জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোটিয়ারদের বক্তব্য পক্ষপাতমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
২২ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের র্যাপোটিয়াররা (এসআর) বাংলাদেশ সরকারের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন তা পক্ষপাতমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের বিশেষ র্যাপোটিয়ারদের (এসআর) বাংলাদেশ সরকারকে হেয় করার উদ্দেশ্যে রয়েছে।
ওএইচসিএইচআর এসআররা মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিতে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিকতা, স্বদিচ্ছা এবং প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেই নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেছে মন্ত্রণালয়।
গত ১৪ নভেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের দেওয়া (ওএইচসিএইচআর) একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এতে বলা হয় ‘জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা মানবাধিকার কাউন্সিলের পর্যালোচনাকে অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি মোকাবিলার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে’।
জানা যায়. ওএইচসিএইচআরের বিষয়বস্তু মূলত দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, শ্রমিক অসন্তোষ, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান ও রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে।
এর প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের তিনজন বিশেষ র্যাপোটিয়ার (এসআর) আইরিন খান, ক্লেমেন্ট নিলেতসোসিভোল ও মেরি লওর বাংলাদেশ সরকারের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বিশেষ র্যাপোটিয়াররা এমন সময়ে এই মন্তব্য করেছেন, যখন বাংলাদেশ সর্বজনীন পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনায় (ইউপিআর) সবেমাত্র আগের দিন, গত ১৩ নভেম্বর অংশ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের এই পর্যালোচনায় সিংহভাগ দেশ বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। অর্থাৎ মনে হচ্ছে জাতিসংঘের বিশেষ দূতরা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে সরকারকে হেয় করার ইচ্ছা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। তাদের একতরফা পর্যবেক্ষণগুলো বিশেষ করে তাদের সঙ্গে সরকারের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রেক্ষাপটে অসৎ উদ্দেশ্যমূলক হিসাবে প্রতীয়মান হয়।
জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোটিয়ারদের আপত্তির জবাবে মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ যেখানে আইনের শাসন বিরাজ করছে। ওএইচসিএইচআরএ উল্লেখিত তিনটি মামলা স্বাধীন বিচার বিভাগের আইন আদালত দ্বারা পরিচালিত হয়, যেখানে সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। বিশেষ করে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলাটি তার মালিকানাধীন একটি কোম্পানির শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার বিষয়ে বিচারাধীন আছে। এটা আশ্চর্যজনক যে সরকার যখন প্রকৃতভাবেই শ্রম ও মানবাধিকার রক্ষা করছে তখন বিশেষ র্যাপোটিয়াররা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলছে।
এখানে সরকার বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে ইউপিআরে করা সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কোনো সময় না দিয়ে এত তাড়াহুড়ো করে এসআরদের দ্বারা এই ধরনের মন্তব্য জারি করার কী প্রয়োজন ছিল। ফলে সরকার এই ধরনের আচার-আচরণকে তাদের নিজ নিজ লক্ষ্যের সাথে সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করে। তাই বাংলাদেশ সরকার আশা করে যে এসআররা আচরণবিধি অনুযায়ী তাদের ম্যান্ডেট পালনে নিরপেক্ষ থাকবে।
র্যাপোটিয়াররা বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের জন্য নিরাপদ এবং অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানানোর ক্ষেত্রে যে জোর আরোপ করেছে ‘সেটি তাদের দায়িত্বের বাইরে চলে গেছে’ বলেও মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, তিনজন বিশেষ র্যাপোটিয়ার একজন (আইরিন খান) বাংলাদেশি এবং সম্প্রতি তিনি অন্যান্য দেশের বিষয়ে নীরব থেকে এক্ষেত্রে সমালোচনামূলক পর্যবেক্ষণে অভূতপূর্ব মাত্রার উৎসাহ দেখিয়েছেন। এটি অত্যন্ত পক্ষপাতমূলক, আংশিক যে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকি আছে।›
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, চলতি বছরের নভেম্বরে জেনেভায় অনুষ্ঠিত ইউপিআরে চৌদ্দটি দেশ অংশ নিয়েছিল। এটি লক্ষণীয় যে বিশেষ র্যাপোটিয়াররা শুধুমাত্র বাংলাদেশ নিয়ে বিবৃতি জারি করেছে। এর মাধ্যমে তারা এসআর হিসেবে তাদের জাতিসংঘের পরিচয়পত্রের অপব্যবহার ও অসম্মান করেছে বলেও মনে করে ঢাকা।
ইউপিআরে পর্যালোচনার পর তাৎক্ষণিকভাবে একই বিষয়গুলোর নেতিবাচক মূল্যায়ন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সুপারিশ এবং পর্যবেক্ষণকেওক্ষুন্ন করেছে বলে উল্লেখ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ সকল প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন থেকে বস্তুনিষ্ঠতা প্রত্যাশা করে। ইউপিআরে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সুপারিশকে গঠনমূলকভাবে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানবাধিকার কমিশনকে অবগত করছে যে, ইউপিআর থেকে আসা বিভিন্ন দেশের সুপারিশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই কাজ করছে বাংলাদেশ। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চাষে বাধা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)
"তালেবান নারীদের মানুষ মনে করে না" : মালালা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার যানজট
মোবাইল ইন্টারনেটে সুখবর ‘শর্ত শিথিল’, থাকছে ১ ঘণ্টার প্যাকেজও
গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্ত মাঝে ইউএনও'র কম্বল বিতরন
বরিশালে ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে
সেবা বঞ্চিত হলে অভিযোগ করা যাবে ইসির বিরুদ্ধে
এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নবনিযুক্ত সচিব ছাগলনাইয়ার সন্তান সামছু উদ্দিন
বাংলাদেশে শনাক্ত হলো 'রিওভাইরাস’, রোগটি সম্পর্কে যা জানা যায়
আন্দোলনের মুখে পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি
মাসের শেষে আবারো আসছে শৈত্যপ্রবাহ
বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে পুরস্কার পেলেন, আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক মুগনিউর রহমান মনি
রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
বেড়া কৈটোলা নির্মাণ বিভাগের অফিসিয়াল ও উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাইডেন-নেতানিয়াহুর ফোনালাপ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা
না ফেরার দেশে নির্মাতা রায়হান রাফির বাবা
এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২
ছাগলনাইয়ায় খালে ভাসছিল নারীর অর্ধগলিত লাশ