বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত : রিজভী
২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:২২ এএম | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:২২ এএম
একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সমর্থন দিয়ে ভারত বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ভারত সরকার ও তাদের দেশের রাজনীতিবিদদের বোঝা উচিত, বাংলাদেশের জনগণ কেন তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। এর কারণ হচ্ছে তারা (ভারত) একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানীর বনানী এলাকায় অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং শেষে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সপ্তম দফায় অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা জেলা আয়োজিত বিএনপি নেতা-কর্মীদের একটি মিছিল শেষ হয় কাকলী এলাকায়। এ সময় মিছিলে অংশ নেওয়া দলটির নেতা-কর্মীরা কিছুক্ষণ রাস্তায় অবস্থান নিয়েও বিক্ষোভ করেন। সেখানেই বক্তব্য দেন রুহুল কবির। এ মিছিল ও সমাবেশে বিএনপির অন্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, মীর নেওয়াজ আলী পারভেজ রেজা, খন্দকার আবুল কালাম প্রমুখ।
ভারতের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা মূলত সমালোচনা করেন বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের অবস্থানের।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের (ভারত) উচিত বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, সেটিকে সমর্থন দেওয়া। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গুলিতে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর ঘটনা, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ভারসাম্য না থাকাসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
রুহুল কবির বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত এখন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। প্রায় প্রতিদিন বিএসএফ সেখানে বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করছে। বাণিজ্যে ভারসাম্য না থাকার বিষয় উল্লেখ করে রুহুল কবির বলেন, তারা (ভারত) বাংলাদেশে একতরফা বাণিজ্য করলেও বাংলাদেশকে কোনো ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে তারা নানা উপায়ে হাজারো কোটি টাকা রেমিট্যান্স নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার তাদের সবকিছু উজাড় করে দিলেও প্রাপ্তির খাতা শুধুই শূন্য।
বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে ৯০ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের বৈঠককে বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরাষ্ট্রসচিব দিল্লিতে ৯০ টি দেশের কূটনৈতিকদের সাথে বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশে কি সেই সমস্ত দেশের দূতাবাসগুলো নেই? দিল্লিতে গিয়ে বৈঠক করতে হলো কেন? ভারতই কেনো বা আয়োজন করে দিল? ভারত যদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে থাকে তাহলেতো তাদের বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে থাকার কথা ছিল। আজকেতো ইউরোপ আমেরিকা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে স্বোচ্চার। যে সরকারের একদলীয় দুঃশাসনে দেশের সাধারণ মানুষ সবাই পিষ্ট সেই সরকারের পক্ষে কাজ করানোর জন্য দিল্লিতে ৯০ টি দেশের কূটনৈতিকদের বৈঠক আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। আমি বিস্মিত হয়েছি।
রিজভী বলেন, দেশ এক ক্লান্তিকাল অতিক্রম করছে। এক দুর্বিসহ দুর্ভিক্ষদের কাছে আটকে আছে দেশের জনগণ। রাষ্ট্র ক্ষমতাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যা ইচ্ছে তাই করছে রাষ্ট্র শক্তিকে ব্যবহার করে। সেই রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যারা কথা বলছে তাদেরকে এলিমেন্ট করছে। সেটা অনেক আগে থেকেই তিনি করে আসছেন এবার তিনি পুরোদমে করছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী থেমে নেই। রাষ্ট্রের প্রশাসন ও তার গড়ে তোলা ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ৭১ এর সেই ভয়াল রাত্রির পরিস্থিতি বর্তমান বাংলাদেশের তৈরি করেছে। বর্তমান প্রজন্ম ৭১ সালের সেই ভয়ালরাত্রি দেখেনি কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তারা বুঝতে পারছে তখন কি হয়েছিল। একাত্তরের মতো গ্রামগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দেখিয়ে দিচ্ছে কোনটা বিএনপির বাড়ি। বিএনপি নেতাকর্মী কোথায় বসবাস করে তাদের পরিবার কোথায় বসবাস করে। ঠিক ৭১ সালে একই ঘটনা ঘটিয়েছে শান্তি কমিটি আলবদররা তারা পাকিস্তানী বাহিনীকে দেখিয়ে দিয়েছে এই বাড়ির মানুষ স্বাধীনতাকামী। এই বাড়ির মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে জড়িত তখন বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা যারা থাকতেন তাদেরকে পাকিস্তানীরা নিয়ে গিয়ে জুলুম নির্যাতন করত। এখন দেশের পরিস্থিতি ঠিক ঐ রকমই হয়েছে। ৭১ এর যেন পুনরাবৃত্তি হয়েছে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের মধ্যে।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগুন সন্ত্রাসীকে ছাড় দেয়া হবে না। ছাড়তো ইতোমধ্যে আপনি দিয়েছেন আসল অপরাধীকে। এখন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে ধরবেন নির্যাতন করে অন্য নেতাদের নাম বলাবেন। গত ১৫ বছর যাবত এই কাজগুলোইতো করেছে প্রধানমন্ত্রীর সাজানো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রী মনে করেছে তিনি যা বলেন অবলীলায় দেশের জনগণ তা বিশ্বাস করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীররা যা বলেন মানুষ তার উল্টোটা ভাবেন। দেশের জনগণ মনে করেন প্রধানমন্ত্রীসহ তার মন্ত্রীরা অনর্গল মিথ্যা কথা বলে যায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা বাসায় থাকতে পারে না। অধিকাংশ নেতাকর্মী জেলে। বাকি যারা আছে তারা নিজ বাসায় থাকতে পারে না, কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকতে হয় বা পরিচিত মানুষের বাসায় থাকতে হয়। গ্রামগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজ বাসায় থাকতে পারে না, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকতে পারে না। যার কারণে ধান ক্ষেতে মশারী টাঙিয়ে থাকতে হয়, বাস ঝারে কোনরকমভাবে থাকতে হয় পুলিশের নির্যাতনের হাত থেকে বাচার জন্য। এক বীভৎস পৈচাশিক অভিযান চলছে সারা দেশে।
দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা মামলার বিবরণ তুলে ধরে রিজভী বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেফতার ৪১০ জনের অধিক নেতাকর্মী।মোট মামলা ১৫ টি, মোট আসামী ১৭০৫ জনের অধিক নেতাকর্মী।#
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য
পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
কারাগারে এস কে সুর
‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’
ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে
অভি খালাস! তাহলে খুনী কে?
জল্পনা উড়াল চীনা সংস্থা টিকটক কিনছেন না মাস্ক
ধামরাইয়ে খাদ্যদ্রব্য তৈরির কারখানায় ফের আবার ডাকাতির চেষ্টা
রাজউক জোনাল অফিস স্থানান্তর আদেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দ্বিতীয় দিনের মতো অনশনে অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা
বন্ধ বেক্সিমকো খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
আধুনিক ডেটা ওয়্যারহাউজ স্থাপন করবে বিবিএস
পরিবারসহ জ্যাকব ও ছেলেসহ সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানির নতুন তারিখ
সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনের বিষয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান ইউজিসি’র
চুক্তিতে নিয়োগের দৌড়ে নওফেলের জালাল উদ্দিন চৌধুরী
পুলিশের চাকরি হারিয়ে ছিনতাইয়ে নামেন হাকিম
ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি
সাকরাইনে মেতেছে পুরান ঢাকা