দারিদ্র্যকে জয় করে ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পেলেন তাহমিনা
৩১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৪ এএম
কতদিন না খেয়ে স্কুলে গিয়েছি। এসেও খাবার জুটেনি। সেই খালি পেটেই আবার পড়তে বসতে হয়েছে। স্কুলের বেতন, টিউশন ফি কিছুই দেয়া সম্ভব হয়নি। একজোড়া ভাল জুতা, জামা কিংবা স্কুল ব্যাগ ছিল শুধুই স্বপ্ন। কথাগুলো বলছিলেন দারিদ্র্যের এমন শত বাধা মাড়িয়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার পৌরসভার ঈদিলপুর গ্রামের মেয়ে তাহমিনা আক্তার মুন্নি।
বাবা মোহাম্মদ মিজান একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী। সামান্য বেতনে সীতাকুণ্ড বাজারে ভ্রাম্যমান ফলের দোকানে কাজ করেন। ছয় সদস্যের সংসার তার। নুন আনতে পানতা ফুরায় এমন সংসারে বেড়ে ওঠা তাহমিনা এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটে ১৮১তম ও সি ইউনিটে ৩১২তম হয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছেন ডি ইউনিটে ৭৯তম এবং বি ইউনিটে ৪৫৪তম।
২০২১ সালে তাহমিনা সীতাকুণ্ড বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এসএসসি ও ২০২৩ সালে একই বিভাগে সীতাকুণ্ড সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। উভয় পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তীন্ন হন তিনি। দারিদ্র্যের কষাঘাত কিংবা না পাওয়ার বেদনা কখনোই পিছু টানতে পারেনি তাকে।
এ প্রসঙ্গে তাহমিনা আক্তার মুন্নি বলেন, বাবার দারিদ্রতা আমার পড়ালেখার অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। দৈনিক ১০ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি আমি। ছোটবেলা থেকে লক্ষ্য করেছি বাবা চাইতেন আমি পড়ালেখা করি, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করি কিন্তু একই সাথে তার অসহায়ত্বও আমি দেখেছি। যা আমাকে পীড়া দিয়েছে পাশাপাশি দারিদ্রের প্রতিকুলে দাঁড়িয়ে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর স্পৃহা জাগিয়েছে।
তাহমিনা বলেন, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে আমি বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার হতে চাই। আমি দেখেছি ভ্রাম্যমান ফলের দোকানে কাজ করতে গিয়ে আমার বাবা প্রায়ই পুলিশের হাতে হেনস্তা হতেন। একজন সন্তানের জন্য যা ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে আমার বাবার মত হাজারো শ্রমজীবী মানুষকে সম্মান দিতে চাই, সমাজের সেবা করতে চাই। তাহমিনা জানান, তার পড়ালেখা চালিয়ে নিতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা দিয়েছে তাদের প্রতিবেশী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তণ ছাত্র মুসলিম উদ্দিন। এছাড়া শিক্ষকগণ ও প্যাসিফিক জিন্স ফাউন্ডেশন তার পড়ালেখায় অনন্য অবদান রেখেছেন। তাহমিনা বলেন, বই, খাতা, কলম আমি বিনামূল্যে পেতাম। শিক্ষকরা আমার টিউশন ফি নিতেন না। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করার সুযোগ দিয়েছে প্যাসিফিক জিন্স ফাউন্ডেশন। এক কথায় আমার বাবা-মা ও অন্য সবার সহযোগিতা না পেলে আমার পক্ষে এতদূর আসা সম্ভব হতো না। সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
এদিকে মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার খবরে উৎফুল্ল বাবা মিজান ও মা কোহিনূর বেগম। একই সাথে কপালে চিন্তার ভাঁজ। কিভাবে মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি করাবেন, রাজধানীর মত জায়গায় থাকা-খাওয়ার ব্যয় বহন করবেন তারা। এরপরও আশায় বুক বাঁধেন; সকল বাধা ডিঙিয়ে মেয়ে একদিন উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করবে, ঘুচে যাবে সকল দুঃখ-বেদনা, ছিনিয়ে আনবে সফলতা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী ফিরোজ হোসেনকে গ্রেফতার
বান্দরবানে বিজিবির অভিযান: অস্ত্র-গোলাবারুদ, ড্রোন ও সিগন্যাল-জ্যামারসহ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি উদ্ধার
কেরানীগঞ্জে তিন লক্ষ জাল টাকা এবং জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ, গ্রেফতার ২
পলাতক আওয়ামী খতিবের বিরুদ্ধে বায়তুল মোকাররমে বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিল
মাগুরায় যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
বায়তুল মোকাররমে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নামাজ না পড়িয়েই পালিয়ে গেলেন খতিব
ফলোঅনের শঙ্কায় বাংলাদেশ
শিক্ষক ভিন্ন ধর্মালম্বি হলেও তার সাথে ভদ্রতা, সৌজন্যবোধ ও সম্মান করতে হবে -ছারছীনার পীর ছাহেব
আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা: পুলিশ সদরদপ্তর
আখাউড়ায় ১১৫০ কেজি ভারতীয় কফিসহ গ্রেপ্তার ৩
কোটালীপাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলা, ঘরবাড়ি ভাংচুর লুটপাট করেছে সন্ত্রাসীরা
সাকিব-লিটনের ব্যাটে ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা
মণিপুর সংঘাত ইস্যুতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত সরকার
বাংলাদেশ বেতারে উর্দু সার্ভিস চালু করতে পর্যালোচনা সভা
তোফাজ্জলের জানাজায় মানুষের ঢল, দাফন হলো বাবা-মা ও ভাইয়ের কবরের পাশে
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
গণপিটুনিতে হত্যা: ঢালাওভাবে ছাত্রদের বিজয়কে খাটো করতে আওয়ামী মিডিয়ার আস্ফালন, সমালোচনার ঝড়
সাবেক এমপি ইয়াকুবসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে
ভারতকে ৩৭৬ রানে গুটিয়ে দিল বাংলাদেশ, হাসানের ৫