নেতাকর্মীদের দুর্জয় সাহস নিয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান
২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
৭ম দফায় দেশব্যাপী শুরু হওয়া ৪৮ ঘন্টার অবরোধে নেতাকর্মীদের দুর্জয় সাহস নিয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, রোববার থেকে শুরু হবে আবারও নিরবিচ্ছিন্ন ৪৮ ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচি। গণতন্ত্র ফেরানো, আজকে অন্যায়ভাবে গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলা মানুষজনকে কারাবন্দি করা এবং তাদের মুক্ত করার যে কর্মসূচি, জনগণের মালিকানা ফেরত দেয়ার যে কর্মসূচি সেটা হচ্ছে এই অবরোধ কর্মসূচি। শান্তিপূর্ণ এই অবরোধ কর্মসূচিতে গণতন্ত্রমনা মানুষ, সাধারণ জনগণ এবং দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা তারা দুর্জয় সাহস নিয়ে রাজপথে এগিয়ে যাবে এই প্রত্যয়, এই আশাবাদ আমি ব্যক্ত করছি। এই আন্দোলনে আপনি আমি-আমরা একা নই। আমাদের সকলের অংশগ্রহনে এক দফার আন্দোলন আরও বিস্তৃত, বেগবান ও তেজোদীপ্ত হবে। মনে রাখবেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিও আর বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন দেখতে চায়না, এদের পতন হবেই। গতকাল শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তির এক দফা দাবি এবং একতরফা তফসিল বাতিলের দাবিতে আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ৭ম দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
সরকার নির্বাচনের নামে সিলেকশনে নেমেছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় নির্বাচন জনগণ তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভার পরবর্তী মেয়াদের জন্য কাদের হাতে অর্পণ করতে চায় তা সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের আলোকে নির্ধারণ করে দেয়। সেই নির্বাচনকে এখন হাসি-তামাশা, বাণিজ্য ও প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের কাছ থেকে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আর জনপ্রতিনিধিত্ব এখন শেখ হাসিনার দান-দক্ষিণা, খয়রাত, বিলি-বন্টন, ভাগ-বাটোয়ারা, উপহার-করুণায় পরিণত হয়েছে। ২০১৪ বিনা ভোটে অটোপাসের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোট ডাকাতির পর এবার এবার আরেকটা ভাওতাবাজি নির্বাচন হবে সেখানেও ওই আরেকটা সিলেকশন করা থাকবে আগে যেটা প্রধানমন্ত্রীর বাসায় বা তার দফতরে সেটাও শুধু নির্বাচন কমিশন পাঠ করবে। ৭ জানুয়ারি ভোটের নামে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করা হবে অত্যন্ত নিখুঁত ধুর্ততায়, জনগণের চোখে ধুলো দিয়ে। ইলেকশনের দিন রাত্রে পাঠ করা হবে গণভবনের তালিকা।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে টার্গেট করে করে অর্থ এবং এমপি বানানোর প্রলোভনে কিংসপার্টি-ভূইঁফোড় পার্টিতে রাজনৈতিক নেতাদের ঢুকানো হচ্ছে। তবে কোন নীতিবান, আদর্শবাদী, দেশপ্রেমী রাজনীতিককে তারা নিতে পারছে না। কতিপয় ডিগবাজিমার্কা-ভ্রস্টচারী রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নির্বাচনী রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা বানাতে কব্জা করেছে। টাকার বিনিময়ে খরিদ হওয়া এইসব রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কেউ কেউ এখনই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন। কারণ তারা টাকা ও ক্ষমতার মুলোর লোভে পড়ে ডিগবাজি দেয়ার পর এখন বুঝতে পারছেন তাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে না। পাতানো খেলার সাজানো নির্বাচনে ‘হার হাইনেস’ যাকে যাকে চাইবেন, তারাই হবেন এমপি, তারাই হবেন ক্ষমতাশালী, অন্য কেউ না।
রিজভী বলেন, নির্বাচন এলে যে আনন্দ-উসবের জোয়ার নামে জনপদগুলোতে এখন তার পরিবর্তে সারাদেশে ভয়ার্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। যারা আওয়ামী লীগ করে তারা ছাড়া গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষ, বহু গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। মনোনয়ন নিয়ে ইতোমধ্যে খুনোখুনি শুরু করেছে তারা (আওয়ামী লীগ)। নির্বাচনকে সরকার উৎসবের বদলে ভয়, আতংক ও শোকে পরিণত করেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে নেতাদের বাড়ী বাড়ী হানা দিচ্ছে রাতের বাহিনী। এইভাবে জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনের পথে হাটছে মাফিয়াচক্র। তবে তুমুল আন্দোলনে-জনজোয়ারে এই নির্বাচনী নাটক ভন্ডুল হয়ে যাবে।
রিজভী বলেন, প্রতারক মাফিয়া সরকার একদিকে বলছে নির্বাচনে আসুন, অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীসহ আন্দোলনে সক্রিয় ও সাহসী নেতাদের টার্গেট করে বেছে বেছে তাদেরই কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। পুরনো মামলায় সাজা দেওয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে।নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে দুই বছরের নীচে কারোর সাজা হচ্ছে না। কারন দুই বছরের সাজা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রতিবন্ধক। এসব কারাদণ্ড প্রদান করা হচ্ছে ‘আজব আদালত’ থেকে যেখানে মৃত নেতা, গুম হওয়া নেতাদেরও রেহাই নেই। মৃতদেরও সাজা দিচ্ছেন শেখ হাসিনার পুতুল আদালত। গত দেড় মাসে বিএনপির ৫৮২ জন নেতাকর্মীকে প্রহসনের বিচারে দণ্ডিত ঘোষণা করা হয়েছেন। আসামিদের অনুপস্থিতিতে চার্জ গঠন ও কারাগারে বন্দি অবস্থায় আসামিকে সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শোনার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে সাজা ঘোষণা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টার সারাদেশে ৩২৫ গ্রেফতার এবং ১৩টি মামলায় ১ হাজার ৪৩৫জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত সারাদেশে ৪ হাজার ২‘শ অধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার এবং ১৩৮টি মামলায় ১৬ হাজার ১২৫জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়েছে।#
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নালিতাবাড়ী সীমান্তবর্তী উপজলায় জন সচেতনতামূলক সভা ও গণসংযাগ
দুমকিতে নিষিদ্ধ পলিথিনসহ আটক ১
দাবানলে সব ঘরবাড়ি পুড়লেও অলৌকিকভাবে অক্ষত একটি বাড়ি!
নিজ দলের দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের গ্রেফতার করার দাবি আওয়ামীলীগ নেতার
রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে দাউদকান্দিতে ধানের চারা রোপন কর্মসূচি
ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের মতবিনিময় সভায় চরমোনাই পীর
ধামরাইয়ে যুবকের লাশ উদ্ধার
ফেনীতে বন্যায় ব্রিজ ভেঙে খালে ৪ মাসেও সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ চরমে
সউদী আরব ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও বিক্রির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে
মুজিবনগর সেচ প্রকল্পে দুদকের অভিযান ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ
শীত আসতেই রাজনগরে শুরু হয়েছে নাচ-গান আর জুয়ার আসর
বিজিবি দিনাজপুর সেক্টরের উদ্যোগে শীতার্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ
বুড়িচংয়ে কাকদী নদীর পাড় কাটায় বাধঁ ভাঙ্গার আশঙ্কা বিরাজমান
বীজ সরবরাহে প্রতারণা উপরে সুন্দর গাছে আলু ফলন নেই
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন বাবর
ভারতের মহাকুম্ভ মেলায় পবিত্র নদীতে স্নানের মহোৎসব , আধ্যাত্মিকতার মহাযজ্ঞ
কলাপাড়ায় বিএনপি'র দপ্তর সম্পাদকের বাসায় চুরি
কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলায় মানুষের ঢল
রাজউক উত্তরা জোনাল অফিস স্থানান্তর আদেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন
নিষিদ্ধ সংগঠন সহ-সভাপতি সজল ১ দিনের রিমান্ডে