ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী পণ্যমূল্য
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯ এএম
ঈদের ছুটি শেষ হলেও চলমান রয়েছে আমেজ। ছুটি শেষে এখনো গ্রাম থেকে ফেরেন নি অনেক সাধারণ মানুষ। ফলে রাজধানীর বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিও কম। কিন্তু এর মধ্যেই গতকাল সোমবার ফাঁকা বাজারেও প্রায় সব পণ্যই বিক্রি হচ্ছে উচ্চ দামে। গতকাল সোমবার ক্রেতাশূন্য বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২৩৫ টাকা, গরুর মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর পেঁয়াজ-রসুনসহ প্রায় সব ধরনের সবজি এবং বিভিন্ন রকম মাছের দামও ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এর কারণ হিসেবে বিক্রেতারা দেখিয়েছেন, সাপ্লাই কম থাকায় দাম বেশি। কেউ কেউ বলেছেন পণ্যের দাম আরো বাড়বে।
রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের পরে বাজারের এই চিত্র। বাজারে সব দোকান খোলেনি। যারা দোকান খুলেছেন তারাও অন্যান্য সময়ের মতো সব পণ্য ঠিকঠাক মতো আনেননি। এমন পরিস্থিতিতেও বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে উচ্চ দামে। ঈদের আগে থেকেই মাংসের বাজার গরম। ঈদ শেষেও তার কোনো পরিবর্তন আসেনি। ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও তা এখনও রয়েছে ২০০ টাকার ওপরে। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ২৩০-২৩৫ টাকা, সোনালী জাতের মুরগি ৩৩০-৩৪০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৭০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মুরগির লাল ডিম ১২০ টাকা এবং সাদা ডিম ১১০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হয়েছে।
ঈদের আগের সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ৫-১৫ টাকা। অপরদিকে গরুর মাংস ও লেয়ার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ১০-২০ টাকা ও ৫ টাকা। আর উচ্চমূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে দেশি মুরগি ও খাসির মাংসের।
ব্রয়লার মুরগির দাম কেন এখনো বেশি জানতে চাইলে আল-আমিন চিকেন হাউজের বিক্রেতা বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে তো। এখন ক্রেতা কম বলে কিছুটা দাম কমেছে। ক্রেতা থাকলে দাম কমতো না, আরও বাড়তো। দেশি মুরগি এখনও ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা নেই, কিন্তু দাম কেন বেশি জানতে চাইলে বিক্রেতা শহিদুল্লাহ বলেন, দেশি মুরগি আসতেছে না, তাই দাম বেশি। ঠিকমতো আসা শুরু করলেই দাম কমে যাবে। এ দিকে গরুর মাংস বিক্রেতাদের কাছে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কেউ উত্তর দিতে চাননি। শুধু বলেছেন গরুর মাংসের দাম বেশিই।
ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা মো. লিটন বলেন, এখন তো ঈদ নাই, তাও দাম বেশি। দুইশ’ টাকার ওপরে ব্রয়লার মুরগি কিনতে হচ্ছে, এটা কোনও কথা হলো? আরেক ক্রেতা মোজাম্মেল বলেন, ঈদের আগে থেকে ব্রয়লার মুরগির দাম সামান্য কমেছে। কিন্তু এটাকে কোনোভাবেই কম দাম বলে না।
এ দিকে মাংসের সঙ্গে বেড়েছে আলু-পেঁয়াজ-আদা-রসুনের দামও। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৫০-৫৫ টাকা, নতুন দেশি রসুন ১৮০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত ৫ এপ্রিলের দামের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় পেঁয়াজে কেজি প্রতি বেড়েছে ১০ টাকা। দেশি রসুনের ও চায়না রসুনের দাম আবারো বেড়েছে ২০ টাকা। এছাড়া আলুর দাম ৫-১০ টাকা ও চায়না আদার দাম ২০ টাকা বেড়েছে প্রতি কেজিতে।
দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে আলু পেঁয়াজ বিক্রেতা আমিলুল ইসলাম বলেন, দাম যে কেন হুট করে বেড়ে গেলো জানি না। ঈদে মানুষের চাহিদা বেশি থাকাই কারণ হতে পারে। তবে আলুর দাম আরও বাড়বে এটা বুঝতে পারছি।
এ দিকে রোজার সময় সবজির বাজার নিম্নমুখী থাকলেও গতকাল বাজারে প্রায় সব সবজির দামই বাড়তি দেখা গেছে। শিম ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, দেশি গাজর ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৪০-৫০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, সজনে ১৫০ টাকা, কচুরমুখী ১৫০, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৫০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৬০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা করে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম, প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা।
দাম বেশি হওয়ার বিষয়ে সবজি বিক্রেতা রাজিব বলেন, মাল কম পাচ্ছি আমরা। ক্রেতা কম থাকলেও মাল আনতে হচ্ছে। আমাদের পরিবহন খরচ তো ঠিকই দিতে হচ্ছে। তাই দাম বেশি। হযরত নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, রোজার মাসে অনেক কম দামে সবজি পেয়েছে ক্রেতারা। এখন শুধু দাম বাড়বে। বাজারে যত ক্রেতা বাড়বে দাম ততই বাড়তে থাকবে।
অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে মাছের দামও বাড়তির দিকে। কিছু মাছের দাম বেড়েছে অনেক। আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১২০০-২২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০-৫০০ টাকা, কাতল মাছ ৩৮০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৪৬০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকা, কাচকি ৮০০ টাকা, কৈ ৩০০-৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, মেনি ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ১৫০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ টাকা, কাজলী ১৮০০-২০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হঠাৎ এত দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা হায়দার এক কথায় বলেন, ভালো জিনিসের দাম বেশিই হয়। কিন্তু এত বেশি হয় কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নদীর মাছের দাম বেশি হয়।
এ সময় কাজলী মাছ কিনতে এসে আফজাল হোসেন বলেন, ২ হাজার টাকা কেজি চেয়েছে কাজলী মাছ। অনেক দামাদামি করে ১৮০০ টাকায় নিতে পেরেছি। আমি না হয় কিনতে পারলাম, কিন্তু অন্যরা কি এই দামে কিনতে পারবে? অত্যধিক দাম রাখছে তারা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইয়ামালের মাইলফলকের রাতে হারের তেতো স্বাদ বার্সার
আর্সেনালের স্বস্তির ড্র,অ্যাটলেটিকোর দারুণ জয়
হেডের বিধংসী শতকে লন্ডভন্ড ইংল্যান্ড
পয়েন্ট হারিয়েও শীর্ষে আর্জেন্টিনা,অবনতি বাংলাদেশের
বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু
রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে
বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে
বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা
লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই
রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে
দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা
জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ
উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন
সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল