খুলনা নোনা ভূমিতে মিঠা ফল, লাভবান কৃষক
২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম
খুলনা জেলার দক্ষিণে কয়রা উপজেলা। সেখানে এক সময় নোনা পানিতে তলিয়ে থাকতো। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় সকল গাছপালা মরে যায়। সে সময় এ উপজেলা মরুভূমিতে পরিণত হয়। আর জোয়ারের সময় কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া এবং কয়রা নদীর নোনা পানির সাথে মিলে হতো একাকার। তখন কোনটা বিল, কোন রাস্তা এবং কোনটা বাড়ির উঠান কিছুই বোঝা যেত না। এখন নোনা পানির সেই ভূমিতে সোনা ফলছে। উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের উলা গ্রামের মো. মোসাররফ হোসেন গাজী তেমনই এক উদাহরণ। প্রলঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আইলার পর থেকে তিনি তার তিন বিঘা জমিতে বাগদার পোনার নার্সারী করতেন। এ ব্যবসায় তিনি কোন বছরে লাভবান হতেন আবার কোন বছর লোকসানের মুখে পড়তেন। বছরজুড়ে তিনি থাকতেন দুশ্চিন্তা আর পাওনা টাকা আদায়ের তাগিদে। চলতি বছরের আষাঢ় মাস হতে তিনি ওই নার্সারীতে মিষ্টি (স্বাদু) পানির মাছের ঘের শুরু করেন। একইসাথে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শে ঘেরের আইলে সবজি চাষাবাদ করেন। পরে ঘেরে আইলে অসময়ের তরমুজের বীজ বপন করেন। ক’দিন বাদে সেই বীজ থেকে তাজা গাছের উকি দিতে দেখে আগ্রহ বাড়ে মোসারফের। পরিচর্যা শুরু করেন এবং অন্য শাক ও বিভিন্ন ধরণের সবজির চাষাবাদও করেন। ঘেরের আইলের পাশ দিয়ে পানির ওপরে করে বাঁশ, কুঞ্চি এবং নেট দিয়ে মাচা করে দেন। মাস দেড়েক পর সেই মাচা ভরে যায় সবুজ গাছে আর ফুলে। আর ক’দিন বাদে তরমুজ ঝুলে পড়ে মাচার নিচে। তখন নেটের ব্যাগ দিয়ে প্রতিটি তরমুজ বেধে দেন তিনি।
অন্যদিকে পানিতে তখন নাইলোটিকা, রুই, কাতলার লাফালাফি শুরু হয়। মন ভরে যায় কৃষকের। আশপাশের এলাকার মানুষরা দেখতে আসে, নোনা ভূমিতে মিষ্টি তরমুজ আর স্বাদু পানির মাছ দেখতে। কয়েকদিন আগে ওই গাছ থেকে ৯৭ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেন তিনি। আরও কিছু বিক্রির আসা করছেন তিনি। একইসাথে ঘেরের মাছ বিক্রি হয়েছে লক্ষাধিক টাকার। আরো দেড় লাখ টাকার মাছ বিক্রির আসা করছেন তিনি।
কৃষক মো. মোসাররফ হোসেন গাজী জানান, একসময় আমি বাগদা মাছের নার্সারী করতাম। লাভ হবে কিনা। ভেড়ি বাঁধ ভাঙ্গলো কিনা। বাকী টাকা উদ্ধার হবে কিনা। এমন অনেক টেনশন হতো। আষাঢ় মাস থেকে একটা বড় ঝুঁকি নেই। আমার মোড় ঘুরে গেছে। কোন টেনশন নেই। ঘরে বসে, ঘুরে ফিরে আমার ইনকাম বেড়েছে। আমাকে দেখে এখন এলাকার অনেকেই এভাবে স্বাদু পানির মাছ, সবজি চাষাবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কয়রার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন জানান, কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের উলা গ্রামের মো. মোসাররফ হোসেন গাজীসহ স্থানীয় অনেকেই নোনা পানির ঘের করতো। আমাদের পরামর্শে এখন তারা স্বাদু পানির ঘের করছে। একইসাথে ঘেরের আইলে বিভিন্ন ধরনের শাক, সবজির চাষাবাদ করছে। তারা নিজেরা লাভবান হচ্ছে। অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছে। স্থানীয় অনেক ঘের মালিক তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছে মিঠা পানির মাছ চাষাবাদ এবং সবজির আবাদ করার জন্য। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা রয়েছে আমরা করছি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়
কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার
মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল
‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের
সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই
নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন
গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন
চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ
সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে
নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন
ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন