ভিসা চেক না করে বিদেশ যাওয়াটাও বড় ভুল
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম
ভিসা চেক না করে বিদেশ যাওয়াটাও বড় ভুল। এই ভুলের মাশুল গুনছেন বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের শতশত লোক/যুবকরা। বহু লোকের বা অনেক যুবকের বিদেশ যাওয়া নিয়ে দুর্ঘটনার খবর, টাকা পয়সা মাইর গেছে। চাকরি দেয়ার কথা বলে বিদেশে এনে নির্যাতন করছেন, আরো বেশি টাকা নিতে। কথা মতো বা চুক্তি অনুযায়ী কাজ দেয় নাই। বেতন যা দেয়ার কথা তাও দেয় না। এরকম নানামুখি অভিযোগে দালালদের অভিযুক্ত করে তুলছেন প্রবাসে থাকা প্রবাসীরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এবং কারণবশত বিদেশ থেকে ফেরত আসা লোকগুলো তুলে ধরছেন দালালদের নামে অভিযোগের ফুলঝুরি।
এটাও নতুন কিছু নয়। লিবিয়া হয়ে ইতালি এবং মালয়েশিয়া হয়ে অস্ট্রেলিয়ার যাওয়ার পথে ৩০ জন লোকের সলিলসমাধি হয়েছে ফরিদপুর-নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কৃষ্ণনগরসহ আশপাশের গ্রামের। এ নিয়ে কোর্টে ২টি মামলাও চলমান। মোট মামলা চলছে, ৭/৮টি। আবার কেউ মাফিয়াদের হাতে অপহরণের শিকার হয়ে পরে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে শুধু জীবন ভিক্ষা চেয়ে ফেরত আসছেন দেশে। আবার কেউ বলছেন টাকা দিলাম ৪ থেকে ৫ লাখ সউদী আরব বা মালয়েশিয়া নিয়ে কাজ দিবেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বেতনে। এরকম খবর হর হামেশাই শোনা যায়।
এরমধ্যে কিছু লোক অবৈধপথে বিদেশ যাওয়ার জন্য দালাল অথবা আদম ব্যবসায়ীদের পিছনে পিছনে ঘুরছে। আবার কেউ বিদেশে গিয়ে দেশীয় দালাল কাম মাফিয়াদের হাতে অপহরণের শিকার হন। কখনও সত্যি সত্যিই বিদেশি মাফিয়াদের হাতে ধরা পড়ে মোটা অংকের মুক্তিপণ দিয়ে স্বজনকে ফিরিয়ে আনেন আপনজনরা। আবার কেউ জেল খাটছেন মাসের পেরিয়ে বছর। এই বিদেশ নামের প্রবাসী জীবন বাঁচানোর জন্য বহু জনের সলিল সমাধি হয়েছে ভূমধ্যসাগরে। মৃত্যুর মিছিল চলমান থাকলেও অবৈধপথে বিদেশ যাওয়া কোনো রকমই থামছে না।
একজনের লাশ দাফন দিয়ে আরেকজন চলছে ইউরোপে যাওয়ার টাকা জমা দিতে। বিদেশে যাওয়ার নামে বিদেশ কথা যেন মরণব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এরকম অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে, কপাল যদি না হয় ফাঁকা ঘুরতে পারে ভাগ্যের চাকা। মরণ একদিন হবে বাড়ি থাকলেও মরব। না হয় মরব বিদেশ যাওয়ার পথে। মরণ থাকলেও সাগর হোক জঙ্গলে হোক মরবই। এই রকম করে ঘর থেকে বের হচ্ছে লোভী শ্রেনীর লোকজন। বিদেশ গিয়ে অল্পদিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হবে। লাখপতি বনে যাবেন। বাড়িতে বড় দালান তৈরি করবেন এমনটাই সবার আশা। কিন্তু বিদেশ থেকে স্বজনের লাশের কফিন যখন বাড়ির উঠানে আসে তখন স্বজনদের আত্মচিৎকারে পুরো আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
তদ্রুপ, কারোর বাড়ির পাশ থেকে এক বন্ধু রওয়ানা হয়ে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যুর খবর শুনেও থামছে না বিদেশ যাত্রা। ইউরোপ যাত্রায় ট্রলারডুবিতে সলিল সমাধির কথা জেনেও শেষ বিদায় নিয়ে পাড়ি জমান মৃত্যুর খবর পাওয়া অপর আত্মীয়টা। যারা বিদেশ যান তারা সকলেই, যাদের মাধ্যমে বিদেশ যাবেন, সকলেই তাদের দালাল-দালাল বলে মুখে ধোঁয়া তুলেন। আসলে দালাল মানেটা কি? দালালের আভিধানিক অর্থ হলো সাহায্যকারী। যারা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক তারা বিদেশ কিভাবে যাবে? যাওয়ার আগে কি করতে হয়। আদম কারবারিদের সাথে দালালরই টাকা-পয়সার দরবার করেন। এটাই হলো দালাল/দালালি।
এমন একক মহিলা দালাল/ সাহায্যকারীর কথা ইনকিলাবকে জানালেন, ফরিদপুর সদর থানার শরীতুল্লাহ বাজারের এক শ্রমিক মো. নাঈম শেখ পিতা. পান্নু শেখ। ঐ বিষয় কিছু কথা, গত পর্বে ইনকিলাবে ছাপা হয়েছে। নাঈমের বক্তব্য অনুযায়ী যে নারীর মাধ্যমে নাঈম সউদী আরব গেছেন। তার নাম মোসা. জাহানারা বেগম। তিনি বিগত দিনে ফরিদপুর সদরের সাবেক আলীয়াবাদ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড তথা (জলিল ফকিরের ডাঙ্গি) বর্তমান পৌরসভার ২৫/২৬/২৭ নং ওয়ার্ড থেকে মহিলা সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন। তিনি স্থানীয় আরামবাগ এতিমখানা ভবনের গেটের সাথের বাড়ীটির বাসিন্দা মো. দেলোয়ার সাহেবের স্ত্রী। তার সাথে কথা হয়, এই দুই প্রতিবেদকের। কথা হলে, তিনি ইনকিলাবকে কিরা কসম কেটে বলেন, নাঈম শেখ দীর্ঘদিন তথা ৩/৪ মাস আমার পিছে পিছে ঘুরছে বিদেশ যাওয়ার জন্য। আমি বারবার না করছি বিদেশে নেয়ার কোনো লাইন আমার নাই। শেষ পর্যন্ত নাঈম ও তার বউয়ের হাতে পায়ে ধরা ও কান্নাকাটিতে ঢাকাতে বিদেশ যাওয়ার একটি লোকের ঠিকানা দেই। সেখানে গিয়ে ওরা নিজেরাই যোগাযোগ করে টাকা পয়সা জমা দেয়। ওরাই চেষ্টা করে বিদেশ যায়। নাঈমের আপন বোনও সউদী আরব থাকেন। তারা এবং আমাদের লোক একাধিকবার ২/৩ জায়গায় চাকরি ঠিক করে দেয়। সব কাজে কষ্ট হয় তার। কোনো কাজে কষ্ট সহ্য করতে পারে না। সে নিজে মেরুদণ্ড ব্যথাজনিত রোগী। সে শক্ত বা কঠিন কাজ করতে একেবারেই পারে না এবং পারবে না মর্মে আমরা জানতে পারি। পরে নাঈম একাই চাকরি ছেড়ে দিয়ে ওর ইচ্ছে মাফিক দেশে ফিরে আসে এবং নাঈম ইনকিলাবকে বলেন, বড় ভিসা ভাল চাকরি ভাল বেতনে বিদেশ পাঠালেন। সউদী এসে পুলিশের কাছ থেকে জানাল ঐ ভিসা ট্যুরিস্ট ভিসা। আমার কাজ করার অনুমতি নাই। বসে বসে একবেলা করে খাই। আকামা হবে না। কায়দা করে পুলিশের হাতে দিলে ১৪ দিন সউদী জেলে খাটি। পড়ে পুলিশ বিমানে উঠাইয়া দেয়।
অপরদিকে, জাহানার ইনকিলাবকে বললেন, নাঈমের সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। সবশেষ জাহানারা বেগম নিজ মুখে ইনকিলাবকে বললেন, ওকে আমি ছেলের মতো জেনে ভালবেসে বিদেশে পাঠাইলাম। এখন আমারই বদনাম করে। কি করিনি আমি ওর জন্য? ওর বিচার আল্লাহ নিজে করবেন। বিস্তারিত জানুন ২১ পর্বে। চোখ রাখুন ইনকিলাবে। (চলবে)
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
খুশদীলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরের আটে আট
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা
মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার
ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ
গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ
ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান
সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ
দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড
বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই
শেখ পরিবারের রক্তের জন্যই দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন টিউলিপ -রিজভী
নামাজ মু’মিনের জন্য মেরাজস্বরূপ
ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে
স্বনির্ভর অর্থনীতির পথে দেশ
বগুড়ার বিমানবন্দর দ্রুত চালুর দাবি
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে হবে : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
হাজারীবাগের ট্যানারির গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র দেওয়া জরুরি : নুরুল হক নুর
গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে বিএনপির ভূমিকা লিখতে হবে : জয়নুল আবদিন
নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে