বর্তমান এল নিনোর ফলাফল হবে বিধ্বংসী
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম
পৃথিবীর ঘূর্ণন বাতাসের শক্তি দক্ষিণ ও পশ্চিম থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে ছড়িয়ে দেয়। যার ফলে তাপ এবং আর্দ্রতার একটি বিশাল পুনর্বণ্টন ঘটে। জলবায়ু পরিভাষায়, এল নিনো হল বিশ্বের এ আবহাওয়া ব্যবস্থার ‘টেলিকানেকশন’-এর একটি প্রধান উদাহরণ। এল নিনোর চক্রাকার প্রকৃতি গরম ও শুষ্ক এবং অতিরিক্ত আর্দ্র আবহাওয়ার ধরন প্রকাশ করে। বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, আমাজন অববাহিকা, অস্ট্রেলিয়া, ভারতীয় উপমহাদেশ, সাহেল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা শুষ্ক ও রুক্ষ অবস্থার শিকার। মধ্য ও পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকার হর্ন, দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ কোণ এবং দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্র ঝড়ো ও আদ্রতাপ্রবণ।
এল নিনোর পরিণতি বেশিরভাগ সময়ই বিপর্যকর হয়ে ওঠে। এ বছরের শুরুর দিকে প্রকাশিত স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ক্রিস্টোফার ক্যালাহান এবং ডার্টমাউথ কলেজের জাস্টিন মানকিন একটি গবেষণাপত্রে বলেছেন যে, ১৯৮২-৮৩ এবং ১৯৯৭-৯৮ সালের এল নিনো চক্র স্থায়ীভাবে বৈশ্বিক গড় মাথাপিছু আয় যথাক্রমে ৪ হাজার ১শ’ কোটি এবং ৫ হাজার ৭শ’ কোটি মার্কিন ডলার হ্রাস করেছে। প্রথম চক্রটি সেই সময়ের সাথে মিলে যায়, যখন মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়াচ্ছিল। দ্বিতীয়টি এশিয়ার আর্থিক সংকটের সময়ের সাথে মিলে যায়। অন্য কথায়, উভয় সময়কালে কোনো না কোনওভাবে এল নিনোর কারণগুলি উদীয়মান বাজারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে রোধ করেছে।
বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমানের এল নিনোর আগেরগুলির তুলনায় আরও শক্তিশালী। এই ধরনের সর্বশেষ চক্রটি ছিল ২০১৪-১৬ সালে। এবং এটি সবচেয়ে বেশি দুর্বল দেশগুলিতে ধ্বংসাত্মক ছিল। খরার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার খাদ্য উৎপাদন ২০ বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছে এবং ইন্দোনেশিয়ার দাবানলের সবচেয়ে খারাপ এলকাগুলির মধ্যে একটিকে ছারখার করে দিয়েছে। একই সময়ে উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া ৬৫ বছরের মধ্যে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের সবচেয়ে খারাপ প্রাদুর্ভাব সহ দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে নানাবিধ রোগের ইন্ধন যুগিয়েছে। ২০১৫ সালে উত্তর চিলির একটি লিথিয়াম প্ল্যান্টে উৎপাদন, যা বিশ্বের উৎপাদনের ৩০ শতাংশ, ভারী বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হয়েছে। এর ফলে লিথিয়াম বাজারে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল, তার পূর্বাভাস আবহাওয়াবদিরা দিতে পারার কথা নয়।
২০১৪-১৬ সালের ব্যতিক্রমী শক্তিশালী এল নিনো খরা এবং বন্যা নিয়ে এসেছিল, যা বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬কোটি মানুষকে খাদ্যের অভাব সৃষ্টি করেছিল, দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে জিকা ভাইরাসের বিশাল প্রাদুর্ভাব ঘটিয়েছিল এবং অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ২৯ শতাংশ ধ্বংস করে দিয়েছিল। ২০১৮-১৯ সালে তুলনামূলকভাবে হালকা এল নিনো অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ কিছু দাবানলকে উস্ক দিয়েছিল। তবে সমস্ত বিশ্লেষণ একমত যে, ধনীদের তুলনায় দরিদ্র দেশগুলো এল নিনোর দ্বারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইতোমধ্যে, মূল্যস্ফীতি ও পণ্যের দাম বিশে^র সর্বত্রই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। (চলবে)
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের
দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ
হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি
রাওয়ার নেতৃত্বে আবদুল হক ও ইরশাদ সাঈদ
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক
কুমিল্লায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩ কিশোর নিহত
গাজীপুরে কারখানা থেকে দগ্ধ আরও এক লাশ উদ্ধার
সিরিয়ার আকাশে নিষিদ্ধ হলো ইরানের বিমান
বিমানে ‘ঘুমিয়ে’ ছিলেন বাইডেন : সেনাদের লাশ পেতে অপেক্ষায় স্বজনরা
ভারতে পণ আইন নিয়ে বিতর্ক, এক ব্যক্তির আত্মহত্যা ঘিরে আলোড়ন
ভারত সীমান্তের শূন্যরেখায় পড়ে ছিল বাংলাদেশির গুলিবিদ্ধ লাশ
এক্সপ্রেসওয়েতে কভার্ডভ্যান ও প্রাইভেটকার সংঘর্ষে নারী নিহত, আহত ৫
ব্রাজিলে বাড়ির ওপর বিমান বিধ্বস্ত, সব যাত্রী নিহত
চুয়াডাঙ্গার রামদিয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে একজনকে হত্যা, আহত ৫
চীনের নতুন বাঁধ প্রকল্পে তিব্বতিদের প্রতিবাদ, দমন-পীড়ন ও গ্রেফতার
গাজীপুরে চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবকের মৃত্যু
সউদীতে এক সপ্তাহে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার