২৮ অক্টোবরের পর ৮৩৭ মামলা আসামি ৭৩১২৩ বিরোধী নেতাকর্মী
৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম
২৮ অক্টোবর মহাসামবেশের পর বিভিন্ন মামলায় বিরোধী দলের ৭৩ হাজার ১২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। হয়রানিমূলক নতুন করে গায়েবী মামলা দেয়া হয়েছে ৮শ’ ৩৭টি। এসব মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ২০ হাজার ৩২৬ জনকে। এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
গতকাল বুধবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আহূত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। সুপ্রিম কোর্ট বারের দক্ষিণ হলে এ সংবাদ সম্মেলনের আযোজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে পর এ পর্যন্ত ৮৩৭ এর বেশি হয়রানিমুলক গায়েবি মামলায় ২০,৩২৬ জন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ৭৩,১২৩ জন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীকে। আহত হয়েছেন ৮২৪৯ জনের অধিক নেতাকর্মী। গত ৩ তিন মাসে ৩৫টি মামলায় ৬৩৬ জন নেতা কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দেড় লাখেরও বেশি মামলায় বিএনপি ও বিএনপির সহযোগী গণসংগঠনসমূহের ৫০ লাখের বেশী নেতাকর্মী- সমর্থকদের আসামি করা হয়েছে। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আইনজীবীসহ সকল নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, রূহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আব্দুল জব্বার ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, মো: আক্তারুজ্জামান, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, আবদুল্লাহ আল মাহবুব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বিরোধী দল তথা জনগণের ন্যায্য আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতা কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে। সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছেনা। তারা হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা গায়েবি মামলাকে বিরোধী দল দমনের প্রধান অবলম্বনে পরিণত করেছে। এ কাজে তারা রাষ্ট্রের পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে। সরকার ও সরকারি দল বিচার বিভাগকে তাদের অপতৎপরতার প্রধান বাহনে পরিণত করেছে। বিরোধী দলসমূহের নেতা কর্মীদের বিচারিক হয়রানি এবং উপযুক্ত তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে তড়িঘড়ি করে সাজা প্রদান সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশের চলমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী এবং সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে বর্তমান একনায়ক তান্ত্রিক স্বৈরশাসক কর্তৃক হয়রানি, গুম, খুন, মামলা, গ্রেফতার ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত কারাদণ্ডের শিকার হতে হচ্ছে। এমনকি সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও হয়রানি থেকে মুক্তি পাচ্ছে না দেশের আইনজীবী সমাজও। আইনজীবীদেরকে নজিরবিহীনভাবে আদালত প্রাঙ্গণ ও চেম্বার থেকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিষ্টার শাজাহান ওমর, পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাসুদুর রহমান, এডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, এডভোকেট মাহমুদ হাসান মিলন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট সাইফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট মোঃ জাকির হোসেন, এডভোকেট আবু আল ইউসুফ টিপু ও এডভোকেট আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট আনোয়ার হোসেন, এডভোকেট দিদারুল আলম ও এডভোকেট লোকমান শাহ বর্তমানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়রানিমূলক জিঘাংসার শিকার হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন। সরকারের এই নিপীড়ন চিত্রই প্রমাণ করে দেশে আজ কতটা ভয়াবহ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও বিরোধী মতকে নির্মূলের চেষ্টা চলছে।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল অভিযোগ করে বলেন, জামিন প্রাপ্তির সকল বৈধ কারণ থাকলেও আইনজীবীসহ কারাবন্দী রাজনৈতিক কর্মীদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। রাজনৈতিক হয়রানি মূলক মামলায় ইতোপূর্বে আগাম জামিন প্রদান করা হলেও বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অধিকাংশ ফৌজদারী আদালতসমূহ আগাম জামিনের দরখাস্ত শুনানি করতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। ফলে রাজনৈতিক হয়রানির মাত্রা বেড়েই চলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, আমরা আইনজীবী সমাজ বর্তমান গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান সংগ্রামে অংশ নেয়া বিরোধী দল, বিরোধী মত ও বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর সরকারের জঘন্যতম ও নজিরবিহীন নিপীড়ন বন্ধ করে গ্রেফতারকৃত সকল আইনজীবীর মুক্তি দাবি করছি। আইনজীবী সমাজের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমরা চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু মাহমুদ সহ সকল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি ও সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে মামলা
আজ ছোট পর্দায় মুক্তি পাবে নাটক 'হোয়াট এ বৌ'
পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবি সরিয়ে ফেললেন ভারতের সেনাপ্রধান
বরিশাল ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড অ্যলায়েড সায়েন্সেস চিকিৎসা সেবায় ব্যাপক অবদান রাখছে
হাসিনাকে নিয়ে ‘সম্ভাব্য ঝুঁকি’তে সচেতন ছিলেন না টিউলিপ এটি ‘দুঃখজনক’ : লরি ম্যাগনাস
শেখ পরিবার একটি চোরের কারখানা’
অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা মামুন
জিমি কার্টারের প্রতি ৩০ দিনের শোকাবস্থা উপেক্ষা করে ট্রাম্পের পতাকা উত্তোলন
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা-তারেকসহ সব আসামি খালাস
টিউলিপের জায়গায় নিয়োগ পেলেন এমা রেনল্ডস
পদত্যাগপত্রে টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন
টিউলিপের পদত্যাগ ইস্যুতে প্রেস উইংয়ের বিবৃতি
আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে কায়রো, ঢাকার অবস্থান ৬ নম্বরে
মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে লাশ হলো "মা"!
মীরসরাইয়ে মুন্না খুনের ঘটনায়, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার
আজ সারদায় ৪৮০ এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৩ জন ফিলিস্তিনি, মানবিক সংকট চরমে
ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার
সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন রিসোর্ট পুড়ে ছাই