সাজা হচ্ছে না মানবপাচার মামলায়
১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
সাজা হচ্ছে না মানবপাচার মামলায়। অথচ মানবপাচারের অভিযোগে মামলা হচ্ছে এবং আসামিও গ্রেফতার হচ্ছে। আর তদন্ত শেষে দেয়া হচ্ছে অভিযোগপত্রও। কিন্তু বিচার শেষে সাজা হচ্ছে কমই, খালাস পেয়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ আসামি। ২০২১ ও ২০২২ সালে একটি মামলাতেও সাজা হয়নি আসামিদের। মানবপাচার মামলার এই করুণ অবস্থার কারণে বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মামলার তদন্ত যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তা পালন করতে বলা হয়েছে। অবশ্য চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৭ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে ও দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল সিআইডির একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, যেকোনও মামলার যথাযথভাবে বিচার সম্পন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে তদন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তদন্ত ও অভিযোগপত্রে কোনও ফাঁকফোকর থাকলে অপরাধীরা আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে যায়। এজন্যই মানবপাচার মামলায় আসামিদের সাজার চেয়ে খালাসের হার অনেক বেশি। মানবপাচারের ঘটনাগুলো আন্তদেশীয় অপরাধ। ফলে মামলার তদন্তের সময় দেশের ভেতরের অংশটি যথাযথ তদন্ত সম্পন্ন করা গেলেও বাইরের অংশটি অনুদ্ঘাটিত থেকে যায়। তারপরও আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিচারিক প্রক্রিয়ায় গিয়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ায় আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানবপাচারের অপরাধগুলোতে মূলত ছয়টি পর্যায় বিদ্যমান থাকে। এগুলো হচ্ছে ভিকটিম সংগ্রহ, পরিবহন বা স্থানান্তর, গন্তব্যস্থল, শোষণ বা নিপীড়ন, উদ্ধার, প্রত্যাবাসন বা বাড়ি ফিরে আসা। তদন্তের সময় এ বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়—ভিকটিমকে কীভাবে সংগ্রহ করার ঘটনা কবে ঘটেছিল, কোন ব্যক্তি সংগ্রহ করেছিল, তার সঙ্গে ভিকটিম বা তার অভিভাবকের কীভাবে পরিচয় হয়েছিল, বা কীভাবে তার সংস্পর্শে এসেছিলেন। ভিকটিম বা তার অভিভাবককে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বা আর্থিক বা অন্য কোনও সুবিধা প্রদান করে প্রতারণা বা ছলনার মাধ্যমে তাদের সম্মতি গ্রহণপূর্বক ভিকটিমকে সংগ্রহ করা হয়েছিল কিনা, তার বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, বল প্রয়োগ বা অপহরণ কিংবা তার কোনও অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে পাচার করা হয়েছে কিনা সেসব তথ্যও সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
পরিবহন বা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য, পরিবহনের মাধ্যম, পথের বর্ণনা, কত সময় ধরে ভ্রমণ, ভ্রমণকালীন সঙ্গী, ভ্রমণের খরচ বহন, কাগজপত্র বা ডকুমেন্টসের ব্যবহার বা চাকরির চুক্তিপত্র, প্রশিক্ষণ দেওয়া বা গ্রুমিং করানো, ধরা পড়লে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বা ইমিগ্রেশন পুলিশকে কী বলতে হবে তা শিখিয়ে দেয়া, সীমান্ত পেরিয়ে গেলে কোন সীমান্ত, কবে, কখন, কীভাবে সীমান্ত পার হয়েছেন তার বর্ণনা, সীমান্ত পার হওয়ার আগে ও পরে কারও আশ্রয়ে ছিলেন কিনা, ভ্রমণ বা আশ্রয়ে থাকার সময় আরও কোনও ভিকটিম ছিলেন কিনা, শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ভিকটিমকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংগ্রহ করা হলে গন্তব্যস্থলে তাকে কাঙ্খিত চাকরি দেওয়া হয়েছে কিনা, কাজ বা চাকরির জন্য জোর বা বল প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা, ভিকটিমকে কখনও বিক্রি করা হয়েছিল কিনা এবং শ্রম, যৌন বা অন্য কোনও ধরনের শোষণের শিকার হয়েছে কিনা, এসব বিস্তারিত অনুসন্ধান করতে হবে। এছাড়া জোর করে ভিক্ষাবৃত্তি, মাদক সেবনে বা করা, চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা, জীবননাশের হুমকি, খাবার খেতে না দেওয়া, ভ্রমণের কাগজপত্র জব্দ করে রাখা, জোর করে পতিতাবৃত্তি করানো, দাস হিসেবে ব্যবহার, জোর করে বিনোদন ব্যবসায় ব্যবহার ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কলাগাছ আন্দোলনের মতো এবারও ‘ধানের শীষ’কে উঠিয়ে আনতে হবে ঃ সাবেক এমপি ইন্জিনিয়ার সহিদুজ্জামান
যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ
নওফেল পরিবারের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ
ময়মনসিংহে পুলিশ রেঞ্জ কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন
গফরগাঁও সাবেক এমপি বাবেল গোলন্দাজ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
ফরিদপুরে প্রিন্সিপালের ওপর অতর্কিত হামলা
‘সম্মিলিতভাবে কাজ করলে পুলিশের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা ফিরে আসবে’
অসহায় শীতার্তদের মাঝে রূপালী ব্যাংকের কম্বল বিতরণ
জনগণের সেবক হয়ে কাজ করতে চাই: ফখরুল ইসলাম
মীরসরাইয়ে অবৈধ বেহুন্দি ও মশারি জাল জব্দ
গণঅভ্যুত্থানে সংবাদমাধ্যমের চিত্র প্রদর্শনী করছে তরুণ কলাম লেখক ফোরাম
মারা গেলেন আসামি ধরতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ এসআই মেহেদী
নালিতাবাড়ীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড
ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর ১৩ হত্যার নির্দেশদাতা নাসিমের খুঁটির জোর কোথায়?
যে কারণে ছাত্রদের ঘোষণাপত্র দিতে মানা করেছিলেন ড. ইউনূস
মানিকগঞ্জে এলজিইডির উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
বাংলাদেশে কখনো স্বৈরাচারের শাসন জনগণ মেনে নিবেনা: আমিনুল হক
প্রতিনিয়ত মোশাররফ করিমের থেকে শিখি: মম
অবৈধ ৭টি কয়লা তৈরির চুল্লি গুড়িয়ে দিয়েছে বরগুনার জেলা প্রশাসন
ময়মনসিংহে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্পের লটারি অনুষ্ঠিত