সমন্বয়কেও রক্ষা নেই ৫ ব্যাংকের
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
দীর্ঘদিন থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতি, অরাজকতা ও সুশাসনের অভাব ব্যাংকিংখাতের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। পরিচালকদের চাপে ঋণ প্রদান করা হয়েছে, এখন ফেরত পাচ্ছে না। খেলাপি ঋণ বর্তমানে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। প্রতিদিনই বাড়ছে মন্দ এই ঋণের পড়িমান। বেনামের অনেক ঋণের অর্থ চলে গেছে দেশের বাহিরে। নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও গ্রুপের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়া ঋণ আদায় হচ্ছে না। এতে করে তারল্য, প্রভিশন এবং মূলধন সঙ্কটসহ নানা সমস্যায় আছে ব্যাংকগুলো। কিন্তু এরপরও থেমে নেই অনিয়ম। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকের আমানত সুরক্ষা ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি রোধে চলছে ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণ’। কার্যক্রম তদারকিতে সরকারি-বেসরকারি এক-চতুর্থাংশ ব্যাংকে পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক বসিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অবশ্য তাতেও রক্ষা হচ্ছে না। দিনের পর দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে ব্যাংকগুলো। কার্যকর পদক্ষেপ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তি না দেয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে বলছেন খাত সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদরা।
সূত্র মতে, বড় ধরনের অনিয়মের আশঙ্কায় দেশে ১৯৯৪ সালে প্রথম ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে (বর্তমানে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক) পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর নানা অনিয়মে সমস্যা বা সঙ্কটে পড়া আরও ১৩ ব্যাংক ও একটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পর্যবেক্ষক, সমন্বয়ক ও প্রশাসক নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে ৯ ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এগুলো হলো- রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। এছাড়া বেনামি ঋণ ও নিয়োগ পদোন্নতিতে অনিয়ম, তারল্য সঙ্কটে পড়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে সবশেষ পর্যবেক্ষক বসায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর পাঁচ ব্যাংকে দেয়া আছে সমন্বয়ক। এগুলো হলো-বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক), এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।
কেন পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক
বিধিবদ্ধ নগদ জমা সংরক্ষণে (সিআরআর) ব্যর্থতা, তারল্য সঙ্কট, একক গ্রাহকের ঋণসীমার নির্দেশনা অমান্য করে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেয়াসহ অতি মাত্রায় খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া, নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি ও মূলধন সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরানো ও আর্থিক অবস্থা দেখভালে পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক বসানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব পালন করেন। দেশে ব্যাংক রয়েছে ৬১টি। ফলে দেশের এক-চতুর্থাংশ ব্যাংক এখন পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক দিয়ে চলছে।
পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়কের কাজ
পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক নিয়োগ বা কর্মপদ্ধতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো প্রজ্ঞাপন নেই। এছাড়া তাদের ক্ষমতা কী এ বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। একজন পর্যবেক্ষক ব্যাংকের বোর্ড সভায় উপস্থিত থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাদের কার্যক্রম ও বিভিন্ন তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানান। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি মনে করেন ওই তথ্য ও পরামর্শের আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সমন্বয়ক বোর্ড সভায় সশরীরে উপস্থিত থাকেন না। তারা সাধ্য অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকে অনেক সময় খেলাপি ঋণ অনেক বেশি হয়ে যায়। এগুলো ব্যাংক রিকভারি করতে পারে না। অনেকক্ষেত্রে মামলা হয়ে থাকে। এসব পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো এমইউ অনুযায়ী কাজ করছে কি না, সেসব দেখভাল করতেই পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। যেন ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়মনীতি মেনে দেয়া হয়। কিন্তু অনেক সময় এই ঋণগুলো বিতরণ করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম ওভারলোড করে ফেলে। এক্ষেত্রে যারা পর্যবেক্ষক থাকে তারা ব্যাংকের অবস্থা সম্পর্কে জানে। তখন তারা ব্যাংকের ঋণ দেয়ার বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করে। পর্যবেক্ষকরা বিভিন্নভাবে চিন্তাভাবনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে বোর্ডের কাছে ঋণ না দেয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করে।
কি বলছেন পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়করা
নিয়োগ পাওয়া একাধিক পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়করা জানিয়েছেন, ব্যাংকের ঋণ অনুমোদন, খেলাপি, পুনঃতফশিল, পুনগঠন, ঋণ অবলোপন, নিয়োগ, আয়-ব্যয় ও শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে তাদের নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা ছাড়া কোনো কাজ নেই। এছাড়া কোনো ধরণের অনিয়মের বিষয়েও তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না বা দেয়ার ক্ষমতাও নেই। তাদের সুপারিশে দুই-একটি পদক্ষেপ নিলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তেমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অনেক অনিয়ম দেখেও চেপে যাচ্ছে। প্রভাবশালীদের চাপে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যার কারণে ব্যাংকগুলো তেমন কোনো উন্নতি হচ্ছে না। উল্টো আর্থিক অবস্থা অবনতি হচ্ছে।
এদিকে গত বছরের ১২ জুলাই আবদুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়েই দুর্বল ব্যাংককে পৃথকভাবে তদারকির উদ্যোগ নেন। গভর্নর জানান, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ১০টি দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করেন। খেলাপি ঋণের মাত্রা, তারল্য ব্যবস্থাপনা, মূলধনের পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও প্রভিশনিং বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির পরিমাণ বিবেচনায় নিয়ে এ ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করা হয়। ব্যাংকগুলোর নাম এখন পর্যন্ত প্রাকাশ না করলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্বল ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে- রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংক। এছাড়া বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল), পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক), আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।
এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্বল সঙ্কটে থাকা ব্যাংকগুলোতে পর্যবেক্ষকরা সমন্বয়ক বসালেই হবে না এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা একটা ভূমিকা থাকতে হবে। পর্যবেক্ষক বসালেন অথচ তাদের কোন ক্ষমতা নেই তারা কোন সুপারিশ করলে সেটা বাস্তবায়ন হবে না। তাহলে তাদের বসিয়ে লাভ কী? যদি স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ না পায় তাহলে ব্যাংকগুলোর কোনো উন্নতি হবে না।
তিনি জানান, দুর্বল ও সঙ্কটে থাকা ব্যাংকগুলোর উন্নয়নে ভালো ও দক্ষ লোক বসাতে হবে। শুধু বোর্ড মিটিংয়ে বসে থাকবে এমন নয়, তারা যেন গঠনমূলক সুপারিশ করতে পারেন। এছাড়া বোর্ড মিটিং নয় মাঝে মধ্যে গিয়ে ব্যাংকের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। একই সঙ্গে তারা যেসব সুপারিশ বা মরামর্শ দেবেন সেগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। আর যদি পদক্ষেপ নিতে না পারে তাহলে শুধু চা নাস্তা খাওয়ার জন্য পর্যবেক্ষক বসানোর কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না বলে উল্লেখ করেন সাবেক এ গভর্নর।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঁচ ব্যাংকে দেয়া আছে সমন্বয়ক। সমন্বয়ক বসানো ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা তুলে ধরা হলোÑ
ন্যাশনাল ব্যাংক
নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক। বিভিন্ন অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় ব্যাংকটি নানা সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। বোর্ড পরিচালকরা স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। যা আদায় করতে পারছে না। রাতের আধারে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকের টাকা। লাগামহীন খেলাপি ঋণ বাড়ছে, মূলধন সঙ্কটের পাশাপাশি প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি। এতে করে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটেছে। এমন অববস্থা থেকে উত্তরণে ন্যাশনাল ব্যাংকে - কোঅর্ডিনেটর বা সমন্বয়ক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে কী পরিস্থিতি হয়েছে ?
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) সুদ খাতে ন্যাশনাল ব্যাংকের লোকসান দাঁড়িয়েছে ৫০৬ কোটি টাকা। সুদ খাতে বড় লোকসানের কারণে ব্যাংকটির সব সূচকেই প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিকে ন্যাশনাল ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ ৭ হাজার ৭৭৩ কোটি; যা বিতরণ করা ঋণের ১৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৭ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। এ বছর মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংটির মূলধন ঘাটতি এক হাজার ৫৯ কোটি টাকা।
ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাতের হার ৯৯ দশমিক ১২ শতাংশ। যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি ঋণ প্রদান। এতে করে ঝুঁকিতে পড়েছে ব্যাংকটির আমানতকারীরা।
পদ্মা ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করেছে তাদের মধ্যে অন্যতম পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক)। চতুর্থ প্রজম্মের ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। তারল্য সঙ্কট, নিয়ন্ত্রণহীন খেলাপি ঋণসহ মূলধন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ৫৯ শতাংশ। ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) ৮৮ দশমিক ২০ শতাংশ। কিন্তু আইন অনুয়ায়ী, ব্যাংকের মোট আমানতের শতকরা ৮৭ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে পারে না। এ ছাড়া চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংটির মূলধন ঘাটতি ৩৯৩ কোটি টাকা।
এবি ব্যাংক
সমন্বয়ক নিয়োগ দেয়া এবি ব্যাংকের অবস্থাও খুব ভালো নয়। বেনামি ঋণ বিতরণ, পরিচালকদের স্বেচ্ছাচারিতায় নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে ঋণ দিয়ে আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে গেছে। মার্চ প্রান্তিক শেষে এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যা ৪ হাজার ৭০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি নির্ধারিত সীমার চেয়ে ৫ শতাংশের উপরে ঋণ বিতরণ করেছে। তাদের ঋণ-আমানতের অনুপাতের হার ৯২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
ওয়ান ব্যাংক
আর্থিক সূচকে গড়মিল, মূলধন, ঋণ আমানত হার ও নিরাপত্তা সঞ্চিতির সূচকে অবনতিতে রয়েছে বেসরকারি খাতের ওয়ান ব্যাংক। ধস ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর সমন্বয়ক প্রদাণ করেছে। তবে এখনো সঙ্কট কাটেনি। ওয়ান ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ ২ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ উচ্চ খেলাপির ঝুঁকিতে রয়েছে ব্যাংকটি খাত। কারণ আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক
দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক অবস্থা খারাপের দিকে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। বড় অঙ্কের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ায় ব্যাংকটির লোকসান গুণতে হচ্ছে। মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ৪৩ দশমিক ১০ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ৯৮০ কোটি টাকা। ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৩৬০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। মার্চ প্রাস্তিকে মূলধন ঘাটতি দাড়ায় ১ হাজার ৩১ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, যেসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে, বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছে, বড় কোনো অনিয়মের অভিয়োগ উঠে সেসব ব্যাংককে তদারকির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক বসায়। এখন ১৪টি ব্যাংকে পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক আছেন। তারা নিয়মিত ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা দেখছেন। বোর্ডের সিদ্ধান্তসহ বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে পরামর্শ প্রতিবেদন দিচ্ছেন। সেই আলোকে ব্যাংকগুলোর সমস্যা সমাধান ও আর্থিক অবস্থা উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদক্ষেপ নিচ্ছে। পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক বসানোর পরও ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা উন্নতি করতে পারছে না এমন অভিযোগ রয়েছে। তাহলে কী তারা সঠিক ভাবে কাজ করতে পারছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক সরাসরি ব্যাংকগুলোর উপর সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারে না। একজন পর্যবেক্ষক ব্যাংকের বোর্ড সভায় থাকেন, তারা কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা পর্যালোচনা করেন, তাদের আর্থিক অবস্থার সঙ্গে সিদ্ধান্তগুলো ঠিক আছে কী না, সমোপযোগী কী না, অভ্যন্তরীণ নীতিমালা ও ঋণ নিয়মাচারের কোনো সমস্যা আছে কী না এসব বিষয় দেখেন। কোনো অসঙ্গতি দেখলে এবং তাদের আর্থিক অবস্থা উন্নতির জন্য কি করা প্রয়োজন সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নিয়মিত পরামর্শ দেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরামর্শগুলো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা উন্নতি বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা এক দিনে খারাপ হয় না। বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ধীরে ধীরে খারাপ হয়। এমন পরিস্থিতি থেকে উন্নতি হতেও সময় লাগে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো করতে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করে যাচ্ছে। আশা করছি অবস্থার উন্নতি হবে। কারণ প্রতিষ্ঠান খারাপ হোক এটা কেউ চাইবে না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কলাপাড়ায় গরু চুরি করে পালানোর সময় জনতার হাতে আটক চোর
এবার পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
মাগুরায় গ্রামবাসির সংঘর্ষে নিহত যুবদল নেতা শরিফুলের বাড়িতে বিএনপি নেতারা
সিমকার্ডের আড়ালে সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান
কিশোরগঞ্জের আব্দুল কাহার আকন্দ কোথায়? কেউ জানে না!
হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি
যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা
আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প
হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি
রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'
‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’
যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত
ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার
ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস
ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি
কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫