বিশ্বের চোখ বিচারাঙ্গনে

Daily Inqilab সাঈদ আহমেদ

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৬ এএম | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৬ এএম

সব চোখ নিবদ্ধ বিচারাঙ্গনে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এখন বিশ্বসংস্থাগুলোর আলোচনার বিষয়। কি ঘটছে দেশের বিচার অঙ্গনে? মার্কিন ভিসানীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বিচার বিভাগকে। এর পরই ঘটছে ঘটনাগুলো। একটি ঘটনা যেন পূর্ববর্তী ঘটনারই ধারাবাহিকতা। সবগুলোকে এক সুঁতোয় গাঁথলে প্রমাণিত হয় নিরবচ্ছিন্নতা। আদালত অবমাননার খড়গ থাকায় সমালোচকরা হয়তো এতোদিন এ বিষয়ে ঝেড়ে কাশেননি। কিন্তু খোদ বিচার বিভাগই যখন বেআব্রু হয়েছে-তখন আর আদালত অবমাননার দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে কে?

বিচারপতিগণ শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। গত ১৫ আগস্ট এমন ঘোষণা দেন খোদ আপিল বিভাগের এক বিচারপতি। একজন বিচারপতি এ কথা বলতে পারেন না! তাই প্রতিবাদে তার স্বরে প্রতিবাদী হলেন আইনজীবীগণ। কিন্তু তারা যেহেতু সরকারবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তাই বিষয়টিকে রাজনৈতিক চোখ দিয়েই দেখা হলো। পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামলেন আওয়ামী লীগ তথা সরকার সমর্থক আইনজীবীগণ। যার অর্থ দাঁড়ায় বিচারপতি যা বলেছেন সেটি যথার্থ। অর্থাৎ বিচারপতিগণ আসলেই শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। বিচারাঙ্গনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তখনই এ কথা উচ্চারিত হলো, যখন বাংলাদেশের বিচার বিভাগ রাজনীতিকায়নের অভিযোগে অভিযুক্ত। দেশের অভ্যন্তরে সোচ্চার, সরকারবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই এ অভিযোগ তোলা হয়নি। রাষ্ট্রের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ স্তম্ভটির গত দেড় দশকে সরকারের চাহিদানুগ ব্যবহৃত হওয়া, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়, ভোটবিহীন দু’টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্রিয় সহযোগিতা, দেশকে গণতন্ত্র শূন্যতার দিকে ধাবিত করা, খুন, গুম, অপহরণ, বিরোধী রাজনীতিকদের মৃত্যুদ- প্রদান, হাজার হাজার মিথ্যা মামলায় লাখ লাখ আসামি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, গায়েবি মামলা, গণগ্রেফতারের শিকার মানুষকে মাসের পর মাস জামিন না দেয়ার ঘটনাবহুল প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে। এর ভিত্তিতে উন্নয়ন অংশীদার, দাতা দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম র‌্যাবের ওপর স্যাংশন দিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশের জন্য ঘোষণা করেছে মার্কিন ভিসানীতি। সেই ভিসানীতিতে বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে। এ নীতি অনুযায়ী, আগামী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো রকম অনিয়ম, হস্তক্ষেপ ও বাধা দান করা হলে এর সঙ্গে জড়িত যেকোনো ব্যক্তি ও তার পরিবারকে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এটি অনুসারে ভুয়া ভোট প্রদান, ভোটার ও নির্বাচনী এজেন্টদের বাধা দান, নির্বাচনী সমাবেশে হামলা, গায়েবি মামলা প্রদান, নির্যাতন-নিপীড়ন, মতপ্রকাশে বাধা দান ইত্যাদি কাজ নির্বাচনে অনিয়ম ও হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এসব কাজে জড়িত থাকলে সরকারের সবপর্যায়ের ব্যক্তিরা (যেমন: মন্ত্রী, আমলা, বিচারক, পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনী) এই ভিসানীতির শিকার হবেন। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি মূলত অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে দেশটির নিবিড় নজরদারিরই অংশ। মার্কিন স্যাংশনে র‌্যাবের কার্যক্রমে সংশোধনী আসে। কিন্তু ভিসানীতি ঘোষণার ফলাফল বিচার বিভাগে দেখা যাচ্ছে উল্টো। বিরোধী রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক রায় ঘোষিত হচ্ছে। পুরোনো মামলা সক্রিয় করে পোরা হচ্ছে কারাগারে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি, নোবেল বিজয়ীকে মামলার পর মামলা দিয়ে হয়রানি করতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী মতাদর্শের প্রতিবাদী কন্ঠ সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও পেশাজীবীদের দমন-পীড়ন বেড়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততোই বাড়ছে বিচার বিভাগের তৎপরতা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেয়া মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আদালত বসছে রাতেও। সরকারি আকাক্সক্ষার সঙ্গে বিচার বিভাগ, বিচারপতি, বিচারক ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যুগপৎ সক্রিয়তা উন্নয়ন অংশীদার, সহযোগীদের দৃষ্টি কেড়েছে। তাই তারা চলমান প্রতিটি ঘটনার প্রেক্ষিতে কথা বলছে। প্রতিবাদ জানাচ্ছে। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছে।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ, নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভিন্ন শ্রেণির মামলা রয়েছে ১৬৮টি। এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এসব মামলার ‘বিচার’ পরিচালনায় ব্যবহৃত হচ্ছে আদালত। একের পর এক মামলা দিয়ে বিচারের নামে হয়রানির প্রতিক্রিয়ায় নড়ে ওঠে গোটা বিশ্ব। তার বিচার স্থগিত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দেন নোবেল বিজয়ীসহ ১৭৫ বিশ্ব নেতা। গত ৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানি করা হচ্ছে। হাই কমিশনার স্পষ্ট করেই বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন যে, তার বিরুদ্ধে মানহানিকর প্রচারণা অনেক সময়ই সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসছে। এতে তার আন্তর্জাতিক মানদ-ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণœ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। জাতিসংঘের এই অবস্থানকে সরকার অনেকটা ‘রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ’ হিসেবেই জ্ঞান করে। পাল্টা বিবৃতিযুদ্ধে নামিয়ে দেয় দলীয় সমর্থক পেশাজীবীদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ ৮৬৬ আওয়ামীপন্থি শিক্ষক পাল্টা বিবৃতি দেয়।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ নিয়ে বিশ্ব নেতাদের খোলা চিঠির প্রতিবাদে বিবৃতি দেন আওয়ামী লীগপন্থি ৫১০ আইনজীবী। বিবৃতিতে তারা ড.ইউনূস ইস্যুতে ‘বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনেন। এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকে কেন্দ্র করে সরকারপক্ষীয় আইনজীবীদের সংস্থা অ্যাটর্নি জেনারেল দফতর ঘটায় আরেক কা-। দীর্ঘদিন সরকারের পক্ষে আইনি লড়াই পরিচালনাকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহমেদ ভুইয়া ইউনূসবিরোধী বিবৃতিতে স্বাক্ষরে অস্বীকৃতি জানান। তার মতামতকে ‘অপরাধ’ গন্য করে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে আইন মন্ত্রণালয়। ঘটনা পরম্পরায় এমরান আহমেদ ভুইয়া চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন। সপরিবার আশ্রয় নেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে। আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা অভিযোগ করেন মার্কিন দূতাবাস এমরানকে ডেকে নিয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কেন্দ্র করে যখন একের পর এক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ঢেউ আঘাত হানছে ঠিক তখনই ঘোষিত হয় মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান শুভ্র এবং সংস্থার পরিচালক এস এম নাসির উদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে ২ বছর কারাদ-ের রায়। এতে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার ঢেউ আরও উত্তুঙ্গ হয়। রায় ঘোষণার আগেই আদিলুরের কারাদ-ের বিষয়ে প্রবল আপত্তি তোলে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। ১৪ সেপ্টেম্বর কারাদ- দিয়ে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয় শুভ্র-এলানকে। ওইদিনই আদিলের মুক্তি দাবি জানায় ৭২টি আন্তর্জাতিক সংগঠন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা রবার্ট এফ কেনেডির ওয়েবসাইটে এই যুক্ত বিবৃতি প্রকাশিত হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নথিভুক্ত করার জন্য প্রতিশোধ হিসেবে খান এবং এলানকে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দুই বছরের কারাদ- এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ৭২টি সংস্থা মনে করে আদিল-এলানের ওপর প্রতিশোধমূলক কাজ বন্ধ করা উচিত।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বাংলাদেশে বাংলাদেশে বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ২০২৪ সালে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় প্রস্তাবে। উদ্বেগ জানিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে কিনা সেটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়।

বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বলপূর্বক নিখোঁজ বা গুম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করাসহ বাংলাদেশে নানাভাবে মানবাধিকার পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মধ্য ডানপন্থি, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট, বামপন্থিসহ সাতটি গ্রুপ এ প্রস্তাবে অংশ নেয়।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব গৃহিত হওয়ায় ওইদিনই পাল্টা বিবৃতি দেন বিচারকগণ। বিচারকদের জাতীয় সংগঠন

‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এইচ এম হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া এবং মহাসচিব মো: মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা এই প্রস্তাবে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ, এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা, যা অপ্রত্যাশিত ও অন্যায্য। বিচারগণ দাবি করেন, বাহ্যিক কোনো উৎস থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো প্রভাব ছাড়াই এ রায় দেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এটি উল্লেখ করা জরুরি যে, বিদ্যমান আইনগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করে এবং বাস্তব প্রমাণের ভিত্তিতে এই মামলা নিরপেক্ষভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে পরিচালনা করেছেন আদালত।

এর পরপরই বিচারকদের এই বিবৃতিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ হিসেবে ঘোষণার ধারাবাহিকতা বলে মন্তব্য করেছেন সরকারবিরোধী আন্দোলনরত ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম’। গতকাল মঙ্গলবার এই বিবৃতিকে ‘নজিরবিহীন’ আখ্যা দিয়ে সংগঠনের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এটি চাকরিরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নজিরবিহীন ঘটনা। এ বিবৃতি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, বর্তমান শাসনব্যবস্থায় বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণরূপে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও নাসির উদ্দিন এলানের বিচার-সাজা স্পষ্টতই নির্দেশিত। বিবৃতিতে বলা হয়, জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য হলো ‘বিচারব্যবস্থার ওপর অপবাদ’। তারা তাদের স্বাধীনতা হারিয়েছে। তাদের কাছ থেকে সঠিক বিচারের কোনো আশা করা যায় না। সম্প্রতি আমরা সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতিকে নিজেদের ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ হিসেবে ঘোষণা করতে দেখেছি। ১৭ সেপ্টেম্বরের বিচারকদের দেয়া বিবৃতি সেই ঘোষণারই ধারাবাহিকতা। বিবৃতিতে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের এ ধরনের বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয়।

এদিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাবের বিষয়ে বিচারকদের বিবৃতিতে ধিক্কার জানিয়েছে ইউনাইটেড ‘ল’ ইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ)। সংগঠনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, অধঃস্তন আদালতে চাকরিরত জুডিশিয়াল অফিসাররা অ্যাসোসিয়েশনের নামে যে বিবৃতি দিয়েছেন সেটির নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। আদিলুর রহমান খান ও এলানের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল যে ফরমায়েশি রায় ও সাজা দিয়েছে সেটি মূলত নাগরিকের কণ্ঠরুদ্ধ করার জন্য আইনের অপব্যবহার করে বিচারিক নির্যাতন। সংগঠনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

উল্লেখ্য,সরকারবিরোধী আন্দোলনে পেশাজীবীদের মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে সোচ্চার সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম’ ও ‘ইউনাইটেড ‘ল’ ইয়ার্স ফ্রন্ট’। আইনজীবী ফোরাম গত এক বছরে ঢাকার বার নির্বাচন এবং সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনকে ইস্যু ধরে একের পর এক কর্মসূচি পালন করছে। বিএনপি একদফার আন্দোলন ঘোষণার পর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট বার, ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ সারাদেশের বারগুলোতে আন্দোলনের ঢেউ সৃষ্টি করে। গত কয়েক মাস ধরে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল-মতের আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত ইউনাইটেড ‘ল’ ইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ)। সংগঠন দু’টির যৌথ আন্দোলনে সারা দেশে কাঁপন তুলেছে। হামলা, মামলা, পুলিশি নির্যাতনের মধ্যেই সংগঠন দু’টির দুর্দমনীয় নেতৃত্ব দেশের বিচার বিভাগকে আলোচনায় রেখেছে। দেশের ভেতর ও আন্তর্জাতিক মহলের চোখ নিবদ্ধের কারণ সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে জন্ম দিয়েছে প্রত্যাশারও। বিচারাঙ্গনের মানুষের তাই ধারণা, ইস্যু সৃষ্টি এবং তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনাটি হতে পারে বিচারাঙ্গণ থেকেই। দেশ-বিদেশের উভয়ের দৃষ্টি এখন বিচারাঙ্গনের দিকে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দেশের মানুষ কারো কাছে ভিক্ষা করে চলবে না : প্রধানমন্ত্রী

দেশের মানুষ কারো কাছে ভিক্ষা করে চলবে না : প্রধানমন্ত্রী

আরেকটি রক্তক্ষয়ী রাত দেখলো গাজাবাসী, এক সপ্তাহে বাস্তুচ্যুত ৯ লাখ মানুষ

আরেকটি রক্তক্ষয়ী রাত দেখলো গাজাবাসী, এক সপ্তাহে বাস্তুচ্যুত ৯ লাখ মানুষ

জম্মু ও কাশ্মীরে পৃথক হামলায় পর্যটক দম্পতি গুলিবিদ্ধ, নিহত ১

জম্মু ও কাশ্মীরে পৃথক হামলায় পর্যটক দম্পতি গুলিবিদ্ধ, নিহত ১

‘জংলি’ লুকে চমকে দিয়েছেন সিয়াম

‘জংলি’ লুকে চমকে দিয়েছেন সিয়াম

মোদির ভারতে মুসলিমরা নিজভূমে পরবাসী

মোদির ভারতে মুসলিমরা নিজভূমে পরবাসী

আবদুল গাফফার চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আবদুল গাফফার চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জাতীয় এসএমই পুরস্কার পেলেন ৭ উদ্যোক্তা

জাতীয় এসএমই পুরস্কার পেলেন ৭ উদ্যোক্তা

ফের ফারিণের সঙ্গে গান করতে চান তাহসান!

ফের ফারিণের সঙ্গে গান করতে চান তাহসান!

অবশেষে জানা গেল ঐশ্বরিয়ার হাত ভাঙার কারণ

অবশেষে জানা গেল ঐশ্বরিয়ার হাত ভাঙার কারণ

যে কারণে এবারও ভোটে লড়লেন না প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

যে কারণে এবারও ভোটে লড়লেন না প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

কানের রেড কার্পেটে মুগ্ধতা ছড়ালেন কিয়ারা

কানের রেড কার্পেটে মুগ্ধতা ছড়ালেন কিয়ারা

চাঁদের মাটিতে ছুটবে রেলগাড়ি! রেলস্টেশন তৈরির কথা ভাবছে নাসা

চাঁদের মাটিতে ছুটবে রেলগাড়ি! রেলস্টেশন তৈরির কথা ভাবছে নাসা

সালথার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াদুদ মাতুব্বরের প্রার্থিতা বহাল

সালথার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াদুদ মাতুব্বরের প্রার্থিতা বহাল

দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘুমের প্রতিযোগিতা

দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘুমের প্রতিযোগিতা

কী ভাবে প্রেমে বিশ্বাস রেখেছিলেন ক্যাটরিনা

কী ভাবে প্রেমে বিশ্বাস রেখেছিলেন ক্যাটরিনা

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ

ইসরায়েলকে ফিলিস্তিন থেকে বের করে দাও, স্লোগানে উত্তাল মার্কিন ক্যাপিটল

ইসরায়েলকে ফিলিস্তিন থেকে বের করে দাও, স্লোগানে উত্তাল মার্কিন ক্যাপিটল

সউদীতে সাঁতারের পোশাকে ‘ঐতিহাসিক’ ফ্যাশন শো!

সউদীতে সাঁতারের পোশাকে ‘ঐতিহাসিক’ ফ্যাশন শো!

তেঁতুলিয়ায় ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড

তেঁতুলিয়ায় ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে এবার নতুন নির্দেশনা বিআরটিএর

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে এবার নতুন নির্দেশনা বিআরটিএর