ভুটানের সব, ভারতের ৬০ পণ্য আমদানির অনুমতি মিললো
০৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালুর মধ্য দিয়ে দু’দেশের বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে- এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে এ লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। অনুমতি মিলেছে ভুটানে উৎপাদিত সব (সুতা ও আলু ব্যতীত) পণ্য ও ভারতের ৬০টি পণ্য। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে সব ধরণের পণ্য উল্লেখিত রেলপথ দিয়ে রফতানি করা যাবে ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এর এক প্রজ্ঞাপন থেকে আমদানির-রফতানির এ তথ্য জানা গেছে। গত ৩১ অক্টোবর এ প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। সোমবার এ প্রতিবেদকের হাতে প্রজ্ঞাপনটি আসে। একই প্রজ্ঞাপনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আরো চারটি পণ্য আমদানির অনুমতি মিলেছে। এসব পণ্য হচ্ছে, ভুসি, ডাল, বুট ও বাঁশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও নতুন এ প্রজ্ঞাপন জারির কারণে ব্যবসায়িদের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে। রেলপথের আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হলে কয়েক মাসের মধ্যেই ভারত থেকে পণ্য আমদানি শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ি মো. মনির হোসেন বাবুল সোমবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আখাউড়া স্থলবন্দরের বাণিজ্য খেই হারিয়ে ফেলেছে। রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানির অনুমতি মেলায় এখন বাণিজ্যে নতুন ধারা ফিরে আসবে। ব্যবসায়িরা লাভবান হবেন।
আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন চালু হলে দু’দেশের বাণিজ্যে আরো গতি বাড়বে। বিশেষ করে পাথর ও গম আমদানি আমাদের সহজ হবে। ভারতের ট্রেন বাংলাদেশে চলে আসবে বলে কমে আসবে পরিহন ব্যয়। ইতোমধ্যেই পণ্য আমদানি-রফতানির জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে ভারতের অংশে রেললাইনের কিছু কাজ বাকি থাকায় এখনই বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু করা যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত হয়ে দু’দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগের উদ্বোধন হয়েছে বুধবার। বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আরো একটি রেল যোগাযোগ স্থাপন হলো।
এদিকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য মুখিয়ে আছেন ভারতীয়রা। বিশেষ করে সেখানকার ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ মনে করছে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে কোলকাতা হয়ে সেদেশের বিভিন্নস্থানে গেলে তাদের অনেক সময় বেঁচে যাবে। এছাড়া বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যাওয়াটা তাদের জন্য সহজ হবে।
তবে এখনই এটা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ হয়ে আগরতলা-কলকাতা ট্রেন চলাচল। এ ক্ষেত্রে বাধা মিটার গেজ রেললাইন। কেননা, আখাউড়া থেকে ভৈরব পর্যন্ত ব্রডগেজ (ডুয়েল গেজ) হলেও ভৈরব থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পুরোটাই এখনো মিটার গেজ রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই পথটুকু ব্রডগেজ লাইনে পরিণত না করা হয় ততক্ষণ বাংলাদেশ হয়ে সরাসরি আগরতলা থেকে কলকাতা যাওয়া সম্ভব না। ভারতের অভ্যন্তরের পুরোটাই ব্রজগেজ বিধায় বাংলাদেশ থেকেও গাড়ি যাওয়া সম্ভব না।
আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. আবু জাফরও জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে আগরতলা থেকে কলকাতা ট্রেন চলাচল হুট করেই সম্ভব না। তবে এক্ষেত্রে আগে ভৈরব থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পুরো অংশে ব্রডগেজ লাইন করতে হবে।
একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ি, ভারত-বাংলাদেশ এর মধ্যে রেলওয়ের এ সংযোগ প্রকল্পটি চালু হলে মূলত ভারতীয়রা ব্যবসায়িরাই বেশি লাভবান হবেন। এক্ষেত্রে তারা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ থেকে আনা পণ্য ট্রেনে করে ত্রিপুরাসহ আশেপাশের সাতটি রাজ্যে সহজেই নিয়ে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন থাকায় ট্রেন চলাচলের কোনো অসুবিধা হবে না।
সোমবার দুপুরে নতুন দিগন্তের সূচনা হয় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের রাজধানী আগরতলার নিশ্চিন্তপুর স্টেশনে গেলো পাঁচটি বগির মালবাহী ট্রেন। এরপর রেললাইন ঠিক আছে মর্মে সবুজ সংকেত পেয়ে বুধবার দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে সেটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করানো হয়।
দুই দেশের এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬.৭৮ কিলোমিটার। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।
গত ১৬ আগস্ট ‘গ্যাং কার’ বা ‘ট্র্যাক কার’ চালানো হয়ে। ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত রেলের ‘ইঞ্জিন’। এর সঙ্গে দু’টি বগি সংযুক্ত করে উল্লেখিত পথে চালানো হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর চালানো হয় মালবাহী ট্রেন। তবে এগুলো শুধুমাত্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মনিয়ন্দের শিবনগর পর্যন্ত চলাচল করে।
২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১৮ মাস। এরপর করোনার প্রভাবসহ নানা কারণে পাঁচ দফা এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ নির্মাণ কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন নাগাদ করা হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লক্ষ্মীপুরে লিফলেট বিতরণ
মেঘনা নদীতে দুই স্পিডবোটের সংঘর্ষে নিহত ৩, নিখোঁজ ১
হবিগঞ্জের সড়কে প্রাণ গেল তিন নারী পোশাক শ্রমিকের
বরিশালে জাতীয় মহাসড়কের ওপর নির্মিত পাক অপসারণে নগর ভবনকে সড়ক অধিদপ্তরের চিঠি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩
দুইবার আবেদন করেও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মাল্টার নাগরিকত্ব পায়নি তারিক সিদ্দিকের পরিবার
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিল শুরু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
মায়ের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে হাসপাতালে তারেক রহমান
রাজশাহীতে এবেলা ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় পিছু হটল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
আশুলিয়ায় মেরামতের নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে
'বিয়ের গন্ডগোল' নিয়ে জোভান–তটিনী আত্মপ্রকাশ
ভারতে বসে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন ফ্যাসিস্টের দোসর আলাউদ্দিন নাসিম
রুশ জ্বালানিখাতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
সিরিয়ার দামেস্কের মসজিদে পদদলিত হয়ে নিহত ৪ জন
কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল
খাদ্য পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখতে পুনর্গঠন হলো এফপিএমসি
দেশে অস্তিত্বহীন দলবাজরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক
ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা