তফসিল প্রত্যাখ্যান বিএনপির
১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৯ এএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘একতরফাভাবে’ তামাশার তফসিল ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপি এই তফসিল ‘ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান’ করেছে। গতকাল বুধবার রাতে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির সঙ্গে মশকরা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীত্বে থাকবেন, তার নেতৃত্বে সরকার থাকবে আর অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে, এটা বিশ্বাস করা খুব কঠিন ব্যাপার। আমি মনে করি, এটি সম্পূর্ণরূপে ডাহা মিথ্যা, ভণ্ডামি এবং মেকি।
তিনি বলেন, গোটা বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর্জপরি আহ্বান উপেক্ষা করে নিশিরাতের সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন এক তরফা নির্বাচনের তামাশার তফসিল ঘোষণা করেছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশে অতীতের মতোই আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার হরণের জন্য মেরুদণ্ডহীন ও পক্ষপাত দুষ্ট নির্বাচন কমিশন যে তফসিল ঘোষণা করেছে তা আমরা চরম ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি।
তিনি বলেন, দেশে একটি ভীতিকর, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে হাসিনা মার্কা একতরফা নির্বাচনের এই তথাকথিত তফসিল রঙ্গ জনগণ মানে না। এই নীল নকশা নির্বাচনে তফসিলে বাংলাদেশের মাটিতে কোনো দিন নির্বাচন হবে না।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে আমি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে আবারও হুশিয়ার করে বলতে চাই, এই অবিমৃষ্যকারিতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে যে ভয়াবহ অচলাবস্থা ও যে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে তার পুরো দায়ভার তাদেরকেই বহন করতে হবে, নির্বাচন কমিশনকেই বহন করতে হবে আর এই তথাকথিত যে সরকার তাকেই বহন করতে হবে। এই সংকটের কারণে আওয়ামী মাফিয়া চক্রকে চিরকাল দায়ী থাকতে হবে। যা জনগণের চলমান অগ্নিগর্ভ আন্দোলন আরও তীব্র, আরও কঠিন থেকে কঠিনতর হবে এবং অতিদ্রুত আওয়ামী নাৎসী সরকারের পতন ঘটবে ইনশাল্লাহ। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার এই সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সকলের বিচার জনগণ করবে’ বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ‘শেখ হাসিনার অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন’ তাকে ‘হাস্যকর’ মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পর পর তিনটি ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে রেখে আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দেশকে নরকপুরীতে ও জনগণের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের দুঃশাসনে পিষ্ঠ মানুষ তাদের ভোট ও ভাতের অধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ফিরে পেতে মরনপন লড়াইয়ে রাজপথে নেমেছে। জনগণ ১৫ বছরের অত্যাচারের জবাব দিতে ঘুরে দাড়িঁয়েছে।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকার পতনের অতল গহ্বরের মুখে দাঁড়িয়ে দেশকে নিশ্চিত সংঘাতের দিকে ধাবিত করে পূণরায় গরু-ছাগল দিয়ে নির্বাচনের পায়তারা করেছে। আওয়ামী লীগ ব্যাতিত দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল একতরফা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। কার জন্য এই নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে? মানুষ রাজপথে নেমেছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি, ১৮ কোটি মানুষের প্রাণের দাবি, এই দাবিকে বন্দুকের নলের মুখে উড়িয়ে দিয়ে এক তরফা পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে শেখ হাসিনা। আর এই নির্বাচন কমিশন সব জেনে-শুনেই দেশকে এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে ঠেলে দিতে এই একতরফা তফসিল ঘোষণা করলো।
রিজভী বলেন, বর্তমান কমিশন নিশিরাতের ভোটের সরকারের মনোনীত সিলেকশন কমিশন। তারা আওয়ামী লীগের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তারা জনগণের কেউ নন। এই কমিশনকে কেউ মানে না। এরা মূলত আওয়ামী কমিশন। শেরে বাংলানগরে রায়টকার, জলকামান, সজোয়া যান নিয়ে শত শত পুলিশ-র্যাব-বিজিবি বেষ্টিত নির্বাচন ভবনে বসে আওয়ামী চেতনার নিশান বরদার সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সিলেকশন ভোটের তফসিল ঘোষণা করে গোটা দেশকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করলো এবং গোটা জাতির সাথে ইয়ারি করলো। অতীতে রাকিব-হুদা কমিশনের মতোই কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দলদাসত্বের চরম পরাকাষ্ট প্রদর্শন করে গণশত্রুতে পরিণত হলো। তারা শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি অগ্রহণযোগ্য, একপেশে, প্রশ্নবিদ্ধ, বিরোধপূর্ণ নির্বাচনের চরম ধৃষ্টতা দেখানোর যে ঝুঁকি নিলো জনগণ এর পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তফসিল বঙ্গোসাগরে ভাসিয়ে দেবে মন্তব্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনা ভেবেছেন তার পা চাটা গোলামদের দিয়ে একটি পাতানো ভোট রঙ্গ মঞ্চস্থ করবেন। কিন্তু তার জেনে রাখা উচিত এটা ২০১৪ কিংবা ২০১৮ নয়। তফসিল দিলেন আর পুলিশী ভোটের মাধ্যমে ফল ঘোষণা করে ক্ষমতার সিংহাসন রক্ষা করবেন, এতো সহজ নয়। নির্বাচনের একটা ঘোষণা দিলেন, আর নির্বাচন হয়ে গেল, এই দিবা স্বপ্ন আর বাস্তবায়িত হবে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই হবে নির্বাচন। এই সব তফসিল-টপসিল বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেবে জনতা। সরকারকে বলি, রাজপথের দিকে তাকিয়ে দেখেন। গোটা দেশ অচল হয়ে গেছে, অবরোধে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ঢাকা। আপনার সমস্ত পোশাকী-অপোষাকী রক্ষী বাহিনী-লেঠেল বাহিনী নামিয়েও কিছুই করতে পারছেন না। কিভাবে পারবেন? বাংলাদেশের জনগণ একদিকে আর আপনি আর আপনার লাঠিয়াল বাহিনী একদিকে, সাথে আছে কিছু পাইক পেয়াদা-নফর-চাপরাশি। তারা জনগণের আন্দোলনে আত্মসমর্পন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঢাকাসহ সারা দেশে ১৯১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
কুড়িগ্রামে বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
হোয়াইট হাউজে বাইডেনের সঙ্গে বুধবার দেখা করবেন ট্রাম্প
দেখা না দিলে বন্ধু, কথা কইয়ো না : হাসনাত আব্দুল্লাহ
তারেক রহমানের পিপিই বিতরণ, বহিস্কৃত শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব সম্পাদক ফিরে পেলেন সদস্যপদ
বাতিল হচ্ছে শেখ পরিবারের নামের সব পুরস্কার
বাতিল হচ্ছে শেখ পরিবারের নামের সব পুরস্কার
ব্রিটিশ রাজা চার্লস ও পুত্র উইলিয়াম সমালোচনার মুখে পড়েছেন!
কোন বয়সে কতটা ঘুমোনো উচিত? আপনাদের বয়স অনুযায়ী মিলিয়ে নিন তালিকা
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার লিভ টু আপিল শুনানি শুরু
আ. লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা
শহীদ নূর হোসেনের প্রতি পরিবারের শ্রদ্ধা
গাজীপুরে বাসের ধাক্কায় প্রাইভেটকারের তিন যাত্রী নিহত
বাতিল হচ্ছে হাওরের উড়ালসড়ক-মেট্রোরেলসহ বহু ‘ইচ্ছাপূরণ’ প্রকল্প
রাশিয়ার সঙ্গে উ.কোরিয়ার প্রতিরক্ষা চুক্তি আইন হিসেবে স্বাক্ষর পুতিনের
ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানজনক বেতন কাঠামো হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের বৈঠক
সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আজ নামছেন বাকি ৩০০ জন শিক্ষার্থী
সাবেক দুই শীর্ষকর্তার জায়গা হচ্ছে না ট্রাম্পের সম্ভাব্য দ্বিতীয় প্রশাসনে
ডিএনএ পরিক্ষায় প্রমাণিত,হাসপাতালের ভুলে হয়েছিল শিশু অদলবদল