শ্রমিক ইস্যুতে নয়, নিষেধাজ্ঞা এলে সেটা হবে রাজনৈতিক কারণে
১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
বাংলাদেশে পোশাক খাতের শ্রম পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায়নি, যেজন্য যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোন দেশ নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। বরং নিষেধাজ্ঞা আসলে সেটা হতে পারে রাজনৈতিক কারণে, এমনটাই মনে করছেন মালিকপক্ষ। আর এ ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিকদের কিছু করার নেই। এটি মোকাবিলা করার দায়িত্ব সরকারের বলে জানিয়েছেন পোশাক খাতের ব্যবসায়ী, শ্রমিক নেতা ও সংশ্লিষ্টরা। সোমবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত শ্রম অধিকার ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক এক সেমিনারে এ সব কথা বলেন বক্তারা। ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ড. মোস্তফা আবিদ খান। বিশেষ বক্তা ছিলেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, আইএলওÑসংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আ ন ম সাইফুদ্দিন, ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) সভাপতি আমিরুল হক আমিন ও শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান।
বিকেএমইএ’র কার্যকরি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা কোনো নিষেধাজ্ঞায় ভিতু নই। কারণ আমরা এমন কিছুই করিনি যেসব কারণে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। আইএলও কনভেনশনের ১০টির মধ্যে ৮টি পূরণ করেছি। বাংলাদেশ এমন অবস্থা নেই যেখানেই যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক অবস্থান থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে। শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে। এরপরও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিলে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। রাজনৈতিক কারণে হলে তা অবশ্যই কূটনৈতিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে তিনি বলেন, দায়িত্ববান শ্রমিক সংগঠন বা নেতা হলে তিনি কারখানার ক্ষতি করতে পারেন না। অনেক পক্ষ আছে যারা দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়েও ভয় কাজ করে মালিকপক্ষের মধ্যে। ট্রেড ইউনিয়ন মানেই যখন তখন কাজ বন্ধ করে দেবে সে ধরনের ইউনিয়ন নিয়ে আমরা ভীত। তিনি বলেন, এবারের আন্দোলন শ্রমিকদের আন্দোলন ছিল না। তাহলে কারা ভাঙচুর করলো সেটা দেখতে হবে। তাদের যারা উৎসাহিত করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সিসি টিভির ফুটেজ দেখে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। ফুটেজ ছাড়া যাদের নামে মামলা হয়েছে আমরা তাদের মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছি।
শ্রম-বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান বলেন, শ্রম ইস্যু নিয়ে কারখানায় ভয় আছে। শ্রমিক নেতাকে অবশ্যই শ্রমিক হতে হবে, কিন্তু তা অনেক সময় কি দেখি। ছাত্র নেতা যদি হয় দুই ছেলের বাবা, তাহলে তিনি কি করে ছাত্রের সমাধানে কাজ করবে। শ্রমিক নেতাকে অবশ্যই শ্রমিক হতে হবে, তাহলেই তিনি শ্রমিকের সমস্যা বুঝবেন। ফজলে শামিম এহসান বলেন, শ্রম বিষয়ে বর্তমানে আমরা অনেক দেশ থেকে ভালো অবস্থানে আছি। আন্তর্জাতিক মানের দিক থেকেও ভালো আছি। ক্ষতিপূরণের দিক থেকে আমরা উন্নত দেশের মতো অবস্থায় আছি। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে মনে ভয় থাকে। ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সেভাবে নার্সিং করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমাদের ২৫০০ কারখানার মধ্যে ১৩০০ বেশি কারখানায় ইউনিয়ন হয়েছে। আমাদের সেক্টরে শ্রমিক নেতা দুই ধরনের হয়ে থাকে। তাদের একটা সেক্টর বাঁচাতে কাজ করে, আর একটা আছে বাইরে থেকে ডলার এনে নিজের স্বার্থ দেখে। শ্রমিক নেতা মানে দাবি-দাওয়া না, কারখানাকেও এগিয়ে নিতে হবে। যুক্তরাষ্টের যে আইনটার কারণে আমাদের ভয় সেখানে দুইটা দিক আছে। একটা পর্দার সামনে অন্যটি পর্দার বাইরের দিক। যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে এখন যে পরিস্থিতি আছে সেটা রাজনৈতিক। এখানে কূটনীতিকভাবে এগিয়ে নিতে হবে। সরকারকে এখানে উদ্যোগ নিতে হবে।
তৌহিদুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম নীতিকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। ব্যবসা ধরে রাখতে হলে তাদের ম্যামোরেন্ডাম বিবেচনায় নিতে হবে। আমার কাছে মনে হয় পশ্চিম আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। সাম্প্রতিক আন্দোলনে চারজন শ্রমিকের মৃত্যু হলো। এ হত্যাকাণ্ডের কেনো তদন্ত হলো না, কেনো বিচার হচ্ছে না। তিনি বলেন, এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো মজুরি বাস্তবায়ন। বিকেএমইএ-বিজেএমই কঠোর মনিটরিং না করলে এ বেতন পাবে না। আগামীর পথচলা সুন্দর করতে হলে অবশ্যই আমাদের আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। মন্ত্রণালয়ে অনিয়মের কারণে ট্রেড ইউনিয়ন ভালো অবস্থানে নেই। শ্রমিকের মৃত্যতে শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সেটাও ভাববার বিষয়। মালিক পক্ষ বলছে শ্রমিক আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাহলে আমার ৭ জন আঞ্চলিক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কেনো। তারাতো আন্দোলনে ছিলেন না। আইএলওÑসংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আ ন ম সাইফুদ্দিন বলেন, মালিকরা সবসময় ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে, যদি নেতারা কারখানার উন্নয়নে সহযোগিতা করেন। #
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
স্কুলছাত্র মারুফ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর গ্রেপ্তার, একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে সরকার : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
দোকান বরাদ্দের বিষয় খতিয়ে দেখতে কমিটি
শুটিং ফেডারেশন চলছে অপুর নির্দেশেই!
বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে পোশাক কারখানায় ৪৩২ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ
আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি তাজওয়ার আউয়াল
সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ
রংপুর রেঞ্জের নতুন ডিআইজি আমিনুল ইসলাম
গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ৯৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি
বগুড়ায় সহযোগী সহ শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগরকে নৃশংস কায়দায় হত্যা
শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ
পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
গুজবে কান দেবেন না : জনপ্রশাসন সচিব
কোয়াড সম্মেলনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা
এনজিও,নাস্তিকদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সংগ্রাম চলবে- চরমোনাই