সদরপুরের ভুক্তভোগীদের আর্তচিৎকার শোনার কেউ নেই?
১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
টাকা দিয়েও বিদেশ যেতে পারেনি আবার অনেকে বিদেশ গেছেন ঠিকি কিন্তু আকামা না পাওয়ার কারণে জেল খেটে আবার সদরপুরের খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন এমন বহুজনের সন্ধানও মিললো। এরকম ভুক্তভোগীদের আত্মচিৎকার শোনার মতো এখন কেউ। বিদেশ গিয়ে অল্পদিনে বহু টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া মানুষগুলো দেনার দায় এখন পথের ফকির হয়ে পাগলের মত ঘুরছে পথে পথে। কোথাও কোনো কাজ তো পায়ই না। আবার কোথাও কোনো কাজ পেলেও দেনার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় দুশ্চিন্তায় শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে অনেকে। ভুক্তভোগীদের এখন কেউ ২০ কেজি চালও বাকি দিতে সাহস পায় না। একদিকে পাওনাদারদের নানান ধরনের কথা এবং দ্রুত দেনা পরিশোধ করতে এলাকাভিত্তিক চাপও কম নয়। সামাজিক এবং আইনের জটিলতাও আছে অনেক। পাশাপাশি স্ত্রী কন্যাসহ স্বজনরা পড়ছে মহাযন্ত্রণায়। এমনই একটি পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে পরিবারের সকলেরই একসাথে গলায় ধরি দিয়ে আত্মহত্যা করার উপক্রম হয়ে পড়ছে ভুক্তভোগীদের অনেকের। ঠিক এমনটা বললেন সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিজ গ্রামের বাসিন্দা মো. তৈয়ব আলী ফকির পিতা. মো. মোজাহার ফকির।
তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, ভাইজানরা ৫ বছর ইরাকে ছিলাম কিছু করতে পারিনি। সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে তিনি ইনকিলাবের এই প্রতিবেদককে জানান, বড় আশা করে আমার এলাকার মো. জসীমউদ্দিন ফকির এবং তার ভাই জহুরুল ফকিরকে ৪ লাখ টাকা দিয়ে ইরাকে যাই। সেখানে গিয়ে প্রথমে কাজ নাই। আকামা করার পরে বাহিরে গিয়ে কাজ করতে পারিনি। আকামা না হওয়ার কারণে ইরাকের পুলিশ খুব জালতন করতো। সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করতে হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৈয়ব আলীর সাথে ইরাকে যাওয়া অপর এক যুবক ইনকিলাবকে বলেন, আমিও জহুরুল ফকিরের মাধ্যমে ইরাকে গেছিলাম আকাম পাইনি তাই লুকিয়ে লুকিয়ে চোরের মতো কাজ করতে হয়েছে। এভাবে চললে যে কোনো সময় বিপদ হতে পারে সেই ভয়ে মহিলা মানুষের মতো লুকিয়ে কাজ করতে হতো। এরপর কাজ পেলাম। কোনো রকম এখন মাসের বেতনের টাকা বাড়ি পাঠানোর চিন্তা করলাম সেখানে গন্ডগোল। কাজ করি আমি বেতন হাতে নিয়ে নিজ হাতে বাবা-মা-বউ বাচ্চাদের কাছে টাকা পাঠাবো আমি তা পারিনি। কারণ যার মাধ্যমে ওখানে গেছি তিনিই মুল মালিকের কাছ থেকে মাসের বেতন নেন এবং তিনি আমার মাসের টাকা বাড়ি পাঠান। শেষ পর্যন্ত আমি ইরাকের পুলিশের হাতে ধরা পড়ি প্রায় ৭ থেকে ৮ মাস জেলও খাটি। শেষ পর্যন্ত জহুরুল আমার কোন ক্ষতি পুরণও দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, জহুরুলের আপন ভাই জসিমউদ্দীন ফকির তিনিও বিদেশে আগে লোক পাঠাতেন এখনও পাঠায়। সহজভাবে কাউকে পাঠাতে পারলে কোনো জামেলা হয় না। কেউ জানেও না। ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়া যখন পাঠাতে পারে না তখনই গ্রামের লোক জেনে যায়।
এই বিষয় ইনকিলাবের সাথে কথা কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. জসিমউদ্দীনের সাথে তিনি বললেন, আমি এখনও ইরাকে লোক পাঠাই। তবে ভিসা পাইলেই পাঠাতে পারবো। এই দুই প্রতিবেদক তাকে প্রশ্ন করেন ভাই ইরাক যেতে কত টাকা লাগবে? তিনি খুব আরাম আয়েশে বললেন মাত্র ৫ লাখ টাকা। কতদিনে পাঠাতে পারবেন? তিনি বললেন কাগজপাতি সব ঠিকঠাক করারসহ ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে পাঠানো যাবে। তাকে প্রশ্ন করা হলো, আপনি বিদেশে ছিলেন কত বছর? বললেন, মোট ১০ থেকে ১১ বছর হবে। প্রথমে সাইপ্রাসে ৬ থেকে ৭ বছর। এরপর ইরাকে ছিলাম ৩ থেকে ৪ বছর। আপনি কোন কোন দেশে লোক পাঠাতে পারেন? বললেন শুধু ইরাকেই। প্রশ্ন করা হলো আপনার আরেক ভাই বিদেশ থাকেন তার নাম কি? নাম মো. জহুরুল ফকির কোথায় থাকেন? একটু রেগেই বললেন, তা আমি জানি না। ওর সাথে আমার ভেজাল চলছে। আপনার ভাই কি এখনও লোক পাঠায়? কোন দেশে পাঠায়? প্রশ্ন করা হলো আপনি জেলে ছিলেন কেন? কতদিন ছিলেন? আদম মামলা করছিলো কে? তার বাড়ী কোথায়? তিনি রেগে বললেন এটা আমার কোন বিষয় না, জহুরুল একটা সমস্যা করছিলো সে বিষয় একটা মামলা হয়। আমার কোন সমস্যা হয়নি। সমস্যা ভাইর এই বিষয় আমারে প্রশ্ন করবেন না। পরের জামেলা কাঁধে নিবো না।
এই বিষয় ইনকিলাবের সাথে কথা হয় ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার দেলো তালুকদারের সাথে তিনি ইনকিলাবকে বললেন, ওরা দুই ভাই ইরাকে থাকতো জসিম উদ্দিন ভাল ওর ভাইয়ের সাথে বহু লোকের জামেলা হইছে আমি জানি। জহুরুল এখন জাপান আছে আমি শুনেছি। অপরদিকে, দুই দালালকে খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসলো মানব পাচারকারী ৭০ সিন্ডিকেটের গোপন তথ্য। বেরিয়েছে মজার ও মধুর কথা বলে বিদেশ নিয়ে কৌশলে মাফিয়াদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে লাখ লাখ মুক্তিপণ নেন চাহিদা মতো। মুক্তিপণ না দিলে চলে অববর্ণীয় নির্যাতন।
ইনকিলাবের সাথে কথা উল্লেখিত ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল ফকিরের সাথে তিনি বললেন জসিম ও জহুরল ওরা বিদেশে ছিলো। জসিম দেশে আছে জহির বিদেশে। ওদের এক ফুফাতো ভাই নাম মো. রাজ্জাক মানিদাহ বাড়ি ওর মাধ্যমে ও ওরা বিদেশে লোক পাইতো আমি শুনছি। মাঝে মাঝে জামেলা হয় শুনি। আর কিছু জানি না। আগামীকাল ১৭ পর্বে জানুন সদরপুরে ৭০ মাফিয়া সিন্ডিকেটের সদস্য হাবি মুন্সি পিতা. মো. জব্বার মুন্সী এরা ইরাকে আটকিয়ে কিভাবে মুক্তিপণ আদায় করেন! (চলবে)
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ফরিদপুরে প্রিন্সিপালের ওপর অতর্কিত হামলা
‘সম্মিলিতভাবে কাজ করলে পুলিশের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা ফিরে আসবে’
অসহায় শীতার্তদের মাঝে রূপালী ব্যাংকের কম্বল বিতরণ
জনগণের সেবক হয়ে কাজ করতে চাই: ফখরুল ইসলাম
মীরসরাইয়ে অবৈধ বেহুন্দি ও মশারি জাল জব্দ
গণঅভ্যুত্থানে সংবাদমাধ্যমের চিত্র প্রদর্শনী করছে তরুণ কলাম লেখক ফোরাম
মারা গেলেন আসামি ধরতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ এসআই মেহেদী
নালিতাবাড়ীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড
ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর ১৩ হত্যার নির্দেশদাতা নাসিমের খুঁটির জোর কোথায়?
যে কারণে ছাত্রদের ঘোষণাপত্র দিতে মানা করেছিলেন ড. ইউনূস
মানিকগঞ্জে এলজিইডির উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
বাংলাদেশে কখনো স্বৈরাচারের শাসন জনগণ মেনে নিবেনা: আমিনুল হক
প্রতিনিয়ত মোশাররফ করিমের থেকে শিখি: মম
অবৈধ ৭টি কয়লা তৈরির চুল্লি গুড়িয়ে দিয়েছে বরগুনার জেলা প্রশাসন
ময়মনসিংহে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্পের লটারি অনুষ্ঠিত
পাঠ্যবইয়ে শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর ভুল তারিখ সংশোধন, জড়িতদের শোকজ
টাঙ্গাইল হাসপাতালে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা
স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স এবারের বিপিএলকে জাঁকজমক করেছে: আশরাফুল
কুয়েট ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
বিরলে বিরল প্রজাতির লক্ষীপেঁচা উদ্ধার