মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সরকার পতন আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে ড. ইউনূস ইস্যু

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:১৬ এএম

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার শিকার বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার পতনের যে একদফা আন্দোলন চলমান রয়েছে এই আন্দোলণ ভিন্ন খাতে নিতে ড. ইউনূস ইস্যু সামনে আনা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর পান্থপথে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ড. ইউনূসের ব্যাপারটা আমরা এভাবে দেখি, এখানে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার ব্যাপার রয়েছে। আরেকটা ব্যাপার আছে, এই মুহূর্তে এটাকে এত দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসা; ইটস আ ডাইভার্সন অব দ্য মেইন ইস্যু। আমাদের প্রধান যে ইস্যুটা, সরকার পরিবর্তন করতে হবে, পদত্যাগ করতে হবে। সেটা ডাইভার্ট করার জন্য এটাকে সামনে নিয়ে এসেছে সরকার। ইউনূসকে নিয়ে সরকারের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে উনি (ইউনূস) প্রাধান্য পাচ্ছেন। অর্থাৎ তাদের যে লক্ষ্য ছিল যে, এটাকে ডাইভার্ট করবে, কিছুটা হলেও তারা সেটা পেরেছে। সেই কারণে আমি মনে করি, ড. ইউনূসের ইস্যু কোনো বিচ্ছিন্ন ব্যাপার নয়। অধিকারের কর্মী আদিলুর রহমান, আগামীতে তার রায়ও হবে। আমি জানি না রায় কী আসবে, এটা বুঝতে পারি- তারা যেন সত্য কথা বলতে না পারে, তারা যেন মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলতে না পারে, সেই জন্য তাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্তের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে কথা বলার জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। এ রকম একটা রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্রে সত্য কথা বলার কোনো উপায় নেই, যে রাষ্ট্রে মানুষের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, যে রাষ্ট্রে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই, সেই রাষ্ট্র অবশ্যই ভেঙে পড়ছে।

তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে আমরা যদি এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে দেশকে রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে যাবে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থকার কারণে ঢাকার জনপ্রতিনিধিদের দোষারুপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মূল কথা হচ্ছে সরকার এবং সিটি করপোরেশন দুটি ব্যর্থ হয়েছে ডেঙ্গু মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে। এরা প্রকৃতপক্ষে স্বাস্থ্য সেবা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। স্বাস্থ্য খাতে চরম অরাজকতা আমরা কোভিডের সময় দেখেছি, দেখেছি কী পরিমাণ দুর্নীতি এখানে হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে ডেঙ্গু সংক্রামক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুরা অকাতরে মারা যাচ্ছে, কারও কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। কলকাতায় এত ঘনবসতি হওয়ার পরও তারা নিয়ন্ত্রণ করেছে। অথচ আমাদের এখানে ব্যর্থ। দুই মেয়রের সেদিকে নজর নেই, তারা শুধু নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে পড়ে আছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনস্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার, করোনার সময় একইভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদত্যাগ করা উচিত।

মশার ওষুধ কেনায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আবার সিটি করপোরেশনে এটা প্রমাণিত হলো, এডিস মশা ধ্বংসের নামে যে ওষুধ কেনা হলো সেখানেও ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, সেই ওষুধগুলো মধ্যে কোনো গুণই নেই! সেটা মশা নিধনে সাহায্য করছে না।

তিনি বলেন, এখানে অনির্বাচিত যে স্থানীয় সরকার; কমিশনার বা মেয়র, জনগণের কাছে তাদের যেহেতু দায়বদ্ধতা নেই, সেই কারণে তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন এই সমস্যা সমাধান করতে। কারণ তাদের তো এদিকে নজর নেই, তাদের নজর হচ্ছে দুর্নীতি; টাকার পাহাড় তারা গড়ে তুলছেন।

বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য দুর্নীতি। অর্থনীতি চরমভাবে ধ্বংসের দিকে চলে গেছে। শুধু মেগা প্রজেক্ট দেখাচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সমস্যার সৃষ্টি করছে, যানজটের সৃষ্টি করছে। কোনো পরিকল্পনা নেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপির মনোনয়নে মেয়র পদে নির্বাচন করা ইশরাক হোসেন এবং উত্তরের তাবিথ আউয়াল।##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

১৫ দিনের মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য ডিজিটাল কার্ড ইস্যু হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
চাকরিচ্যুত সাবেক সেনাদের সড়ক অবরোধ, ২ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক
৫ আগস্টের পর বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক দখল করেছে একটি ইসলামী দল
৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণাপত্র লিখিত দলিল হিসেবে থাকবে : সারজিস
ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন, ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা না : রিজভী
আরও

আরও পড়ুন

অবশেষে টাঙ্গাইলের সেই আলোচিত ব্রীজটির উদ্বোধন হলো আজ

অবশেষে টাঙ্গাইলের সেই আলোচিত ব্রীজটির উদ্বোধন হলো আজ

অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট জুটিতে বিপদে ভারত

অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট জুটিতে বিপদে ভারত

দেশীয় অস্ত্রসহ খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী আটক

দেশীয় অস্ত্রসহ খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী আটক

'দি ওডিসি' সিনেমায় বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন নোলান

'দি ওডিসি' সিনেমায় বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন নোলান

রোমানিয়ার নির্বাচনে অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ক্ষোভ

রোমানিয়ার নির্বাচনে অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ক্ষোভ

বাউফলে হামলা-পাল্টা হামলা, বিএনপির এক পক্ষের মানববন্ধন ও আরেক পক্ষের সংবাদ সম্মেলন

বাউফলে হামলা-পাল্টা হামলা, বিএনপির এক পক্ষের মানববন্ধন ও আরেক পক্ষের সংবাদ সম্মেলন

১৫ দিনের মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য ডিজিটাল কার্ড ইস্যু হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৫ দিনের মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য ডিজিটাল কার্ড ইস্যু হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ২১ সাংবাদিক

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ২১ সাংবাদিক

চাকরিচ্যুত সাবেক সেনাদের সড়ক অবরোধ, ২ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক

চাকরিচ্যুত সাবেক সেনাদের সড়ক অবরোধ, ২ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক

আশুলিয়ায় ভবন মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ

আশুলিয়ায় ভবন মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ

হাটহাজারী সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদ সভা

হাটহাজারী সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদ সভা

৫ আগস্টের পর বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক দখল করেছে একটি ইসলামী দল

৫ আগস্টের পর বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক দখল করেছে একটি ইসলামী দল

মেহেরপুরে তসলিমা হত্যা মামলায় ২ জন আটক

মেহেরপুরে তসলিমা হত্যা মামলায় ২ জন আটক

ঈশ্বরদীতে ৫ বছরের শিশু কন্যাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সৎ বাবা গ্রেফতার

ঈশ্বরদীতে ৫ বছরের শিশু কন্যাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সৎ বাবা গ্রেফতার

নাসার নতুন সাঁতারু রোবট , ইউরোপায় প্রাণের খোঁজে এক বিস্ময়কর  যাত্রা

নাসার নতুন সাঁতারু রোবট , ইউরোপায় প্রাণের খোঁজে এক বিস্ময়কর যাত্রা

৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণাপত্র লিখিত দলিল হিসেবে থাকবে : সারজিস

৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণাপত্র লিখিত দলিল হিসেবে থাকবে : সারজিস

ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন, ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা না : রিজভী

ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন, ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা না : রিজভী

উখিয়ায় চুরির দায়ে পিটিয়ে এক যুবককে হত্যা, পরিবারের অভিযোগ পরিকল্পিত খুন

উখিয়ায় চুরির দায়ে পিটিয়ে এক যুবককে হত্যা, পরিবারের অভিযোগ পরিকল্পিত খুন

৩১ ডিসেম্বর মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে : হাসনাত আবদুল্লাহ

৩১ ডিসেম্বর মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে : হাসনাত আবদুল্লাহ

বিধ্বস্তের আগে যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন বিমান যাত্রী

বিধ্বস্তের আগে যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন বিমান যাত্রী