থাকছে না বাড়তি কর
২৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪১ পিএম | আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৩, ১১:৪৪ পিএম
সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীর জন্যই নিরাপদ বিনিয়োগের নাম হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। আবার নিশ্চিত ও সর্বোচ্চ মুনাফার দিক থেকেও সঞ্চয়পত্র সবচেয়ে আকর্ষণীয়। তবে নতুন আয়কর আইনে সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে করদাতার আয় হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। অথচ পুরোনো আইনে মুনাফার অর্থ করদাতার আয়ের সঙ্গে যুক্ত হতো না, শুধু মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হতো, যা করদাতার চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচিত হতো। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র থেকে পাওয়া মুনাফার ওপর আর কোনো কর দিতে হতো না।
নতুন আইনে একই হারে উৎসে কর কাটলেও অন্য (চাকরি, ব্যবসা, বাড়ি ভাড়া প্রভৃতি) আয়ের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা যোগ করে করদাতার চূড়ান্ত করদায় নির্ধারণ করা হবে। এ কারণে ক্ষেত্রবিশেষে চলতি করবর্ষ থেকেই করদাতাদের বাড়তি কর দিতে হবে। এই আইনটি পেনশনভোগী, দরিদ্র, নি¤œ আয় থেকে যৎসামান্য জমা করে ভবিষ্যতে কিছু করার আশায় বেঁচে থাকা লাখ লাখ মানুষকে চরম আঘাত করে। বিভিন্ন ফোরামে সমালোচনাও হয় ব্যাপক। সেই সঙ্গে ওঠে এই আইন বাতিলের দাবি।
অবশেষে গতকাল বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জানানো হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে করদাতার আয় হিসেবে গণ্য করা হবে না। উৎস থেকে অর্জিত আয়ের বিপরীতে অতিরিক্ত কোন করদায় পরিশোধ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
এছাড়া ব্যাংকে সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানত থেকে অর্জিত মুনাফাকে আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী করদাতার আয় হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল। রপ্তানির বিপরীতে সরকার যে নগদ সহায়তা দেয়, সেই অর্থকেও দেখানো হয়ছিল আয়। অর্থাৎ এই আয়ের বিপরীতে কর দেওয়া বাধ্যবাধকতা। এবার সে বিষয় থেকে সরে দাঁড়াল এনবিআর। প্রজ্ঞাপন সূত্রে এতথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নতুন আইন থেকে অব্যাহতি প্রদান না করলে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারী বিপাকে পড়তেন। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, যদি একজন করদাতার বার্ষিক আয় ১০ লাখ টাকা হয়, সেক্ষেত্রে ব্যক্তিশ্রেণির আয়করের সীমা অনুযায়ী এ আয়ের বিপরীতে তাকে বার্ষিক ৭২ হাজার ৫০০ টাকা কর দিতে হতো। পাশাপাশি তিনি প্রতিবছর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের বিপরীতে দুই লাখ টাকা মুনাফা পান। ব্যাংক দুই লাখ টাকা মুনাফার ওপর ২০ হাজার টাকা উৎসে কর কর্তন করে করদাতার ব্যাংক হিসাবে বাকি অর্থ স্থানান্তর করে থাকে। এতদিন ২০ হাজার টাকা উৎসে কর চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনা করা হতো। করদাতা উৎসে কর কর্তনের বিষয়টি রিটার্নে শুধু উল্লেখ করতেন। অর্থাৎ করদাতা মোট আয়ের (বার্ষিক আয়+সঞ্চয়পত্রের মুনাফা) ওপর আয়কর দিলেন ৭২ হাজার ৫০০ টাকা।
নতুন নিয়মে, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা করদাতার বার্ষিক আয়ের সঙ্গে যোগ হবে। সে হিসাবে ওই করদাতার বার্ষিক আয় দাঁড়াবে ১২ লাখ (১০ লাখ টাকা বার্ষিক আয়+দুই লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রের মুনাফা) টাকা। এর বিপরীতে তাকে ব্যক্তিশ্রেণির সীমা অনুযায়ী এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা কর দিতে হবে। যেহেতু ব্যাংক ২০ হাজার টাকা উৎসে কর কেটে রেখেছে, তাই করদাতাকে রিটার্নের সঙ্গে ৮৫ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। অর্থাৎ করদাতাকে আগের চেয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেশি কর দিতে হবে। তবে এই আইনের ধারা বাতিল হওয়ায় স্বস্তি ফিরবে বিনিয়োগকারীদের।
এছাড়া রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করতে সরকার ১ থেকে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে। এ সহায়তার বিপরীতে ১০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হয়। রপ্তানিকারকরা দীর্ঘদিন ধরে এ খাতের উৎসে কর বাতিলের দাবি জানিয়ে এলেও তা বহাল রাখা হয়েছে। নতুন আইনে পুরোনো আইনের ৮২(সি) ২ (ডি) ধারা বিলুপ্ত করার কারণে রপ্তানি প্রণোদনার ওপর বাড়তি করের বোঝা আরও চেপে বসতো। সহায়তার অর্থ রপ্তানিমুখী শিল্পের আয় হিসাবে গণ্য করার বিধান রাখা হয়েছিল। এই আইন রপ্তানি খাতের সঙ্গে তামাশা করার শামিল বলে মন্তব্য করেছিলেন রপ্তানিকারকেরা। তবে প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করতে নগদ সহায়তাকে রপ্তানি আয় হিসেবে আর গণ্য করা হবে না। অর্থাৎ তা করের আওতায় থাকছে না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মুকসুদপুর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিএনপির দু গ্রুপের সভা হয়নি গোটা উপজেলার পরিবেশ শান্ত
সংস্কারের ৩১দফায় তারেক রহমান শিক্ষকদের অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন - ডা. মাজহার
৪৩তম বিসিএসের ২৬৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম জয়ন্ত ও মধুমেলা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা
পাকিস্তানের সামরিক আদালতের বিচারকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
রেকর্ড ও পরিসংখ্যানের আয়নায় তামিম
আমরা বিগত ১৮ বছর আওয়ামী জাহেলিয়াতের যুগ পার করেছি- মাওলানা এ টি এম মা’ছুম
টঙ্গীতে নূরুল ইসলাম সরকারের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ
দোয়ারাবাজারে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ
ক্যাম্পাস সমূহ র্যাগিং ও মাদকমুক্ত রাখতে হবে: প্রফেসর ড. মাছুমা
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবীনদের বরণ করে নিলো শহীদ নূর আলী কলেজ
ঈশ্বরগঞ্জে শহীদ পরিবার ও আহতদের মাঝে আর্থিক সহায়তা
ডনবাসের তিনটি এলাকা মুক্ত করেছে রাশিয়া
মার্চের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে: পরিবহন উপদেষ্টা
খনন ফিল্ডে প্রত্নতাত্ত্বিক তারিখ নির্ধারন সংক্রান্ত মাঠ কর্মশালা
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরে যুব সমাবেশ
ফ্যাসিস্ট দোসর তাপসকে হঠাৎ হিরো বানানোর চেষ্টা!
আ’লীগের নিবন্ধন থাকবে কি না সময় বলে দিবে: সিইসি
সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৪ নিহত ১
দিনাজপুরের প্রখ্যাত লেখক, গবেষক ও সাঁওতাল লোকসংস্কৃতিবিদ গণেশ সরেন আর নেই