কর্মচারীদের নিবৃত রাখার পরিবর্তে মামলা দেয়া হয়েছে
১০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩৪ এএম | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩৪ এএম
শ্রম আদালতের মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য ১৬ নভেম্বর
সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রামীণ টেলিকম সম্পর্কে ভুল ও মিথ্যা তথ্যের অবতারণা করে মুনাফা দাবি করা হচ্ছে। এ দাবি অযৌক্তিক ও আইন বহির্ভূত। সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আইন বহির্ভূত দাবি-দাওয়া থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিবৃত রাখার পরিবর্তে নিজেরাই মামলা দায়ের করেছে।
শ্রম আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে এ কথা বলেছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। শুনানি গ্রহণ শেষে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয় ১৬ নভেম্বর। এ সময় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে মামলাটির বিচার চলছে।
গতকাল আত্মপক্ষ সমর্থনের পক্ষে শুনানি শুরু হয় দুপুর ১ টার দিকে। শেষ হয় বেলা ২টা ৫০ মিনিটে। বিকেল ৩ টায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেন শ্রম আদালত।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে ড. মুহাম্মদ ইউনূনের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও অন্য ৩ জন বিবাদী পরিচালনা বোর্ড-এর সদস্য হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনে রেজিস্ট্রিকৃত ২৮ ধারায় সৃষ্ট একটি ‘নট ফর প্রফিট’ কোম্পানি। যার লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়। এই লভ্যাংশের অর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। এ কারণে এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠানের কোনো মালিকানা বা শেয়ারহোল্ডার নেই। বিবাদীদের কেউই এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ডার নন। এ ছাড়া বিবাদীরা শুধুমাত্র সম্মানজনক পদে থেকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন। এটি ছাড়া কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় গঠিত গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের মুনাফা প্রদান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
ব্যারিস্টার মামুন বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের যেহেতু কোনো স্থায়ী কার্যক্রম নেই সেহেতু এর মূল কাজ হচ্ছে চুক্তির মাধ্যমে পল্লীফোন কার্যক্রম এবং নকিয়া মোবাইল হ্যান্ডসেটের বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান। পল্লী ফোন কার্যক্রমটি গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রতি ৩ (তিন) বছর পর চুক্তি নবায়ন করা হয়। ‘পল্লী ফোন’ ‘গ্রামীণ টেলিকম’র একটি প্রকল্প। যা গ্রামীণফোনের নির্দেশে চুক্তির ভিত্তিতে গ্রামীণ টেলিকমের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে। যার বিনিময়ে গ্রামীণ টেলিকম গ্রামীণফোন থেকে ১০ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার পায় এবং এই চুক্তির মেয়াদ ৩ বছর পর চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করে থাকে। অনুরূপভাবে ফিনল্যান্ডের নকিয়া মোবাইল কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে গ্রামীণ টেলিকম বাংলাদেশের সকল ক্রেতাদেরকে নকিয়া হ্যান্ডসেটের বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করে থাকে। যার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় ৫ শতাংশ ডলার গ্রামীণ টেলিকম আয় করে থাকে। এই চুক্তির মেয়াদও ৩ বছর। ফলে চুক্তিটি প্রতি ৩ বছর পর পর নবায়ন করা হচ্ছে।
চুক্তির আওতায় গ্রামীণ টেলিকম আইন অনুযায়ী এর (চুক্তিভিত্তিক চরিত্র) আওতায় নিযোগ পাওয়া কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। ফলে এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আওতায় সকল শ্রমিক কর্মচারী-কর্মকর্তা স্থায়ী শ্রমিকের ন্যায় সকল সুযোগ-সুবিধা যেমন-পদোন্নতি, নিয়মিত হওয়া, পে-স্কেল, গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড, অর্জিত ছুটি, মেডিক্যাল ভাতা পেয়ে থাকেন।
তবে গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় সৃষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান (নট ফর প্রফিট কোম্পানি) হওয়ায় কোম্পানি আইন অনুযায়ী লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়। সেজন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও নিট মুনাফার ৫ শতাংশ (ডচচঋ) প্রদান করার কোনো সুযোগ নেই।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী উল্লেখ করেন, পুরো বিষয় সম্পর্কে অবহিত হয়েই গত ২০ বছর ধরে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীরা চাকরিতে থাকাবস্থায় এবং রিটায়ারমেন্টে (অবসরে) যাবার পরও তারা কখনো মুনাফা দাবি করেনি। কিন্তু অতি সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ মহল যারা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সামাজিক ব্যবসার অগ্রগতি পছন্দ করে না তাদের প্ররোচণায় বিভ্রান্ত হয়ে মুনাফার সুবিধা আদায়ের জন্য গ্রামীণ টেলিকমের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ২০১৭ সালে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ সিভিল বিধানের অধীন ২১১ ধারায় তৃতীয় শ্রম আদালতে অনেকগুলো সিভিল বিএলএ (আই আর) মামলা এবং সিবিএ কর্তৃক শিল্প বিরোধ মোকদ্দমা দায়ের করে। সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অযৌক্তিক ও আইন বহির্ভূত দাবি দাওয়া থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরত রাখার পরিবর্তে ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রামীণ টেলিকম সম্পর্কে ভুল ও মিথ্যা তথ্যের অবতারণা করে মুনাফাসহ টেলিকমের অবৈতনিক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসহ ৪ জন পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইনের ৩টি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে মামলা করেন।
সব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপূর্ণ। তাই অভিযোগ অস্বীকার করে বাদীর দায়েরকৃত মামলা ক্ষতিপূরণসহ খারিজ করার জন্য আদালতের কাছে প্রার্থনা করছি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিকালে অন্য বিবাদী গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম এবং মো. শাহজাহান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসিম : সিলেটে কাইয়ুম চৌধুরী
ডার্ক ওয়েবে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির অভিযোগ : সিটি ব্যাংকের ব্যাখ্যা
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত
গফরগাঁওয়ে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধুর মৃত্যু
কর্মীদের বীমা সুরক্ষা প্রদানে ঢাকা ব্যাংক ও মেটলাইফের চুক্তি স্বাক্ষর
পাঠ্যবইয়ে নাম যুক্ত হওয়ায় আমার চেয়ে পরিবার বেশি খুশি: নিগার
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় সম্মেলন- ২০২৫ অনুষ্ঠিত
শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার আভাস, বাড়বে রাত-দিনের তাপমাত্রা
বগুড়ায় শিবিরের সাবেক কর্মী সাথী ও সদস্যদের মিলন মেলায় রাফিকুল ইসলাম খান
ক্যাম্পাসভিত্তিক জুলাইয়ের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখার আহ্বান প্রেস সচিবের
শিবালয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো বারেক মেম্বরের লাশ
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: যাদের উপর থাকবে নজর
এবি পার্টির কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি
হ্যানয় গ্র্যান্ড মাস্টার্স-২ দাবায় ফাহাদের হার
ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা : লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ
মানিকগঞ্জে নিখোঁজ সাবেক ইউপি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার
পাঠ্যবই সংশোধনের আহ্বান বিএনপির
৭১'র পরাজিত শক্তি ২৪'র আন্দোলনকে ব্যবহার করে ৭১'র গৌরবকে মুছে ফেলতে চায়: নাছির
সীমান্তে অস্থিতিশলীতাই প্রমান করে ভারত কোন দিনই আমাদের বন্ধু ছিলো না : পীর সাহেব চরমোনাই
নাইজেরিয়ায় অতর্কিত বন্দুক হামলা, সরকারি বাহিনীর ২১ সদস্য নিহত