ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১
পীর সাহেব চরমোনাই

দেশের সর্বত্র অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, দেশের সর্বত্র অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। কোথাও শান্তি নেই। সর্বত্র মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। দেশে গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। ঘরে থাকলে খুন আর রাস্তায় বের হলে হয় গুম। মায়ের কোলের শিশুও আজ নিরাপদ নয়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। ফ্যাসিবাদ ও কর্তৃত্ববাদীরা নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় বিদেশী প্রভুদের কাছে আমাদের মাথা বিক্রি করে দিয়েছে। আমার প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা নিয়ে আমরা আজ উদ্বিগ্ন। গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ হওয়ার জন্য লাখো মানুষ জীবন দেয়নি। দেশের সীমানা আজ অরক্ষিত। সীমান্ত পাহারায় নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের বিএসএফ গুল করে হত্যা করলেও বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। একটি স্বাধীন দেশে এমন নতজানু পররাষ্ট্র নীতি মেনে নেয়া যায় না।

গতকাল বুধবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে ১৫-২৯ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী দাওয়াতি পক্ষের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, আলহাজ আলতাফ হোসেন, ডা. শহীদুল ইসলাম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, ফজলুল হক মৃধা।
পীর সাহেব আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতা আক্ষরিক অর্থেই রক্তে কেনা। কথা ছিল, দেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে। বৈষম্য দূর হবে। দুর্নীতি, দুঃশাসনমুক্ত দেশ গঠন হবে। এদেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিঃসৃত শাসনতন্ত্র হবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর দেখা গেল, রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে কোন ধরনের জনমত যাচাই না করেই ভিনদেশিদের অন্ধ অনুসরণ করা হলো। সরকার পদ্ধতি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব, অর্থনীতি নিয়ে মস্কো-ওয়াশিংটন দোলাচালে ব্যাহত হলো দেশগঠন। ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্রের বিকাশ হুমকির মুখে পড়লো। শিল্প বিকাশ থমকে গেলো। আইন-শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়লো। রাজনীতি হয়ে পড়লো আদর্শহীন, পেশীশক্তি ও কালো টাকা নির্ভর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, আমরা ৭১ কে ধারণ করি। অসহায়, মজলুম ও গণমানুষের জন্য সংগ্রাম করি এবং এদেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস ও ইসলাম নিঃসৃত নীতিতে নারীর উন্নয়ন ও মুক্তির আন্দোলন করি। দেশের সকল ধর্মের ও বিশ্বাসের মানুষের অধিকার এবং নিরাপত্তায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকি। আমরা সংঘাত নয়: বরং শান্তিপূর্ণ রাজনীতি করি। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করি। খেদমতে খালকের মাধ্যমে আদর্শ সমাজ গঠনের চেষ্টা করি। আমরা শুধু ক্ষমতা অর্জনকেই মুখ্য মনে না করে নীতির পরিবর্তনে কাজ করি। এমন বাস্তবতায় ১৯৮৭ সালের ১৩ মার্চ দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবী, উলামায়ে কেরাম, পীর মাশায়েখ, শিক্ষাবিদ ও গণমানুষের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পীর সাহেব চরমোনাই (রহ.)-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (রাজনৈতিক নিবন্ধন নং-০৩৪)।

তিনি আরও বলেন, মানুষ শান্তি মুক্তি চায়। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের দুঃশাসনে আজ দেশবাসী দিশেহারা। আল্লাহ’র দেয়া জীবনব্যবস্থা উপেক্ষা করে মানবরচিত মতবাদের অনুসরণের কারণেই আমাদের এই পরিণতি। তাই আসুন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, দেশের স্বার্থরক্ষা এবং ঈমানী দায়িত্ব পালনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পতাকাতলে শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সকলে সমবেত হই। তিনি আগামি ১৫-২৯ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী দাওয়াতি পক্ষ যথাযথ পালন করার জন্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ