ডাল ঘুটুনির পিটুনিতে নিস্তেজ হয়ে হেনা
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:২৬ পিএম | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
রুমের দরজা বন্ধ করেনি মেয়েটি। দোষ তার এতটুকুই। এতেই ক্ষিপ্ত হয় গৃহকর্ত্রী। দরজা বন্ধ না করার অভিযোগে শিশু গৃহকর্মীকে নিেেয় যাই রান্না ঘরে। সেখানে ডাল ঘুটুনি দিয়ে শিশুটিকে প্রহার করতে থাকি। এক পর্যায়ে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে। দেখি শিশুটির শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে। এক পর্যায়ে তার শ্বাস প্রশ্বাস নিতে যতœবান হই। কিন্তু তখন দেখি শিশুটি পুরোপুরি নিস্তেজ। হাতের পালস পরীক্ষা করি। এক পর্যায়ে বুঝতে পারি শিশুটি আর বেঁচে নেই। আর তখনই শিশুটিকে খাটে রেখে নিজের সাড়ে বছরের সন্তান নিয়ে নিচে নেমে আসি। চলে যাই যশোরে। ঢাকার সেন্ট্রাল রোডের বাসায় ৮ বছরের শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া গৃহকর্ত্রী সাথী পারভীন ডলি গ্রেফতার পরবর্তী পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশু হত্যার এভাবেই লেঅমহর্ষক বর্ননা করেন।
গত রাতে দৈনিক ইনকিলাবের সাথে কথা হয় কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামের। তিনি সাথীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি বলেন, গৃহকর্মীকে হত্যার পর সাথী যশোর কোতয়ালী এলাকায় চলে যান। সেখানে তার সাবেক স্বামীর একটি হাসপাতাল রয়েছে। ডলির বিশ্বাস ছিলো তার সাবেক স্বামী রাহাত বিপদের সময় তাকে শেল্টার দিবেন। কিন্তু ঘটেছে উল্টো। যশোরে যাবার পর স্বামীকে অনেক অনুরোধ করলেও তিনি আবেগ না দেখিয়ে উল্টো পুলিশে খবর দেন। সেখান থেকে গতকাল শনিবার তাকে আমরা ঢাকায় নিয়ে আসি। আজ রোববার ডলিকে আদালতে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ আগস্ট কলাবাগান সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসা থেকে শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যার পর পালিয়ে যান সাথী আক্তার। এ ঘটনায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ।
নিহত শিশুটি ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা নন্দীবাড়ি গ্রামের মৃত হক মিয়ার সন্তান। এতিম এই শিশুকে নির্যাতন করে খুন করেন ডলি। যিনি ওই ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাদের কাছে ‘ডাইনি’ নামে পরিচিত।
কলাবাগান থানার ওসি বলেন, শিশুটির আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো একদিন গৃহকর্ত্রী সাথী ময়মনসিংহ গিয়েছিলেন সমাজ সেবামূলক কোনো কাজে। সেখানে তার সন্তানকে দেখভালের জন্য কাজের মেয়ের খোঁজ করেন। পরিচিতজনদের এ কথা বললে তারা শিশু গৃহকর্মী হেনাকে নিয়ে আসেন। পরে হেনাকে সেন্ট্রাল রোডের দ্বিতীয় তলায় বাসায় নিয়ে আসেন গৃহকর্ত্রী সাথী। কথা ছিল, এতিম শিশুকে যেন তিনি নিজের সন্তানের মত দেখেন। ওসি আরও জানান, হেনার পরিবার একেবারেই গরিব। লাশ বহন ও দাফনের অর্থও নেই তাদের। অনেকেই আর্থিক সহযোগিতা করেছে। সেগুলো লাশ বহন দাফনসহ অন্যান্য খরচের জন্য হেনার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
শিশুটিকে নিয়মিতই নির্যাতন করতেন সাথী, এমনটা জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তবে সাথীকে সবাই এড়িয়ে চলতো বলে জানান সেন্ট্রাল রোডের ওই বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মফিজুর রহমান। তিনি জানান, সাথী পারভীনের ডলির সঙ্গে ফ্ল্যাটের কারোর সম্পর্ক ছিল না। কারণ তার উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা ও মুখের ভাষা এতটাই খারাপ সবাই তাকে এড়িয়ে চলতো। একই রকম তথ্য দিয়েছেন সাথীর সাবেক স্বামী রাহাত। তিনি পুলিশকে জানান, উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরাসহ নানা কারণে সাথী পারভিনকে তিনি তালাক দিয়েছেন। একটি মামলা চলমান থাকায় সাথী তার ওই ফ্ল্যাটটি দখল করে একাই থাকতেন।
###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের
দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ
হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি
রাওয়ার নেতৃত্বে আবদুল হক ও ইরশাদ সাঈদ
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক
কুমিল্লায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩ কিশোর নিহত
গাজীপুরে কারখানা থেকে দগ্ধ আরও এক লাশ উদ্ধার
সিরিয়ার আকাশে নিষিদ্ধ হলো ইরানের বিমান
বিমানে ‘ঘুমিয়ে’ ছিলেন বাইডেন : সেনাদের লাশ পেতে অপেক্ষায় স্বজনরা
ভারতে পণ আইন নিয়ে বিতর্ক, এক ব্যক্তির আত্মহত্যা ঘিরে আলোড়ন
ভারত সীমান্তের শূন্যরেখায় পড়ে ছিল বাংলাদেশির গুলিবিদ্ধ লাশ
এক্সপ্রেসওয়েতে কভার্ডভ্যান ও প্রাইভেটকার সংঘর্ষে নারী নিহত, আহত ৫
ব্রাজিলে বাড়ির ওপর বিমান বিধ্বস্ত, সব যাত্রী নিহত
চুয়াডাঙ্গার রামদিয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে একজনকে হত্যা, আহত ৫
চীনের নতুন বাঁধ প্রকল্পে তিব্বতিদের প্রতিবাদ, দমন-পীড়ন ও গ্রেফতার