ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১

বিভিন্ন রণক্ষেত্রে পিছু হটে হানাদার বাহিনী

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম

১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর। এ দিন বাংলাদেশের সব রণক্ষেত্রে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অব্যাহত অগ্রযাত্রা হানাদার পাকিস্তানী সেনাবাহিনী সর্বত্র পিছু হটতে বাধ্য হয়। বিভিন্ন রণক্ষেত্রে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ঘাটিগুলোতে আক্রমন করে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী। সীমান্ত শহর দর্শনা সম্মিলিত বাহিনীর দখলে চলে আসে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে এ দিন ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক রাজনীতি অঙ্গনে এ দিনটি বাংলাদেশের জন্য ছিল অস্থিরতা আর উদ্বেগের। পাকিস্তানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সিনিয়র জর্জ বুশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দাবি করে, ‘এই মুহুর্তে ভারত ও পাকিস্তান নিজ নিজ সীমান্তের ভেতর সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে।’ এমন অস্থিরতা ও উৎকণ্ঠাময় অবস্থায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ লিখিতপত্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।

এ দিন মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ তীব্র আক্রমণের মুখে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পালানোর পথ খুঁজতে থাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ৪ ডিসেম্বর রাতে আখাউড়াতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহনীর প্রচণ্ড গোলা বিনিময় হয়, যাকে সামরিক পরিভাষায় বলা হয় ‘এক্সেঞ্জ অব স্মল আর্মস ফায়ার’। যৌথ বাহিনীর প্রচণ্ড চাপের মুখে শালচূড়া ক্যাম্পের পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটে। আহমদনগর হেডকোয়ার্টারের সেনাদের সঙ্গে নিয়ে ৩ ডিসেম্বর রাতেই ক্যাম্প গুটিয়ে শেরপুরে আশ্রয় নেয়। রাতের আঁধারে বিনা যুদ্ধে ঝিনাইগাতী শক্রমুক্ত হয়।

এ দিনে (৪ ডিসেম্বর) ১১ নম্বর সেক্টরে জামালপুরের বকশীগঞ্জের ধানুয়া কামালপুর মুক্ত হয়। কামালপুর সীমান্তঘাঁটির প্রতিরক্ষা অবস্থানে নিয়োজিত পাকিস্তানি সেনারা এদিন যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। ৩ ডিসেম্বর কামালপুর সীমান্ত ঘাঁটিতে অবরুদ্ধ পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। বকশীগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা বশীর আহমদ (স্বাধীনতার পর বীর প্রতীক) সে চিঠি নিয়ে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে যান। চিঠি পেয়ে ক্যাম্পের অধিনায়ক আহসান মালিক অগ্নিমূর্তি ধারণ করে। বশীরের ফিরতে দেরি হওয়ায় আরেকটি চিঠি দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সঞ্জুকে পাঠানো হয়। অবশেষে বালুচ, পাঠান, পাঞ্জাবিসহ ১৬২ জন সেনার একটি দল ৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। ধানুয়া কামালপুর শত্রুমুক্ত হয়।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভিনিসিউস-এমবাপ্পে ঝলকে রিয়ালের বড় জয়

ভিনিসিউস-এমবাপ্পে ঝলকে রিয়ালের বড় জয়

ফের বিবর্ণ ইউনাইটেড হারাল পয়েন্ট

ফের বিবর্ণ ইউনাইটেড হারাল পয়েন্ট

দিয়াজের জোড়া গোলে চূড়ায় অলরেডসরা

দিয়াজের জোড়া গোলে চূড়ায় অলরেডসরা

এবার বুন্দেসলীগায়ও বায়ার্নের গোল উৎসব

এবার বুন্দেসলীগায়ও বায়ার্নের গোল উৎসব

দিয়াজের জোড়া গোলে চূড়ায় অলরেডসরা

দিয়াজের জোড়া গোলে চূড়ায় অলরেডসরা

দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও অজিদের অনায়স জয়

দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও অজিদের অনায়স জয়

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান