নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে দায়েরকৃত মামলার বিচার গড়ালো রাত অবধি। গতকাল রোববার বিজয়নগর টেপা কমপ্লেক্সে স্থানান্তরিত ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক কেষ মেরিনা সুলতানার আদালতে এ বিচার চলে। সকাল ১১টা ৩৩ মিনিটে আদালতে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শুরু হয়।
দুই দফা বিরতি দিয়ে উপস্থাপন চলে রাত অবধি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। শুনানি শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলার সাক্ষীদের বর্ণনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যদের সংশ্লিষ্টতার কোনো বর্ণনা নেই। বাদীপক্ষ যেসব কাগজপত্র উপস্থাপন করেছেন তাতে বিবাদীদের বিরুদ্ধে কোনো ডকুমেন্ট নেই। মামলার আর্জিতে কোথাও ‘আসামিরা অপরাধী’ এমন কোনো অভিযোগ উল্লেখ নেই।
ব্যারিস্টার মামুন আরো বলেন, কোম্পানি আইন অনুযায়ী অপরাধ কোম্পানির হবে। কিন্তু এখানে অসৎ উদ্দেশ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আসামি করা হয়েছে। এ কারণে এ মামলা চলতে পারে না। এর আগে মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন অ্যাডভোকেট মো: খুরশীদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী।

প্রসঙ্গত: ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেন। এজাহারে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো: আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম ও মো: শাহজাহান।

গতকাল যুক্তি উপস্থাপনের ধার্যকৃত তারিখ পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন আদালত। তা সত্ত্বেও নোবেলবিজয়ী ইউনূস এ সুযোগ গ্রহণ না করে সকাল ১১ টা ১৮ মিনিটে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ আদালতে হাজির হন।

এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে মামলার আইনগত বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এ দিন যুক্তি উপস্থাপন অসমাপ্ত অবস্থায় পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য ছিলো ২৪ ডিসেম্বর।