটা হচ্ছে এই বিচারক লীগের ভূমিকা কি? এই যে প্রেক্ষাপটটা সৃষ্টি হয়েছে বিচার বিভাগের যে নতুন অ্যাক্টর যারা নিজেদের আধা প্রকাশ করতে পারে। আগে প্রকাশ না করে কাজ করেছেন, এখন নিজেদেরকে প্রকাশ করছেন। প্রকাশ করার পেছনে যে বার্তা জাতি পেয়েছে সেটা হচ্ছে সবচেয়ে বিবেচ্য বিষয়। বাংলাদেশের এই গোষ্ঠী যারা একটি ভোট চুরির প্রকল্পের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণের সাংবাধিক, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে টিকে আছে তার মধ্যে এই বিচারকলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, কোর্টগুলোতে এখন প্রতিদিন বাংলাদেশের নাগরিকদের বিচার মাধ্যমে নাগরিক সুরক্ষা পাওয়ার বদলে নাগরিকরা সুরক্ষা তো পাচ্ছেইনা বরং অন্যায় ও অবিচারের শিকার হচ্ছে। ভোট চুরি প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতা কর্মীদের প্রতিদিন কোর্টে উপস্থিত থাকতে হচ্ছে। বিচারকের মূল ভূমিকা ও তাদের শপথ হচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধান এবং বিচারের সুরক্ষা করবে। তারা স্বাধীন ও নিরপেক্ষ থাকবে। তারা কোনো রাজনীতিতে অংশ নেবে না। এটা কোড অব কন্ডাক্ট। এটা বিশ্বজুড়ে। রাজনীতিতে তারা ভাবাবেগে প্রভাবিত হয়ে কিংবা নিজের মতামতে প্রভাবিত হয়ে তারা বিচার করতে পারবে না। এটা তো বাংলাদেশে নেই।
তিনি বলেন, সংবিধান বিচারককে দায়িত্ব দিয়েছে সংবিধান রক্ষা করার জন্য। দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে ভোটাধিকার হচ্ছে অন্যতম অধিকার। ভোট হচ্ছে গণতন্ত্রের বাহক। ভোট ছাড়া কোনো গণতন্ত্র হতে পারে না। ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে, সাংবিধানিক অধিকার সে ভোটের মধ্যে প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, এক বিচারক বলছে বিচারকরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। অথচ তার দায়িত্ব বাংলাদেশের আইন রক্ষা করা। কোন দল ক্ষমতায় আসবে এটা কি তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? তাদের কথাবার্তায় কি প্রকাশ পায় না তারা কি চাচ্ছে বাংলাদেশে। বিচারকরা এমন কি উপদেশও দিতে পারে না। এমন উপদেশ দিতে পারে না যেটা তার নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন ঘটতে পারে। যেটা তার রাজনৈতিক ভাবনার প্রতিফলন ঘটতে পারে। এটা হচ্ছে বায়াস্টনেস। এটা সে দিতে পারে না।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে আপনার ভোট কেড়ে নিচ্ছে। নেতা শূন্য, কর্মী শূন্য, একটা নির্বাচন তাদের মাধ্যমে করাতে চাচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ৪০ লাখ নামের সাথে আরও কয়েক লাখ যুক্ত হচ্ছে। প্রতিদিন এখন হেয়ারিং হচ্ছে। আবার সেই নির্দেশ আসছে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে। পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে চিঠিগুলো সহজে গণমাধ্যেমগুলোতে দেখা যাচ্ছে। তারা বিচারবিভাগকে কি নির্দেশ দিচ্ছে, কর্মকর্তাদের কি নির্দেশ দিচ্ছে। প্রতিদিন যেতে হবে, সাক্ষী দিতে হবে। যে পুলিশ অফিসার সাক্ষী দেবে না তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট হবে।
আমীর খসরু বলেন, বিচারকদের বলা হয়েছে দ্রুত বিচার শেষ করে দলকে নেতাশূন্য, কর্মীশূন্য করে এমন নির্বাচনী পরিবেশ যাতে তারা আবার ক্ষমতা দখল করতে পারে। এই সমস্ত বিচারক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত ও লুটেরা ব্যবসায়ী এদের সবার কাজ কিন্তু একটাই। সেই দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণকে বাইরে রেখে আবার ক্ষমতা দখলে আওয়ামী লীগকে সহায়তা করা। এই সমস্ত বিচারক যারা এসব কাজ করছে তারাও কিন্তু ভোট চুরি প্রকল্পের একট অংশ। যে সমস্ত বিচারক ভোট চুরির প্রকল্পের রাজনীতির সাথে জড়িত একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়া জন্য, আপনারা আপনাদের চেয়ার থেকে অব্যাহতি নিয়ে শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ হয়ে যান। কারও কোনো আপত্তি থাকবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এড. জয়নুল আবেদীন বলেন, শেখ হাসিনা ১৮ সালের নির্বাচনে সারাদেশে ভোট চুরি করেছিল, কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে ভোটও চুরি করে নিয়ে গেছে। তারা এখন শপথবদ্ধ রাজনীতি শুরু করেছে সমস্ত বিচার বিভাগকে ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু বিচারকের আসনে বসে রাজনীতি করার কোন সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। সর্বশেষ কাঁচা মরিচকেও সিন্ডিকেট করে খেয়ে ফেলেছে। শেখ হাসিনা পারেনা এমন কোন কাজ নেই। দেশের সব টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ওবায়দুল কাদেরকে রেখেছে এর পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য। তিনি আগে বলতেন, খেলা হবে, এখন কিন্তু আর বলে না। এখন আবার নতুন করে বলা শুরু করেছে, তত্ত্বাবধায়কের কথাতো বিদেশিরা বলে নাই। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে দেশে কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেছিলেন। তাই সরকার সেটাকে ধ্বংস করতে চায়। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, দেশ এখন সঙ্কটকাল পার করছে। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সমগ্র জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সরকার বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছে। বিচারপতি এসকে সিনহাকে জোর করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার যা চায় বর্তমান বিচারকরা তাই রায় দিচ্ছেন। তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের রায়ও এ ধরনের বিচারপতিদের কাছ থেকে এসেছে। আগামীতে এদেরকে বর্জন করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এড. জসীম উদ্দীন সরকার বলেন, দেশে আইনের শাসন আজ ভূলুণ্ঠিত। বর্তমান অবৈধ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। সারা বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। তারা ১৮ সালের নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করেছে। তারা এখন মৃত ব্যক্তির জানাজাও পড়তে দেয় না। তাদেরকে আর বিশ্বাস করা যায় না। শেখ হাসিনার অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সংস্কারের ৩১দফায় তারেক রহমান শিক্ষকদের অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন - ডা. মাজহার
৪৩তম বিসিএসের ২৬৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম জয়ন্ত ও মধুমেলা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা
পাকিস্তানের সামরিক আদালতের বিচারকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
রেকর্ড ও পরিসংখ্যানের আয়নায় তামিম
আমরা বিগত ১৮ বছর আওয়ামী জাহেলিয়াতের যুগ পার করেছি- মাওলানা এ টি এম মা’ছুম
টঙ্গীতে নূরুল ইসলাম সরকারের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ
দোয়ারাবাজারে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ
ক্যাম্পাস সমূহ র্যাগিং ও মাদকমুক্ত রাখতে হবে: প্রফেসর ড. মাছুমা
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবীনদের বরণ করে নিলো শহীদ নূর আলী কলেজ
ঈশ্বরগঞ্জে শহীদ পরিবার ও আহতদের মাঝে আর্থিক সহায়তা
ডনবাসের তিনটি এলাকা মুক্ত করেছে রাশিয়া
মার্চের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে: পরিবহন উপদেষ্টা
খনন ফিল্ডে প্রত্নতাত্ত্বিক তারিখ নির্ধারন সংক্রান্ত মাঠ কর্মশালা
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরে যুব সমাবেশ
ফ্যাসিস্ট দোসর তাপসকে হঠাৎ হিরো বানানোর চেষ্টা!
আ’লীগের নিবন্ধন থাকবে কি না সময় বলে দিবে: সিইসি
সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৪ নিহত ১
দিনাজপুরের প্রখ্যাত লেখক, গবেষক ও সাঁওতাল লোকসংস্কৃতিবিদ গণেশ সরেন আর নেই
ফ্যাসিস্টরা জয়ী হলে ২ লাখ মানুষকে জেলে যেতো: প্রেস সচিব