সংবিধান ও নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের রুটিন ওয়ার্ক করার কথা। আর মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা করবেন সরকারি দপ্তরের প্রত্যাহিক কাজ। কিন্তু সকলকে অবাক করে দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘অফিসিয়ালি’ বৈঠক করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনের নৌকার প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং রাজশাহী-৬ আসনে পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম নির্বাচনী প্রচারণায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু তাই নয় নির্বাচনী প্রচারণায় তারা ‘অফিসিয়িালি’ কাজ করবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র রফিকুল আলম। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণসংযোগ বিভাগ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নির্বাচনী প্রচার করা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কথা তিনি জানান।

গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় বলা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণসংযোগ বিভাগ বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচনে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে জবাবে মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি বিভাগের পরিচালক রফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনের অনুমতির বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। মন্ত্রণালয়ের গণসংযোগ বিভাগ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রী- প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনি কর্মকাণ্ড নিয়মিত সাংবাদিকদের প্রচারের উদ্দেশ্যে দেওয়া হচ্ছে। এটা ভোটের দিন পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া হবে।

মন্ত্রণালয়ের এমন কার্যক্রমে নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘিত হয় কি না এসব প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিকরা। একইসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়েও প্রশ্ন উঠে। তবে সন্তোষজনক উত্তর দেননি মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র। রফিকুল আলম বলেন, এসব বিষয়ে বিস্তারিত জেনে পরে জানানো হবে। আমি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কথা জানালান।
সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল আলম বলেন, লিবিয়ায় গিয়ে আটকে পড়া ২৬৩ বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে ফেরত আনা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৫ ডিসেম্বর ঢাকা পৌঁছাবেন তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় এবং আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ত্রিপোলির আইনজেরা ডিটেনশন সেন্টারে আটক থাকা ১৪৩ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি নাগরিককে গত ২৮ নভেম্বর এবং ১১০ জনকে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। তারা ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে তাদের অভ্যর্থনা জানান। এসময় আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে পকেট মানি হিসেবে ৫ হাজার ৮৯৬ টাকা এবং কিছু খাদ্য সমগ্রী উপহার দেওয়া হয়।