ঢাকা   বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

দেশে নির্বাচনের নামে ‘বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা’ হচ্ছে

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি নিয়ে আমরা যদি নিশ্চুপ থাকি, তাহলে আটলান্টিকের ওপাড় থেকে কেউ এসে পরিবর্তন করে দিয়ে যাবে না। আমাদের দেশের এক তৃতীয়াংশই তরুণ, তারা যদি ভূমিকা না রাখে, তাহলে কেউ এসে পরিবর্তন করে দিয়ে যাবে না। গতকাল শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি বাংলাদেশ আয়োজিত অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার লক্ষ্যে নাগরিক এজেন্ডা শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের নামে যা হচ্ছে তা আসলে প্রকৃত নির্বাচন নয়, এটা নির্বাচনী বিশেষ তৎপরতা।

দেশের তরুণদের উদেদশ্যে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে আগামী দিনে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তার কোন পর্যালোচনাই এবার হলো না। যে কারণে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের কাছেই পৌঁছালো না। এটা গণতন্ত্রের বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হলো। নির্বাচনকে ঘিরে এই ইশতেহারটা একটা রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে দিয়ে এসেছে। ফলে সরকার, রাজনীতি ও দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, জবাবদিহি না থাকলে বৈষম্য বাড়ে। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের নির্বাচন এর আগে দেখেছি। ১৯৮৮, ১৯৯৬ সালে দেখেছি। নির্বাচন যদি বহু মানুষের আকাঙ্খার বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এর ফলাফলও টিকিয়ে রাখা কঠিন। আগামী দিনে অর্থনীতি যেভাবে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি আগামী দিনে কই গিয়ে দাঁড়াবে এই উৎকণ্ঠা সবার মাঝে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা’ উল্লেখ করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, এটাকে সাধারণভাবে আমরা নির্বাচন বলছি। কিন্তু আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আমি বলি এটি একটি বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা। এর ফলে ইতিহাসের কাছে নাগরিকদের দায় বেড়ে গেল। আগামী দিনে আমাদের ভূমিকা আরো বাড়বে।

বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা দেখছি যে যতবার নির্বাচন করেছে, তার আয় গাণিতিকভাবে সে পরিমাণ বেড়ে গেছে। যে যতবার নির্বাচন করেছে, তার আয় ততবার বেড়েছে। তার মানে হল নির্বাচনে আসা, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার অর্থই হলো আয় বাড়ানোর ভালো একটা রাস্তা। কিন্তু এভাবে তো আপনি পুরো রাষ্ট্রকে অধিকারহীন করে দিয়ে সংকীর্ণ একটি গোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় সম্পদের মালিকানা করে দিচ্ছেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যে যতবার নির্বাচিত হয়েছে, গাণিতিক হারে জনপ্রতিনিধিদের সম্পদ তত বেড়েছে। অনেকেরই দেখা গেছে- সম্পদের পরিমাণ ৫০০ গুণ বেড়ে গিয়েছে, কিন্তু তারা কি সেই সম্পদ অনুপাতে পূর্বের তুলনায় ৫০০ গুণ বেশি কর দিয়েছে? এনবিআর কি কখনো সেই খোঁজ নিয়েছে?

ড. দেবপ্রিয় বলেন, প্রার্থীদের সম্পর্কে আমরা জানতে পারি হলফনামার মাধ্যমে। সেখানে যে সম্পদের বিবরণ দেয়া হয়েছে এবং যে ট্যাক্সের বিবরণ দেয়া হয়েছে, সেগুলোর কখনও তুলনামূলক বিশ্লেষণ হয়? যদি তাই হয়, তাহলে অনেকেরই দেখেছি আয় ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ল, তাহলে তিনি কি সে হারে কর দিয়েছেন? আমি মনে করি আগামী দিনে এটা খুঁজে বের করা এনবিআরের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, আইএমএফ বলছে আমাদের কর জিডিপি বাড়াতে হবে, আমি মনে করি এই হলফনামা আমাদের জন্য বড় একটি সুযোগ। এখন এনবিআর কি করে সেটাই দেখার বিষয়। তারা কি আগামী দিনে এ বিষয়গুলো নিয়ে বলবেন? বলা উচিত। তরুণদের এগিয়ে আসা উচিত; দেশের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। তা না হলে বারবার বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা হবে, জনগণ ভোটের অধিকার হারাতেই থাকবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

জাকেরের পর বোলারদের দাপট,১৫ বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট জয় বাংলাদেশের

জাকেরের পর বোলারদের দাপট,১৫ বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট জয় বাংলাদেশের

গোল উৎসবে জয়ের ধারায় ফিরল বার্সা

গোল উৎসবে জয়ের ধারায় ফিরল বার্সা

হাসিনার মতো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কারও কাছে বর্গা দেয়া হবে না: মুশফিক আনসারী

হাসিনার মতো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কারও কাছে বর্গা দেয়া হবে না: মুশফিক আনসারী

বেনাপোল পৌরসভার নাগরিকদের মাঝে জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ উদ্বোধন

বেনাপোল পৌরসভার নাগরিকদের মাঝে জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ উদ্বোধন

ভারতীয় আগ্রাসী মনোভাব মোকাবেলা করবে বাংলাদেশের জনগণ: আলহাজ হাফিজ সাব্বির আহমদ

ভারতীয় আগ্রাসী মনোভাব মোকাবেলা করবে বাংলাদেশের জনগণ: আলহাজ হাফিজ সাব্বির আহমদ

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬২৯ জন

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬২৯ জন

চাঁদপুরে কিশোরচালক মহিন হত্যা মামলার ৩ আসামী আটক

চাঁদপুরে কিশোরচালক মহিন হত্যা মামলার ৩ আসামী আটক

পার্থিব ও ওহীর জ্ঞানের সমন্বয়ে গঠিত মাদরাসা শিক্ষা: অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী

পার্থিব ও ওহীর জ্ঞানের সমন্বয়ে গঠিত মাদরাসা শিক্ষা: অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী

ভারত বাংলাদেশের ওপর যুদ্ধ বাধানোর চক্রান্ত করছে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ

ভারত বাংলাদেশের ওপর যুদ্ধ বাধানোর চক্রান্ত করছে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ

আবারো রাঙ্গুনিয়ায় বন্যহাতির তাণ্ডব : কৃষক দিশাহারা

আবারো রাঙ্গুনিয়ায় বন্যহাতির তাণ্ডব : কৃষক দিশাহারা

আগাম আলুর দামে খুশি নীলফামারীর চাষিরা

আগাম আলুর দামে খুশি নীলফামারীর চাষিরা

দৌলতখানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

দৌলতখানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

মাগুরায় ৩ মাস ২৮ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

মাগুরায় ৩ মাস ২৮ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

হাবিপ্রবিতে ৩ দিনব্যাপী কর্মশালা

হাবিপ্রবিতে ৩ দিনব্যাপী কর্মশালা

দুই কোটি টাকার ব্রিজে উঠতে হয় মই দিয়ে

দুই কোটি টাকার ব্রিজে উঠতে হয় মই দিয়ে

আমতলীতে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ : নিম্নমানের ইট ব্যবহার

আমতলীতে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ : নিম্নমানের ইট ব্যবহার

হত্যা মামলায় ঝিনাইদহের আ.লীগ নেতাসহ দু’জনের রিমান্ড মঞ্জুর

হত্যা মামলায় ঝিনাইদহের আ.লীগ নেতাসহ দু’জনের রিমান্ড মঞ্জুর

ভারতবিরোধী স্লোগানে উত্তাল খুলনা

ভারতবিরোধী স্লোগানে উত্তাল খুলনা

বর্জ্য-আবর্জনার শহর সৈয়দপুর

বর্জ্য-আবর্জনার শহর সৈয়দপুর

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে ভারতের স্বপ্ন ভেস্তে গেছে : হাজী ইয়াছিন

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে ভারতের স্বপ্ন ভেস্তে গেছে : হাজী ইয়াছিন