মূল্যস্ফীতি ১০ ছুতে লাফাচ্ছে
০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
মে ২৩-৯.৯৪
জুন-২৩-৯.৭৪
জুলাই-২৩-৯.৬৯
আগস্ট-২৩-৯.৯২
সেপ্টেম্বর-২৩-৯.৬৩
অক্টোবর-২৩-৯.৯৩
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দিনের খাবার কমিয়ে দিয়েছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা (সিপিডি), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস), ব্র্র্যাকসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার গবেষণায় জানিয়েছে, পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষ খাবার এবং বিভিন্ন খাতের খরচ কমিয়ে দিয়েছে। একদিকে ডলারের দাম বাড়ছে অন্যদিকে ব্যাপক হারে নতুন টাকা ছাপানোয় দেশে টাকার মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক কর্মকর্তা জানান, মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি হলেও সেটাকে সরকারের নির্দেশনায় কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। অথচ সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিকি পরিকল্পনা অনুযায়ী সার্বিক মূল্যস্ফীতি চলতি অর্থবছরে ৫ শতাংশের নিচে থাকার কথা।
গত মে মাসে ১২ বছরের মধ্যে রেকর্ড ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়। এরপর গত আগস্টে মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর গত অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। যেন পরবর্তী রেকর্ড কোন কিছুর জন্য আটকে আছে। যেন কোন কিছুর দাম আর এক টাকা বাড়লেই রেকর্ড হবে। ১০ শতাংশ ছুতে যেন লাফাচ্ছে মূল্যস্ফীতি। তবে সংশ্লিষ্টরাই বলছেন, মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি হলেও সরকার সেটাকে কম করে দেখাচ্ছে।
গতকাল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, অক্টোবর শেষে মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি হলেও খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে রেকর্ড ছাড়িয়েছে। গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।এর আগে আগস্টে সর্বোচ্ছ মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
জানা গেছে, এর আগে ২০১২ সালের মার্চে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। এরপর আর কখনো মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে যায়নি। তাই মূল্যস্ফীতি দুই অংকে যাতে না যায়, সেই কৌশলেই আটকে আছে।
গত মে মাসে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হওয়ার মানে হলো, ২০২২ সালের মে মাসে একজন মানুষ যে পণ্য ১০০ টাকায় কিনত, চলতি বছরের মে মাসে একই পণ্য কিনতে তার খরচ হয়েছে ১০৯ টাকা ৯৪ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৯৪ পয়সা। মূল্যস্ফীতিকে বলা হয় একধরনের কর, যা ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার ওপর আরোপ হয়। তবে চাপে পড়ে মূলত সীমিত আয়ের মানুষেরা।
এর আগে গত মে মাসে যখন মূল্যস্ফীতি রেকর্ড ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছিল তখন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতি বহিরাগত, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে এসেছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, অন্যান্য পণ্যের দামও কমে আসছে। এসব কম দামের পণ্যের সুফল বাজারে পেতে আরও দুই-তিন মাস সময় লাগবে। তখন মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রায়ই আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করা হলেও বেশ কিছুদিন ধরে বিশ্ববাজারে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম কমছে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। আমদানিকারকেরা এর জন্য মূলত ডলার-সঙ্কট এবং আমদানির এলসি খোলার ওপর কড়াকড়িকে দায়ী করে থাকেন।
বিবিএস সূত্রে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। গ্রামে শহরের চেয়ে মূল্যস্ফতি বেশি হয়েছে। অক্টোবরে গামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ আর শহরে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। অবশ্য এর আগে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে উন্নীত না হওয়ায় সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এপ্রিলের শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। এ সময় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে যায়নি।
আয় বেশি বাড়লে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও তা কিনতে তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু দেশে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার এক বছর ধরেই কম। গত অক্টোবর মাসে মজুরি বৃদ্ধির হার হলো ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। সাধারণত মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার বেশি থাকে।
খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আলু ও ডিম ডিস্টার্ব করেছে। এই কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে একটা ভালো দিক মূল্যস্ফীতি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে না, ধীরে ধীরে বাড়ছে। তারপরও আমরা এটা চাই না।তবে আগামী মাসে কৃষকের ঘরে ঘরে আমন ধান উঠবে তখন মূল্যস্ফীতি কমবে বলে আশা করি।##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সিংগাইরের তহরা হত্যা মামলা : শিক্ষক লালমুদ্দিনের ব্লাকমেইলের শিকার ছাত্রী আইরিন আক্তার
১৫ জানুয়ারি বিদায়ী ভাষণ দেবেন জো বাইডেন
’৭১ প্রশ্নে জামায়াতে নতুন আলোচনা, আসতে পারে সিদ্ধান্ত
ঘণকুয়াশায় ৩ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিস চালু হয়েছে
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ মোংলায়
চীন সফরে রেচেল রিভস , যুক্তরাজ্যের উন্নতির প্রতিশ্রুতি
দায়িত্ব পেলে আমরা ধর্ম ও দল দেখব না : জামায়াতের আমির
'মুরুব্বী মুরুব্বী কামডা করল কী'
বায়ুদূষণের শীর্ষে কলকাতা, ঢাকা দ্বিতীয়
তথ্য গোপন মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও নেই কোনও শাস্তি
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজয়ী কারেন বিদ্রোহীরা, প্রশাসন গঠনে চ্যালেঞ্জ
ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানাবে জাতীয় নাগরিক কমিটি
লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে নিহতের সংখ্যা ১১, সংকট আরও বাড়ছে
মেঘনায় বাল্কহেড-স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহত অন্তত ২, একাধিক নিখোঁজ
গাজায় টেলিকম সেবা বন্ধের আশঙ্কা , জ্বালানি সংকটে জরুরি সেবা বিপর্যস্ত
সিরিয়ায় আসাদ অনুগত কর্মকর্তার জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিস বন্ধ
ইয়েমেনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র-বন্দরে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলা
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় নিহত আরও ২১, মানবিক বিপর্যয় চরমে
ফেনীর মহিপালে এক শিশুসহ ৭ রোহিঙ্গাকে আটক