এক কোম্পানির চার প্রোডাক্ট নৌকা-লাঙল-ঈগল-ট্রাক : রিজভী
০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
নৌকা-লাঙল-ঈগল-ট্রাক এক কোম্পানির চার প্রোডাক্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশ-বিদেশের গণতন্ত্রকামী শক্তিকে ধোকা দেয়ার জন্য শেখ হাসিনার স্বঘোষিত ডামি নির্বাচনে স্বতঃউচ্ছসিত আনন্দ নেই।
শুধুই মিথ্যার বঞ্চনা আর আত্মার লাঞ্ছনা, জনগণকে অপমান এবং মিথ্যার অবদান। এই অভিনব মডেলের নির্বাচন নিয়ে এতো দিন এতো জয়ঢাক-দুন্দুভি-ডঙ্কা বাজানোর পর ভোটের তরী ডুবতে চলেছে। তাদের খুদ উচ্ছিষ্টভোগী-কুঁড়ো পার্টির প্রার্থীরা দলে দলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এক কোম্পানির চার প্রোডাক্ট নৌকা-লাঙল-ঈগল-ট্রাকের এই নির্বাচনী তামাশা ইতোমধ্যেই গণপ্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর অপশক্তি একদিকে আবোলতাবোল বকতে শুরু করেছে। অপরদিকে দেশজুড়ে নির্বাচনে কে আসল আর কে ডামি এসব নিয়ে প্রার্থী-সমর্থকদের মধ্যে সারাদেশে কামড়া-কামড়ি, সন্ত্রাস-সংঘর্ষ-হানাহানি-খুনোখুনি চলছে সমানে। গতকাল বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
৭ জানুয়ারি ফেলানী হত্যা দিবসে স্বাধীনতা রক্ষার অঙ্গীকারে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রত্যয়ে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৭ জানুয়ারি নিষ্পাপ কিশোরী ফেলানী হত্যা দিবস। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে কাকভোরে ঠান্ডা মাথায় পাখির মতো গুলি করে তাকে হত্যা করেছিল প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত হত্যা বাহিনী। গুলিবিদ্ধ ফেলানী আধাঘণ্টা ধরে কাঁটাতারে ঝুলে ‘পানি পানি’ বলে চিৎকার করে ছটফট করছিল। দীর্ঘ সময় ধরে কাঁটাতারে ঝুলে ছিল ফালানীর লাশ। ৩০ ঘণ্টা পর বিএসএফ ফালানীর লাশ ফেরত দিয়েছিল। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ দোষ স্বীকার করলেও বিচারের নামে তামাশা করে হত্যাকারীদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। তার উপযুক্ত বিচার হয়নি। শেখ হাসিনা আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ পর্যন্ত করেনি। ৭ জানুয়ারির ঐতিহাসিক রক্তাক্ত শোক দিবসে কোন নির্বাচন দেশপ্রেমিক জনগণ হতে দিবে না।
আওয়ামী লীগ নিজেদের পাতা ফাঁদে আটকে পড়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আওয়ামী অপশক্তি এখন নিজেরাই নিজেদের পাতা ফাঁদে আটকে পড়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বিএনপিকে নিষিদ্ধ করার হুংকার দিচ্ছে। বিএনপিকে তাদের মিথ্যাচার-অপপ্রচার আর প্রতিহিংসার টার্গেটে পরিণত করেছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির নাকি দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। আর ওবায়দুল কাদেরের আশংকা গুপ্তহত্যার। যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, অচিরেই নিষিদ্ধ করা হবে বিএনপিকে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এখন পর্যন্ত বিএনপিকে নিষিদ্ধ করার কোনো চিন্তা আমাদের নেই। তার মানে যে কোন সময় তাদের চিন্তার পরিবর্তন হতে পারে। তাদের এ ধরণের বক্তব্য উভ্রান্তের প্রলাপ, দেশে ক্রমাগতভাবে তামশিকতা ঢোকার আলামত। গণতন্ত্রকামী জনগণের সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ আদিম অসভ্য অবস্থা দেশে টেনে আনতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের দলগুলোর আশঙ্কা ভাগবাটোয়ারার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে হানাহানি খুনোখুনি শেষ পর্যন্ত মাফিয়া চক্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে গণ বিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ ইচ্ছেকৃতভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ওবায়দুল কাদেরের আগাম কথায় আরো আশংকা বেড়েছে আওয়ামী লীগের গুপ্তবাহিনী নিজেরাই নিজেদের ‘নৌকা-লাঙ্গল-পাগল-ট্রাক-ঈগল’ প্রার্থীদেরকে হত্যা বা গুপ্তহত্যার পথও বেছে নিতে পারে। সুতরাং জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। সজাগ থাকুন। সম্ভব হলে আওয়ামী অপকর্মের সাক্ষ্য প্রমাণ রেকর্ড করে রাখুন। আর বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে হুমকী দিচ্ছে সেটি ভয় পেয়ে আওয়ামী লীগেরই আর্তচিৎকার। এই ধরনের চিন্তা ও অপতৎপরতা সংবিধানবিরোধী, আইনের শাসনের পরিপন্থী। সরকার দীর্ঘদিন ধরেই একদলীয় ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। তবে তারা জনগণের প্রতিরোধের কারণে সফল হবে না। জনগণের রক্তে সংগ্রামের বীজ রয়েছে, সেই বীজই অঙ্কুরিত হয়ে জনগণকে প্রবল শক্তিতে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে সক্ষম হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদেরকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল করার পর জিয়াউর রহমানের বদান্যতায় দেশে পুনরায় স্বনামে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছিলেন সেই ইতিহাস স্মরণ করুন। জিয়াউর রহমান করুনা করে আওয়ামী লীগকে স্বনামে রাজনীতি করার সুযোগ না দিলে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নামে কোন দল থাকতো না। মনে রাখবেন র্যাব-পুলিশের বন্দুকের জোরে নয়, শত জুলুম নির্যাতনের পর বিএনপি টিকে আছে সারাদেশের কোটি কোটি জনগণের সমর্থনে। বিএনপি কারো করুনার উপর নির্ভর করে রাজনীতি করেনা। বিএনপি নিখাঁদ দেশপ্রেমিক দল, সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস্য বাংলাদেশের জনগণ। বিএনপির শেকড় দেশের ভেতরে।
রিজভী বলেন, শুধুমাত্র বিনা ভোটে অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য গত ১৫ বছর ধরে অব্যাহতভাবে সংবিধান লংঘন করে চলেছেন। সংবিধানকে দুমড়ে মুচড়ে কাগজের নৌকা বানিয়েছেন। তিনি ভোটাধিকার হরন করে দেশের জনগনকে রিফিউজিতে পরিনত করেছেন।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্যবহারকারীদের আশ্বাস ট্রাম্পের, যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু টিকটক
পদ্মায় ধরা পড়লো ৪২ কেজির মহা বিপন্ন বাঘাইড় মাছ
আরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রিয়ালের প্রেসিডেন্ট পেরেজ
সিলেটে প্রখ্যাত আলেম ইসহাক আল মাদানির ইন্তেকাল!
গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ
গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম
সত্যিকারের সুখী হওয়া অনেক কঠিনঃ মিশা
গাজায় ব্যাংক সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি শুরু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের
বদলে যাচ্ছে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের পোশাক
লক্ষ্মীপুরে ড্রামট্রাকের চাপায় প্রাণ গেল দুই অটোরিকশা যাত্রীর
মানিকগঞ্জে পদ্মায় বড়শিতে ধরা পরল ৯ কেজি ওজনের বোয়াল
রাজশাহী নার্সিং কলেজের ১৪ শিক্ষার্থী ফেল করে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিলেন
মেলানিয়া ট্রাম্প বাজারে আনলেন নিজস্ব ক্রিপ্টোকারেন্সি
সাবেক এমপি মোস্তফা জালাল গ্রেপ্তার
শরীয়তপুর পৌরসভার বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
সাইফ ইস্যুতে মেজাজ হারালেন অভিনেতা জাকি শ্রফ
হাজীগঞ্জে কুমড়ার বাম্পার ফলন দাম না পেয়ে কৃষকরা হতাশ
ইবিতে 'কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও শৃঙ্খলা বিধানে করণীয়' শীর্ষক কর্মশালা
সারা দেশে কমবে রাতের তাপমাত্রা,জানালো আবহাওয়া অধিদপ্তর
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস