মোহাম্মদপুরে দলবদ্ধ হয়ে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ছিনতাই
০২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দলবদ্ধ ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ছিনতাইকারীরা অনেকের ওপর হামলাও করেছে। গত শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরের বছিলা গার্ডেন সিটি হাউজিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজও রয়েছে। এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে পুরো মোহাম্মদপুর এলাকায়। অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত প্রায় সোয়া ৮টা পর্যন্ত এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যার দিকে ১৬-২০ বছর বয়সী তরুণদের প্রায় ৩০ জনের একটি গ্রুপ ধারালো অস্ত্র দিয়ে বছিলা গার্ডেন সিটি হাউজিং এলাকায় মহড়া দেয়। এ সময় তারা কয়েকজন পথচারীকে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে মোবাইল ফোনসহ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আশপাশের ১২-১৪টি দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে মালপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ছুটির দিন ঘুরতে বের হওয়া লোকজন এই ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন বেশি।
গতকাল রোববার মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, একদল লোক দোকান ভেঙে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে জেনেছি। এ বিষয়ে আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করছি। এছাড়া, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় বসিলা এলাকায় দিনে ও সন্ধ্যায় চুরি-ছিনতাই ঘটে। কিন্তু পুলিশি টহল লক্ষ্য করা যায় না। শুক্রবারের ছিনতাইয়ের ঘটনার সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করেও তাৎক্ষণিকভাবে ভুক্তভোগীরা পুলিশের সহায়তা পাননি। ৯৯৯-এ ফোন করার প্রায় চার ঘণ্টা পর পুলিশের একটি টহল গাড়ি এলেও ঘটনার বিষয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বসিলা গার্ডেন হাউজিং এলাকায় ছিনতাই নতুন কোনো ঘটনা নয়। তবে শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনাটি অভূতপূর্ব। তারা হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন। ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল অস্ত্রহাতে বসিলা বাজারের সামনে থেকে ছিনতাই শুরু করে। মহড়া ও ছিনতাই শেষ হয় অন্তত দুই কিলোমিটার দূরে চন্দ্রিমা হাউজিং এলাকায়। এর মধ্যে পথচারী, নদীর পাশের ওয়াকওয়েতে হাঁটতে আসা দর্শনার্থীদের মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নীরব বলেন, কাজ শেষে চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। এ সময় এক ছেলে এসে ঘাড়ে চাপাতি ধরে মোবাইল ফোন চায়। দিতে না চাওয়ায় আমাকে মারধর করে। মাথায় আঘাত করে, পায়েও কোপ দেয়। পরে মোবাইল নিয়ে গেছে। এ সময় আমার বন্ধুকেও মারধর করে। এমনকি কোমরের বেল্ট দিয়ে পেটায়।
নির্মাণশ্রমিক জাহিদুল ইসলামসহ আরও দুজন ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। ছিনতাইকারীরা জাহিদের মাথায় কোপ দিয়েছে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার মাথায় ছয়টি সেলাই লেগেছে। পুলিশের সহযোগিতা পাননি অভিযোগ করে আফরিন বলেন, থানায় গিয়ে ঘটনা খুলে বলার পরও আমাকে দীর্ঘ সময় বসিয়ে রাখে। পরে একটা কাগজে অভিযোগ লিখে নেয়। কিন্তু সেটা জিডি না অভিযোগ আমি বুঝতে পারছি না।
এক যুগ ধরে সংঘবদ্ধ ছিনতাই উত্তরা, এয়ারপোর্ট, আবদুল্লাহপুর, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়: একটি চক্র প্রায় এক যুগ ধরে রাজধানীর উত্তরা, এয়ারপোর্ট, আবদুল্লাহপুর, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করে আসছে। এ কাজ করতে গিয়ে বাধা পেলে বা ধরা পড়লে করতো ছুরিকাঘাত। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ছুরিকাঘাতে দেলোয়ার নামে একজনকে হত্যার ঘটনায় গত শনিবার মিরপুরের কচুক্ষেত সংলগ্ন সাগরিকা বস্তি থেকে চক্রের সদস্য নাসিরকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে হত্যাকা-ের মূলহোতা রফিককে দক্ষিণখানের একটি বস্তি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের ডিসি মোর্শেদ আলম।
তিনি বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৩টার দিকে উত্তরা ৭নং সেক্টরে বিএনএস টাওয়ারের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের ফ্লাইওভারে ওঠার সময়ে এক ছিনতাইকারী ধীরগতির চলন্ত পিকআপে ওঠে। মোবাইল ও টাকা ছিনতাই করে পালানোর সময় গাড়িতে থাকা দেলোয়ার হোসেন তাকে ধরার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারীর অন্য দুই সহযোগী এসে এলোপাতাড়ি ছুরির আঘাতে দুই ভাইকে গুরুতর আহত করে। পরে তার মোবাইল ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। মোর্শেদ আলম বলেন, ধস্তাধস্তির সময় ছিনতাইকারীদের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক আহত দুই ভাইকে চিকিৎসার জন্য কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপর ভাই আনোয়ার হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। ঘটনার পর সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকা-ের মূলহোতা রফিককে দক্ষিণখানের একটি বস্তি থেকে এবং নাসিরকে মিরপুরের কচুক্ষেত সংলগ্ন সাগরিকা বস্তি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতার মো. রফিক (৩৮) ট্রাক, মিনিট্রাক, পিকআপ টার্গেট করে দ্রুত গাড়িতে উঠে যায়। ছিনতাই করার সময় স্পটে থাকেন মো. নাসিরসহ (২০) অজ্ঞাত আসামিরা। তারা ছিনতাই করার সময় যদি ছিনতাইকারী জনগণের কাছে ধরা পড়ে তাহলে চাকু দিয়ে জনগণকে জখম করে ছিনতাইকারীকে ছিনিয়ে আনে এবং সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রায় এক যুগ ধরে তারা রাজধানীর উত্তরা, এয়ারপোর্ট, আবদুল্লাহপুর, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করে আসছেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে কী পরিবর্তন আসছে?
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতদ্বৈততা কাম্য নয়
সচিবালয়ে আগুন সন্দেহজনক
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী: শাহজাহান চৌধুরী
টিভিতে দেখুন
কোহলির ধাক্কা সামলে কনস্টাস বীরত্ব
বিজয় দিবসের খেলা
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
গিনেস রেকর্ড বুকে নাম লেখাতে চান জামিলা
২০২৬ বিশ্বকাপ ঘিরে স্বপ্ন বুনছে স্পেন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে থাকবে তো সিটি!