বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশি তল্লাশি ও গ্রেফতার
৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১৩ এএম
হরতালকে ঘীরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ায়ে নামে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ। গত শনিবার গভীরা রাত থেকে গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীসহ শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। একই সময়ে সারাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসায় তল্লাশী চালায় পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
বিএনপির নেতারা বলছেন, দেশে চলমান বিচারহীনতা, অপশাসন, সীমাহীন দূর্ণিতি, অনাচার, অর্থ পাচার ও সিন্ডিকেটবাজীর ফলে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত উর্ধ্বগতিতে বিপর্যস্ত জনগণের জীবন-জীবিকা রক্ষার স্বার্থে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবী আদায়ের লক্ষে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ করা হয়। হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, বাড়ী বাড়ী তল্লাশী, হয়রানী ও নির্যাতন করা হয়। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয় ৯৬০ জন নেতা-কর্মীকে। এ সময় ২০ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আহত হয়েছেন ৩ হাজারের অধিক নেতাকর্মী। এছাড়াও মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ৫ দিনে মোট গ্রেফতার করা হয়েছে ২৬৪০ জনের অধিক নেতাকর্মী এবং মিথ্যা মামলা হয়েছে ৪৫ টি।
বিএনপি সূত্র জানায়, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ৫১১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় ৪৪২টি মামলা দায়ের করা হয় সারাদেশে। গ্রেফতার করা হয় ৫৩১০ জনকে। এ সব মামলায় মোট আসামী প্রায় ৩২হাজার। একজন সাংবাদিকসহ ৪জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিএনপি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার গভীর রাত থেকে গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারে বাসায় বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় গুলশানের বাসভবন থেকে আটক করা হয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। পরে গতকাল রাতে বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় তল্লাশী চালায় পুলিশ। অভিযঙান চালানো হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসায়ও। সকাল নয়টার দিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বনানীর বাসায় দুটি ফ্ল্যাটে পুলিশ তল্লাশি চালায়। তবে সে সময় তিনি বাসায় ছিলেন না।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে ইসরাফিল খসরু সাংবাদিকদের বলেন, সকালে ডিবি সদস্যরা এসে তার বাবাকে খুঁজতে তল্লাশি চালান। তারা বাসার প্রতিটি কক্ষ খুঁজে দেখেন। ডিবি সদস্যরা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পাসপোর্ট এবং তার স্ত্রীর মুঠোফোন নিয়ে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট পর সেগুলো ফেরত দেন। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের গুলশানের বাসভবনে অভিযান চালায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় তাকে না পেয়ে ছোট ভাই ইশফাক হোসেন ও গাড়িচালক রাজিবকে নিয়ে যায় পুলিশ। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ছেলের লালমাটিয়ার বাসায় তল্লাশি চালায় ডিবি পুলিশ। আলালকে না পেয়ে বাসার প্রতিটি রুম তল্লাশি চালায় পুলিশের সদস্যরা। এরপর দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আলালের বনানীর বাসায় যায় ডিবি পুলিশ।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল জানান, লালমাটিয়ায় ছেলের বাসার পর তার বনানীর বাসায় ১৪ থেকে ১৫ জন ডিবি পুলিশ তল্লাশি চালায়। এ সময় প্রতিটি রুম তছনছ করা হয়। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের শান্তিনগরের বাসভবন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পল্লবীর বাসভবন এবং যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর বাসভবনে অভিযান চালায় পুলিশ। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুকে না পেয়ে ছোট ছেলে তাজওয়ার এম আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) আমিনুল ইসলাম বলেন, পুরোনো একটি মামলায় তাজওয়ার এম আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে থানাহাজতে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আসিফ, হালুয়াঘাট পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব তাজবীর হোসেন অন্তর মহাসমাবেশ থেকে ফেরার পথে কমলপুর রেলষ্টেশন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শীরয়তপুর জেলাধীন গোসাইরহাট উপজলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোহাম্মদ মোজাম্মেল রাড়ী ও মোহাম্মদ সোহেল ফরাজীকে কোতয়ালী থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। ফরিদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এ্যাড. আলী আশরাফ নান্নু, জেলা আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক এ্যাড. খাইরুল আলম খসরু, সদস্য এ্যাড. হাসিবুল হাসান লাবলু ও এ্যাড. তারেক আইয়ুব খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পুলিশ হত্যাকাণ্ড, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুর, এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আলাদা আলাদা মামলা হবে। হামলাকারীদের ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন সহিংস ঘটনার দায় মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতারা এড়াতে পারেন না। সভা চলাকালীন হামলা চালানো হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন। এই নৃশংস ঘটনার যেন ন্যায় ও যোগ্য বিচার হয়, এজন্য যা যা কিছু করা দরকার ডিএমপির পক্ষ থেকে করা হবে। এই ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত ও কাদের ইন্ধন রয়েছে, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
ডিএমপির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় গতকাল ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ২৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে ৬৯৬জনকে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে গতকাল রোববার হরতাল চলাকালে নগর বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। নগর বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী জানান, গণহারে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। নেতাদের না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নগরীর পাহাড়তলী থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, পাঁচলাইশ থানা যুবদলের সদস্য হাসান চৌধুরী তোফা, থানা যুবদল নেতা মোহাম্মদ মোরশেদ, শুলকবহর ওয়ার্ড যুবদল আহ্বায়ক সাদেক আহমদ, ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ হোসেন, ৯ নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহাদাত, খুলশী থানা যুবদল নেতা দিদার হোসেন মানিক, সৈয়দ মেহেদী রেজা ববি, সৈয়দ কামাল রেজা, আকবর শাহ থানা তাঁতী দলের সভাপতি মোহাম্মদ নেছার আহমদ, থানা শ্রমিক দল নেতা মো. সোহেল, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. রাশেদ, পাহাড়তলী থানা বিএনপি কর্মী গোলাম কিবরিয়া, মো আরমান, সদরঘাট থানা বিএনপির কর্মী মোবারক হোসেন শাহরিয়ার, চাঁন্দগাও থানা বিএনপির কর্মী টিপু সুলতান জুয়েল, আবদুর রকিব, কোতোয়ালি থানা বিএনপির কর্মী জাহাঙ্গীর আলম, মো. খোকন। বিএনপি, যুবদল নেতাকর্মীদের পুলিশ বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার ও হয়রানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
সিলেট ব্যুরো জানায়, গতকাল সকালে নগরীতে ঢিলেঢালা হরতাল থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হতে শুরু করে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় বিএনপি-জামায়াতের। এসময় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। হরতালে পিকেটিংকালে জামায়াত-বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৮ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। রাজশাহীতে হরতালের আগে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৭৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) গ্রেফতার করেছে ৭০ জনকে। অন্য ছয়জনকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ।
আরএমপি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান, হরতাল ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৭০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আরএমপির বিভিন্ন থানা পুলিশ। শনিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রাজশাহী মহানগরীর ব্যস্ততম সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট, নিউমার্কেট, বাস টার্মিনাল, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট, রেলগেট, গণকপাড়া এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। এদিকে বাঘায়, একটি প্রাইভেটকারে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, মহাসমাবেশে যোগদানের জন্য ঢাকায় গিয়ে কয়েকজন নেতাকর্মী আটক হয়েছেন বলে দাবি করেছে বরিশাল বিএনপি। এ ছাড়া বরিশাল থেকেও চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরিশাল মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা জাহিদুর রহমান রিপন সাংবাদিকদের ঢাকায় আটক কয়েকজনের ব্যাপারে তথ্য ও নাম জানান। শুক্রবার ভোরে জগন্নাথ কলেজের সামনে থেকে আটক হন বরিশাল নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য কাজী গোলাম কিবরিয়া মুন্না, ওয়ার্ড সদস্য ফারুক হোসেন ও ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন। তাদেরকে ডিএমপির ওয়ারী থানা পুলিশ আটক করেছে বলে দাবি করেন রিপন। বরিশাল মহানগর বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ওই দিন ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ বরিশাল সরকারি বিএম কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক শাহেদ খানকে আটক করে। শুক্রবার রাত ৮টায় ঢাকার শ্যামবাজার থেকে নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল সরদার ও বরিশাল মহানগর জাতীয়তাবাদী আলফা টেম্পু শ্রমিক দলের নেতা মো. বেল্লাল আকনকে ঢাকার সূত্রাপুর থানা পুলিশ আটক করেছে।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল নগরীর জাগুয়া থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মনিরুজ্জামান জামাল ও নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মহানগর শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান শরীফকে আটক করা হয়। গৌরনদী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাওসার তালুকদার অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাত ১টার দিকে তার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। একই সময় বিএনপি নেতা হায়দার তালুকদারের বাসায়ও তল্লাশি চালানো হয়। কাওসার দাবি করেন, ঢাকায় গৌরনদী-আগৈলঝাড়া বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সাত নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। ঢাকার রায়েরবাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হচ্ছে, গৌরনদী পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাসেল হাওলাদার, আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা রেজাউল সরদার, যুবদল নেতা নয়ন মৃধা, জনি রাঢ়ী, ছাত্রদল নেতা ইমরান আকন, সাইম ও মোরশেদ। এছাড়া গৌরনদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সজল সরকার সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার উপজেলার মাহিলারা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী শাহাদাত খান ও মাহিলাড়া বাজার থেকে বিএনপি সমর্থক সবুজ সিকদারকে আটক করা হয়। আটকৃতদের ব্যাপারে বিএমপি’র কোতয়ালী থানা ও গৌরনদী থানা পুলিশ জানিয়েছে, পুরনো মামলায়ে এরা পলাতক ছিল। ওইসব মামলায় গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠিতে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেনের আইনজীবী চেম্বার ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় তাঁরা দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে। গতকাল সকাল ১১টার দিকে একদল যুবক লাঠিসোটা নিয়ে শহরের মহিলা কলেজ সড়কে তাঁর বাসবনের নিচতলার চেম্বারটি ভাঙচুর করে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিএনপির তিন নেতাকর্মীসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৮ জনকে আটক করেছে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, সকালে তিনি চেম্বারের কাজ শেষে আদালতে যান। কিছুক্ষণ পরেই যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে লাঠিসোটা নিয়ে তাঁর আইনজীবী চেম্বার ভাঙচুর করে। চেম্বারের সামনে থাকা দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নোতকর্মীরা এ হামলা ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় চেম্বারের ভেতর থেকে সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের হোসেন, বিএনপির মিডিয়াসেলকর্মী আরিফ হোসেন ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী মো. তুষারকে আটক করে। এদিকে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আরো ১৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
এ ব্যাপারে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির বলেন, যুবলীগের নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কারা ভাঙচুর করেছে, তা আমরা জানি না।ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে টায়ার জ্বালানোসহ বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির ডাকা হরতালের কোন প্রভাব পড়েনি। গতকাল সকাল থেকে অন্যান্য দিনের মতই স্বাভাবিক ছিল পরিবেশ। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাজুড়ে শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত নাশকতার অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৭০ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, নাশকতার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করছে।
রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. লিয়াকত আলী বাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার ঢাকা নয়াপল্টন মহাসমাবেশে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সংগ্রামী আহ্বায়ক অ্যাড. লিয়াকত আলী বাবুকে গ্রেফতার করে। দুপুরে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সভাপতি অ্যাড. আসলাম মিয়া বলেন, রাজবাড়ী জেলা বিএনপি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তাকে অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি।
কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুমিল্লায় হরতালের সমর্থনে বিএনপির মিছিলে পুলিশের ধাওয়া, লাঠিপেটা, টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে কুমিল্লা নগরীর চকবাজার কাসারিপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ধাওয়ায় বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত এবং প্রায় ১২ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। গতকাল রোববার দেশব্যাপী বিএনপির ডাকা হরতালের সমর্থনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের নেতৃত্বে একটি মিছিল নগরীর কান্দিরপাড় এলাকা হয়ে রাজগঞ্জ দিয়ে চকবাজারে পৌঁছলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ মিছিলকারীদের লাঠিপেটা ও টিয়ারসেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন অন্তত ১৫ নেতাকর্মী। এ সময় পুলিশ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলী আক্কাসসহ ১২ নেতাকর্মীকে আটক করে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন বলেন, নগরীর চকবাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়ার ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গায় বোমা সাদৃশ বস্তু, বাঁশের লাঠি ও লোহার রডসহ বিএনপি-জামায়াতের ৩৮ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে জেলার ৪ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আটকের দাবি করে পুলিশ। কিন্তু আটক ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ী থেকে পুলিশ আটক করে। মনগড়া মামলা দিয়ে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই পুলিশ তাদের আটক করেছে বলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাাব করা হয়। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় ৯ জন, আলমডাঙ্গায় ১২ জন, দর্শনায় ৫ জন, দামুড়হুদায় ৩ জন ও জীবননগরের ৯ জন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী রয়েছেন।
আলমডাঙ্গায় আটককৃতরা হলেন- আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রোকন, আলমডাঙ্গা পৌর জামায়াতে ইসলামীর কর্মী তোফাজ্জল হক, একই উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন, চিৎলা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম ঠান্ডু, হারদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার, খাসকররা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী , ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ৮নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমেদ, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সেক্রেটারী হারুন অর রশিদ, আঁইলহাস ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, কালিদাসপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির রবজেল আলী ও সেক্রেটারী আব্দুর রাজ্জাক। দামুড়হুদায় আটককৃতরা হলেন- দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন ও জামায়াত কর্মী রফিকুল ইসলাম।
দর্শনার আটককৃতরা হলেন- মদনা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল চঞ্চল , নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফরজ আলী, ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলী , দর্শনা পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মন্টু মন্ডল ও দর্শনা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্বাস আলী। এ সময় তাদের নিকট থেকে ৭টি বোমা সদৃশ বস্তু, ৯টি বাঁশের লাঠি ও ৪টি রড উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ দাবি করে।
জীবননগরে আটককৃতরা হলেন- জীবননগর পৌর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আলী মিয়া , জীবননগর পৌর কৃষক দলের সভাপতি মোহাম্মদ ইউনুছ আলী, জেলা বিএনপির সদস্য আবুল হোসেন , বিএনপি কর্মী সুজাউদ্দিন, আমজাদ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, মিলন হোসেন, শাহিন উদ্দিনও ইসরাফিল। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আটকের সংখ্যা জানালেও নাম-পরিচয় জানায়নি। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ইনকিলাবকে জানান, জেলায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী, নাশকতার পরিকল্পনাকারী, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষের জান-মালের ক্ষতি সাধনকারী হিসেবে চিহ্নিত ৩৮ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করেছে পুলিশ।
স্টাফ রিপোর্টার, গাইবান্ধা থেকে জানান, হরতাল চলাকালে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা পিকেটিং করার সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের ডিবি রোড থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাধারণ মাহামুদুন্নবী টিটুল, সহ-দপ্তর সম্পাদক শফিকুর রহমান খোকা, জেলা যুবদল সভাপতি রাগিব হাসান চৌধুরী, পৌর বিএনপির ৬নং ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার ও ২নং ওয়ার্ডের সদস্য সচিব হিল্লোল মিয়া। এছাড়া সাদুল্যাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শামসুল আলমকে তার বাড়ি থেকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দিনাজপুর অফিস জানায়, দিনাজপুরে পিকেটিং ছাড়াই ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলের ডাকা সকাল সন্ধ্যার হরতাল। সকালে জেলরোড জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বিএনপির জেলা কমিটির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলালকে আটক করেছে পুলিশ। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৪২ জন নেতাকর্মীকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের ভাঙ্গায় দু’টি লোকাল বাসে তল্লাশি চালিয়ে জামায়াত-বিএনপির ৩৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে ভাঙ্গা হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। গতকাল দুপুর ১টার দিকে তাদের আটকের বিষয়টি ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়ারুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। আটকরা ফরিদপুরের ভাঙ্গা, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও যশোর জেলার জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মী। তারা ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, জামায়াত-বিএনপির ৩৭ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তারা ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে দুটি লোকাল বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা জানান, বিএনপির মহাসচিবকে আটকের প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা ও কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিএনপির ঠাকুরগাঁও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। দুপুর ১ টার দিকে শহরের কালিবাড়ি থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে শহরের চৌরাস্তার দিকে যেতে চাইলে পুলিশ মিছিলটি বাধা দেয়। এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিআরসেল নিক্ষেপ করে। এতে আন্দোলন কারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে অবস্থান নেয়। এরপর মিছিলকারীদের সঙ্গে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। তবে এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ কবির জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা জানান, বিএনপি ও জামায়াতের ডাকে পঞ্চগড়ে ঢিলেঢালা হরতালে আটক করা হয়েছে জামায়াত-বিএনপির তিন সদস্যকে। তারা হলেন, তেঁতুলিয়ার উপজেলার আজিজনগর এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে জামায়াতের কর্মী জয়নাল আবেদীন, ফরহাত আলীর ছেলে আব্দুল লতিফ ও দেবীগঞ্জের সুন্দরদিঘী এলাকার পন্ডিত আলীর ছেলে ইউনিয়ন বিএনপি সদস্য কমরেস আলী। গত বছরের নাশকতা ও আ.লীগ বিএনপি মারামারির করা মামলায় ২৪ ঘণ্টায় শনিবার থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত তেঁতুলিয়া ও দেবীগঞ্জ উপজেলা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা জানান, বিভিন্ন মামলার আসামিদের আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকি এরই ধারাবাহিকতায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতালের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি নোয়াখালীতে। তবে হরতালের আগের রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে একটি ট্রাকে আগুন, সিএনজিসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর, হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল করা হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতে নেতাকর্মী’সহ ৮৪ জনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অবিষ্ফোরিত ৫টি ককটেল। শনিবার বিএনপির সমাবেশ থেকে রোববার সারাদেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে রাত ৯টার দিকে বেগমগঞ্জে মিছিল বের করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় হরতাল সমর্থনকারীরা দুটি সিএনজি ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁঁছলে পালিয়ে যায়, এসময় ঘটনাস্থল থেক ১৭জনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেনবাগ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সেনবাগ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন পাটোয়ারি’সহ ১৪জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া শনিবার বিকেল থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সদর থানায় ৭জন, হাতিয়ায় ১, কোম্পানীগঞ্জে ৬, বেগমগঞ্জ ১৭, সেনবাগ ১৪, চাটখিল ৪, সোনাইমুড়ী ২১, চরজব্বার থানায় ৬ ও গোয়েন্দা পুলিশ ৮জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতার মামলা রয়েছে এবং বাকীদের নাশকতার চেষ্টা ও পরিকল্পনা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সেনবাগ (নোয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল উপজেলায় হরতাল সমর্থক পিকেটারদের হামলায় ৩ পুলিশ আহত হয়েছে বলে দাবি করেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিমুল হাসান রাজীব, আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষনিক তাদের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। এ সময় সন্দেহ জনক ভাবে এক জনকে আটক করা হয়। এছাড়া শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার মহাসমাবেশ শেষে বাস যোগে সেনবাগে আসার পথে সেনবাগ পৌর শহর থেকে বিএনপির ১৩ নেতা কর্মী ও ছমির মুন্সির হাট বাজার থেকে জেলা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক ও সেনবাগ উপজেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারী মোক্তার হোসেন পাটোয়ারীকে গ্রেফতার করে বলে নিশ্চিত করেন সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নাজিম উদ্দিন।
রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রামগতিতে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল চলাকালে পিকেটারদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে দুই পুলিশ সদস্যসহ তিন পথচারী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আজাদনগর ব্রীজ এলাকায় আহত পুুলিশ সদস্যরা হলেন, রামগতি থানার এসআই নাজমুল ও এএসআই) মান্নান। পথচারীদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সালথা (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সালথায় বিএনপির ডাকা হরতালের সমর্থনে মিছিল থেকে ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের ১১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে বিএনপির ২ নেতাকর্মীকে। উদ্ধার করা হয়েছে দেশিয় অস্ত্র। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সালথা উপজেলা সদরের বাইপাস সড়কের চৌরাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। সালথা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই পরিমল কুমার বিশ্বাস জানান, হরতালের সমর্থনে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সালথা বাইপাস সড়কে চৌরাস্তা মোড়ে মিছিল করে বিএনপির সমর্থকরা। তারা সড়কের উপর টায়ার ও বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা ছবিসহ ব্যানার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় অন্তত ৪টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে ৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে শর্টগানের ১১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। আটক করা হয়েছে সোনাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি রেজাউল শেখ ও কর্মী সোহেল শেখকে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১৮ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে নাশকতা ও বিষ্ফোরক মামলায় বিএনপি-জামাতের ১২ নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- শাকিল মিয়া,নজরুল ইসলাম, রিফাত উদ্দিন, সোহেল রানা, শফিকুর রহমান জুয়েল, মজিবর মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মজলু মিয়া, উজ্জল মিয়া, হুমায়ুন কবির, টুটুল মিয়া, হান্নান মিয়া। হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান টিটু জানান, পৌর সদরের কুড়িঘাট এলাকায় পুলিশের সাথে সংর্ঘষের মামলায় তাদের আটক করা হয়েছে।
বেনাপোল অফিস জানায়, বেনাপোল ও শার্শা উপজেলাধীন বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে ৩১টি বোমাসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুটি পৃথক অভিযানে বেনাপোল পোর্ট থানা ও শার্শা থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ভূইয়া বলেন, গোপন খবরের মাধ্যমে জানা যায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামায়াতের কয়েকজন নেতাকর্মী বেনাপোল পৌরসভার সাদিপুর নামক স্থানে গোপন বৈঠক করছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৭ জনকে আটক ও ১৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করে। এসময় অন্যরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৩৪ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আটকরা হলেন- বিএনপি নেতা বেনাপোল পৌর কমিশনার আমিরুল ইসলাম, আহাদুজ্জামান আহাদ, পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি ওসমান গনিসহ আরও অনেকে।
অপরদিকে শার্শা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শার্শার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৬টি পেট্রোলবোমা ও হাতবোমাসহ ১১ জন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।লালপুর (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, লালপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনর রশিদ পাপ্পু ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস সালামসহ ১২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাত ১০টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে ৮ জনক গোয়েন্দা পুলিশ ও ওয়ালিয়া থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনর রশিদ পাপ্পু, যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রায়হান কবির সুইট, জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল। অন্যান্যদের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। গোপালপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মোলাম বলেন, রাতে ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে ফেরার পথে কোন প্রকার ওয়ারেন্ট ছাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনর রশিদ পাপ্পু, যুবদলের আহবায়ক আব্দুস সালামসহ ৮জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।এসময় ওয়ালিয়া ইউনিয়নের ৪জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের লালপুর থানায় রাখা হয়েছে। বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীরা এলাকা ছাড়া।
গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, গভীররাতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুলিশি কাজে বাধাদানের অভিযোগে জামায়াত-বিএনপির তিন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত মধ্য রাতে গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য মুক্তার হোসেন। ধারাবারিষা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামের আমির আব্দুল গণি এবং ধারাবারিষা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মনিরুজ্জামান হেনা। তারা ধারাবারিষা ইউনিয়নের ধারাবারিষা দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা। এদিকে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোনোয়ারুজ্জামান জানান, হরতালের কোনো প্রভাব গুরুদাসপুরে পড়েনি।
পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ ও হামলার ঘটনার মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের আরো ৯ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকুন্দিয়া থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মো. মোশারফ হোসেন। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন, এগারসিন্দুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আমীন শাহিন, চরফরাদী ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মো. সদরুল ইসলাম, চন্ডিপাশা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. রফিক মিয়া ও মো. হোসেন মিয়া, চন্ডিপাশা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মাজহারুল হক এংরাজ, নারান্দী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. আজিজুল হক রুমেন, চরফরাদী ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি মো. আবু বকর সিদ্দিক তরুন ও জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা মো. বাবুল মিয়া। ঝালকাঠিতে জেলা বিএনপির সদস্যসচিবের চেম্বার ভাঙচুরবিএনপির ১৮ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ
বামনা (বরগুনা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বরগুনার বামনা উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. জসিমকে গতকাল সকাল ১১টায় উপজেলা সদরের সাহেব বাড়ী বাজারের তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করেছে বামনা থানা পুলিশ। জসিম উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের কালাইয়া গ্রামের আ. খালেক জোমাদ্দারের পুত্র। বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাইনুল ইসলাম জানান, নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা পুলিশ নাশকতার অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৪ নেতাকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার রাতে উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্লা এলাকার সাটিয়াচড়া শিবনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় নাশকতাকালে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ককটেল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া শনিবার ঢাকায় বিএনপি সমাবেশ স্থল থেকে বিএনপি দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতরকৃতরা হলেন- উপজেলা বিএনপির সদস্য ফতেপুর ইউনিয়নের শুভূল্যা গ্রামের আজহার আলীর ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম, একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো. শওকত ওসমান হিরা, জামুর্কী ইউনিনের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আগধল্যা গ্রামের হোসেন উদ্দিন খলিফার ছেলে মো. আমরান আহম্মদ রুজবু ও যুবদল নেতা গোড়াই হলিদ্রাচালা গ্রামের আইয়ুুব আলী মুন্সির ছেলে মো. ফরিদুল ইসলাম ফরিদ।
এছাড়া ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ থেকে ভাতগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বজলুর রহমান বাদল ও গোড়াই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান জুয়েলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, শনিবার রাতে বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী উপজেলার সাটিয়াচড়া শিবনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ককটেল ফাটিয়ে নাশকতার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ বিএনপির অজ্ঞাতনামা অর্ধশত নেতাকর্মীকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।
তারাকান্দা (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের তারাকান্দায় হরতাল চলকালীন কোনো ধরণের পিকেটিং এর ঘটনা না ঘটলেও সকালে দুই বিএনপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত বিএনপি কর্মীরা হলেন- উপজেলার গালাগাঁও ইউনিয়নের মো. মন্নাছ আলীর পুত্র আজাহারুল ইসলাম এবং তারাকান্দা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের মৃত মনতাজুল হকের পুত্র সালাউদ্দিন বুলু। গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি নিশ্চিত করে তারাকান্দা থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের জানান, তারাকান্দা থানায় দায়েরকৃত নাশকতা, ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামি হিসেবে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার পুলিশ রোববার বিএনপি ও জামায়াতের ১৪ জনকে গ্রেফতার করে ময়মনসিংহ জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। এরা হলেন বিএনপি মো. মমিনুল হক নিপুন, মো. আবদুল মোমেন, মো. মুক্তার, মো. খলিল, মো. আবুল কালাম আজাদ মো. নজরুল মৃধা, মো, আক্তার হোসেন, মো. আতিকুল ইসলাম রনি, মো. মহিউদ্দিন সুমন, দিলিপ চৌহান, মো. মনির খান, নজরুল ইসলাম, কাইছার আহমেদ ও জামায়াতের ইউপি সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম। পাগলা থানার ওসি রাজু আহমেদ জানান, বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদেরকে নাশকতা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধামরাই (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকার ধামরাইয়ে রাতে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ধামরাই থানা পুলিশ। জানা গেছে, শনিবার রাতে ধামরাই থানা পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকা থেকে চেংগীস হোসেন, রাজু ,ইদ্রিস আলী, নাজমুল, রুমু মিয়া, আমজাদ হোসেন ও রোকন আহমেদকে গ্রেফতার করেছে। নাশকতার অভিযোগে এনে জ্ঞাত ৪৩ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো দেড়শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন থানার এসআই পান্নু মিয়া।
শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, শ্রীপুরে হরতাল সমর্থকরা সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দুটি বাস ভাংচুর করে। অপরদিকে ছাত্রদলকর্মীরা জৈনা বাজার এলাকায় মহাসড়কে টায়ার জালিয়ে সড়ক অবরোধ করে মিছিল করে। এদিকে শনিবার রাত থেকে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৮ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- উপজেলার মূলাইদ গ্রামের আ. সামাদের ছেলে সোহেল, কেওয়া গ্রামের মৃত আ. খালেকের ছেলে আ. হান্নান, গাড়ারণ গ্রামের খলারটেক এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মো. নাজমুল হাসেন, ধামলই গ্রামের মৃত মনুরুদ্দিনের ছেলে হাসান ফকির, গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আসাদুজ্জামান হিরা, আজুগিরচালা গ্রামের মোশারাফ আলীর ছেলে আবু হানিফা, শৈলাট গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের
পারমাণবিক বোমা সজ্জিত নতুন যুদ্ধজাহাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন কিম
ধর্ষণের প্রতিশোধে বাবাকে হত্যা, গ্রেফতার ২ কিশোরী
আমাকে ধর্ষণ করার ভিডিও দেখে স্বামী
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
ফিলিপাইনে ৪০০ বিদেশি অনলাইন প্রতারক গ্রেফতার
ইসরাইলি ৪শ’ সেনা নিহত গাজায় স্থল অভিযানে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করতে হবে
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ
ভোলায় শীতার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ
গাজীপুরে বিএনপি নেতার উপর হামলা
চাঁদপুরে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম গ্রেপ্তার
বিভিন্ন বিভাগ ছোট হচ্ছে পাকিস্তানে
আশুলিয়ায় চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে দোকানীকে গুলি
গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি নিয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করল জার্মানি-ফ্রান্স
৪ ভূখ-কে অন্তর্ভুক্ত করে ইসরাইলি মানচিত্র প্রকাশ
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
চলতি বছর বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার পূর্বাভাস
যুক্তরাষ্ট্রের নাম মেক্সিকান আমেরিকা রাখার পরামর্শ