নৌকা ছেড়ে আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারের শুরুতেই লক্ষ্মীপুর-৪ রামগতি-কমলনগর আসনে স্পষ্ট হচ্ছে আওয়ামী লীগের গৃহদাহ। নৌকা ‘ডোবানোর’ লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জনের অধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেন। এতে নৌকার প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে ওই দলেরই শীর্ষ ৫০ নেতা ও তাদের অনুসারীরা। নৌকার পক্ষে নির্বাচন না করে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জেতাতে কোমর বেঁধে মাঠে নামেন তারা। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা ও ইউনিয়ন আ. লীগের পদধারী নেতারা অবস্থান নেওয়ায় কোণঠাসা নৌকার সমর্থকরা। এসব নেতাদের অনুসারীরাও নৌকা বিরুদ্ধে গিয়ে নানা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দিচ্ছেন। নৌকা মার্কা যেন তাদের কাছে এখন বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, অবমূল্যায়ণ, স্বতন্ত্র প্রার্থীর স্থানীয় প্রভাব এবং কারো বিরাগভাজন হতে না চাওয়ায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা নৌকাকে সমর্থন প্রশ্নে নীরব রয়েছেন। আবার অনেকেই প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থা নিয়ে নানা সমালোচনাও করছেন। নেতাকর্মীরা বিভক্ত হওয়ায় সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে গায়েল করে বক্তব্য দিচ্ছেন। দিন যতই গড়াচ্ছে, সংঘাতের আশঙ্কা ততই বাড়ছে। অবস্থা একেবারে লেজেগোবরে। ভবিষ্যতে দলটির সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ফেরাতে বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। এতে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা আ. লীগ একেবারে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা নিয়ে তৃণমূলে নানা সন্দেহ ও প্রশ্ন জন্ম দেয়। লক্ষ্মীপুর জেলা আ. লীগ ও একেবার চুপচাপ রয়েছে। এতে এসব নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও আ. লীগ মনোনীত ফরিদুন্নাহার লাইলী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। তার জায়গায় দলীয় মনোনয়ন পান জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের মোশারফ হোসেন, দুই প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের যাচাইয়ে বাতিল হলে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয় ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে। এদের মধ্যে ১৪ দলের প্রার্থী মোশারফ হোসেন (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী ইস্কান্দার মির্জা শামীম (ট্রাক), আবদুল্লাহ আল-মামুন (ঈগল), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোহাম্মদ সোলায়মান (একতারা), মাহমুদা আক্তার (তবলা) ও আব্দুস সাত্তার রকেট প্রতীক পান।
দলটির রামগতি উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ, রামগতি পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মেজু, কমলনগর উপজেলা সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন রাসেলসহ বেশ কিছু নেতা নৌকার পক্ষে থাকলেও অন্তত ৫০ জন শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করছেন। তারা হলেন- রামগতি উপজেলা আ. লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ মুরাদ, সহ সভাপতি ড. আশ্রাফ আলী চৌধুরী সারু, চরআলগী ইউপির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী, আ.লীগ নেতা ও চরগাজী ইউপির চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমন, বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাকছুদ মিজান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের, ওয়ারেছ মোল্লা, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেছবাহ উদ্দিন ভিপি হেলাল, যুগ্ম আহবায়ক শোয়াইব খন্দকার, রাহেদ বিপ্লব, ওসমান গণী মেম্বার, কমলনগর উপজেলা আ. লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জহির উদ্দীন ভুঁইয়া, উপজেলা আ. লীগ নেতা ও সাহেবেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার আবুল খায়ের, কমলনগর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেছবাহ উদ্দিন বাপ্পি, যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহ হিরন, চরকাদিরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও আ. লীগ নেতা আশ্রাফ উদ্দিন রাজু, হেলাল উদ্দীন হিমেল, চরগাজী ইউনিয়ন আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, বড়খেরী ইউনিয়নের মুন্না মাহমুদ, বেলাল মেম্বর, জমির মেম্বর, দিদার মেম্বার, জগলু মেম্বার, মো. কামাল, শশী বাবু, জামাল মিয়া, মিরন উদ্দীন, ফারুক মেম্বর, আযাদ উদ্দীন ও মতিন মেম্বরসহ দুই উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে প্রায় ৫০ জনের অধিক নেতা নৌকার প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
কমলনগর উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজু বলেন, নৌকার প্রার্থী পরিবর্তন দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। নিবেদিত কর্মী হিসেবে সব সময় দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। দল যাকে নৌকা দিয়েছে তাকে বিজয়ী করতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলেই মনে করি। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রামগতি উপজেলা আ. লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ মুরাদ বলেন, আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে। তার জন্য দলের নেতাকর্মীরা এক হয়ে কাজ করবে। আমরা কারো পক্ষে ভাড়া খাটতে রাজি নই। আমরা দলীয় এমপি চাই।
রামগতি পৌরসভার মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন মেজু বলেন, নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। যারা নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট করছেন, তারা নেত্রীর ও দলের সিদ্ধান্তে বাহিরে চলে গেছে। সময় মত দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু দল মনোনয়ন দেয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য নির্বাচনী মাঠ উন্মুক্ত ঘোষণার কারণেই প্রার্থী হয়েছি। সাধারণ মানুষের দারুণ সাড়া পাচ্ছি। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু
রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে
বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে
বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা
লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই
রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে
দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা
জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ
উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন
সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল
‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড
সিটি ব্যাংক আনল অভূতপূর্ব ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড
শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, জবাব তাকে দিতেই হবে : মির্জা ফখরুল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে