বরিশালের নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ
১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম
বিদায়ী নগর পরিষদের কতিপয় কাউন্সিলর ও কর্মচারীর ব্যক্তিগত সুবিধা নেয়া থেকে শুরু করে বিবেকহীন কর্মকাণ্ডে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল মহানগরীর সৌন্দর্য বর্ধনকৃত ‘নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেক’টি এখন নগরবাসীর গলার কাঁটা। নতুন নগর পরিষদও বিষয়টি নিয়ে চরম বিব্রত। লেকটির উত্তর প্রান্তে সড়ক অধিদপ্তরের জমি দখল করে জাতীয় মহাসড়কের ওপর অবৈধভাবে নির্মিত কথিত শিশু পার্কটিও ইতোমধ্যে নগরীর অন্যতম দুর্ঘটনাস্থলে পরিণত হয়েছে। নতুন নগর পরিষদও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। পুরো এলাকা জুড়ে এখন নৈরাজ্যের জয় জয়কার। পদে পদে হেনস্তা ও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন নগরীর বৈধ করদাতাগণ। প্রায় ৬ কোটি টাকার অবৈধ ঐ শিশুপার্ক আর ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের পরে তার দখল কিশোর গ্যাং ও অবৈধ দখলদারদের হাতে। সাথে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আলো ঝলমলে পথে খাবারের দোকান বরিশাল মহানগরীকে দক্ষিণাঞ্চলের পেটের পীড়ার আঁতুর ঘরে পরিণত করেছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩য় মেয়র শওকত হোসেন হিরণ নগরীর কাশিপুর থেকে আমতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্তকরণসহ ‘নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেক’টির উন্নয়ন কাজ শুরু করেন। ২০১৩ সালে আহসান হাবীব কামাল ৪র্থ মেয়র নির্বাচিত হবার পরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়। প্রকল্পের আওতায় লেকটির পূর্ব এবং উত্তর-দক্ষিণ পাড় আরসিসি রিটেইনিং ওয়ালসহ ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং বসার বেঞ্চ স্থাপনসহ দৃষ্টিনন্দন লাইটিং করা হয়। পূর্ব পাড়ে জাতীয় মহাসড়কের পাশে অনেকটা শূন্যের ওপর সুদৃশ্য গাছও লাগানো হয়েছিল। পশ্চিম পাড়ের রাজকুমার ঘোষ রোডটি মেকাডমসহ বিটুমিনাস কার্পেটিং ছাড়াও স্থানীয় এলাকাবাসী ও মারকাজ মসজিদের মুসুল্লীদের জন্য বিশাল ঘাটলা নির্মাণ করে পুরো লেকটির চারি পাশে একটি সুদৃশ্য পরিবেশ তৈরী করা হলেও তা স্থায়ী হয়নি।
কিছুদিনের মধ্যেই পাশর্^বর্তী ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলরের কু-নজরে লেকটির পূর্বপাড়ে ওয়াকওয়ে দখল করে পথ খাবারের দোকান বসতে শুরু করে। ক্রমে তা কাউন্সিলরের তত্বাবধানে একটি সিন্ডিকেটের দখলে চলে যায়। আর সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ করে একের পর এক পথ খাবারের দোকানে মধ্যরাত পর্যন্ত আড্ডাবাজির সাথে রহস্যজনক বেঁচাকেনাও চলছে। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে শুরু করে সরকারি জমি দখল করে পুরো এলাকার পরিবেশ বিপন্ন করলেও বিদায়ী নগর পরিষদ বিষয়টি নিয়ে বিবেকেহীন নিশ্চুপ ছিল প্রভাবশালী ঐ কাউন্সিলরের কারণেই। ফলে নগরবাসীর চিত্ত বিনোদনের জন্য সরকারি ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্ট নন্দন এ লেক ও তার চারিধারের সুষ্ঠু পরিবেশকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে।
লেকটির চারধারে যেসব অবৈধ পথ খাবারের দোকান গড়ে উঠেছে, প্রতি রাতে তার বর্জ্য লেকটিতে ফেলা হচ্ছে। লেকটির পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটি ড্রেন নির্মাণ করা হলেও তার অধিকাংশই ভাড়াট হয়ে গেছে খাবারের দোকানের বর্জ্য।ে এমনকি ড্রেনটি নিয়মিত পরিষ্কারও হচ্ছে না। এলাকাবাসীসহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মার্কাজ মসজিদের মুসুল্লীদের অজু-গোসলের জন্য যে ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে, তার প্রবেশ ও বহির্গমনের পথটি পর্যন্ত রুদ্ধ করেছে এসব পথ খাবারের দোকান। কিন্তু কেউ মুখ খুলতে পারছে না সিন্ডিকেটের ভয়ে।
তবে গত ১৪ নভেম্বরে দায়িত্ব নেয়া ৫ম মেয়র ও তার নগর পরিষদ নীতিগতভাবে লেকটিকে মূল আদলে ফিরিয়ে আনার অলিখিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে খোঁজখবর নিয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টির সাথে অনেক গরীব ও অসহায় পরিবারের রুটি-রুজির প্রশ্ন জড়িয়ে পড়ায় সহনীয়ভাবে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়েই নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকটিকে জনস্বার্থের পাশাপাশি নগরীর সৌন্দর্য রক্ষায় তার মূল আদলে ফিরিয়ে আনারও চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন নগরভবনের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি
পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ
শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক
অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল
‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’
হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী
মার্কিনিদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান
সংঘাতের মধ্যে নতুন অস্ত্র সামনে আনলো ইরান
ভারতকে পারমাণবিক সাবমেরিন আন্ডারওয়াটার ড্রোন দেবে ফ্রান্স