ঢাকা   শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১
বাড়ছে অপরাধ-কমছে শাস্তি

ঝুলছে জাল টাকার মামলা

Daily Inqilab সাঈদ আহমেদ

১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম

দেশের আদালতগুলোতে ঝুলে আছে জাল টাকা তৈরির অভিযোগে দায়েরকৃত অন্তত: ৭ হাজার মামলা। দুর্বল আইন, লঘু শাস্তি, মামলা পরিচালনায় মনিটরিং না থাকা, সাক্ষীর অভাব, সরকারী আইন কর্মকর্তাদের গাফলতিসহ বিভিন্ন কারণে বছরের পর বছর অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে আছে মামলাগুলো। মামলার আসামিরা জামিনে এসে নব উদ্যোমে সম্পৃক্ত হচ্ছে টাকা জালের মতো অপরাধের সঙ্গে। এর ফলে সম্প্রতি টাকা জালিয়াতচক্রের তৎপরতা ভয়াবহ রকম বেড়ে গেছে। ঈদুল ফিতরে কেনাকাটার ধুমে চলে জাল টাকার লেনদেন। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, টাকা জালিয়াতি রোধে বিদ্যমান আইনে আরও সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানা যায়, জানুয়ারি ২০০১ সাল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত জাল টাকা তৈরি করে সরবরাহ ও বাজারজাতকরণে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৭ হাজারের বেশি মামলা রয়েছে। এগুলো কোনোটি চার্জশিট প্রদান পর্যায়, অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্য গ্রহণ এবং কোনোটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। এসব মামলায় ব্যতিক্রম দু’ একটি বাদে সব আসামিই এখন জামিনে মুক্ত। আইনের ফাঁক- ফোঁকড় দিয়ে বেরিয়ে তারা নব উদ্যোমে লেগে যাচ্ছে টাকা জালিয়াতিতে।
মামলা আছে শাস্তি নেই
গতবছর নভেম্বর থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন থানায় ৩৫২টি মামলা হয় জাল টাকা তৈরির অভিযোগে। এসব মামলায় হাতেনাতে আসামি ধরা হলেও অধিকাংশই জামিনে বেরিয়ে আসে। অনেক ক্ষেত্রে প্রধান আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় টাকা জালিয়াতি আরও বিস্তৃতি লাভ করে।
অন্যদিকে যে হারে জাল টাকার মামলা হচ্ছে সে তুলনায় নিষ্পত্তির হার নগন্য। মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ায় শাস্তি হচ্ছে না অপরাধীদের। এতে অপরাধীদের মধ্যে কোনো ভীতির সঞ্চার হচ্ছে না। প্রচলিত আইনে (১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-ক ধারা) রয়েছে বড় ধরণের দুর্বলতা। আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না।
সূত্রটি জানায়, জাল টাকা তৈরি চক্রের নিজস্ব কিছু আইনজীবী রয়েছে। আসামি পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো কোনো পাবলিক প্রসিকিউটরের রয়েছে ঘনিষ্টতা। তারা পরষ্পর যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জালিয়াতচক্রের সদস্যদের চুক্তিতে কারামুক্ত করেন।
টাকা জালিয়াতির মামলাগুলো অনেক সময় র‌্যাব-পুলিশের তত্ত্বাবধানে থাকতেই পরিকল্পিতভাবে দুর্বল করে দেয়া হয়। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অপরাধীর জামিন লাভের সুবিধার্থে এজাহার দায়ের করা হয় দুর্বলভাবে। চার্জশীট দেয়ার ক্ষেত্রে আসামিদের স্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় না। যে নামে গ্রেফতার করা হয় সে নাম ও বর্তমান ঠিকানা থানায় রেকর্ড করা হয়। আসল নাম, পরিচয় ও স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ না থাকায় জামিনে বেরিয়ে ঠিকানা পরিবর্তন করে ফেলে আসামিরা। ফেরার হয়ে গেলে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। পরে সাজা হলেও সেই সাজা কার্যকর হয় না। এতে রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে যায়। অপরাধী ধরা পড়ে, মামলা হয়। অথচ শাস্তি হয় না। আবার শাস্তি হলেও কার্যকর হয় না সেটি।
দ্রুত মেলে কারামুক্তি
ঘটনা কয়েক বছর আগের। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ রাজধানীর বাড্ডা নুরেরচালা এলাকায় জাল নোট তৈরির কারখানা থেকে গ্রেফতার করে আব্দুর রহিম শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে। দম্পতিসহ জাল টাকার মামলায় ৫ আসামিকে ১৩ জুলাই আদালতে হাজির করা হয়। আদালত দম্পতির ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্য আসামি হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিনকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, কারখানা থেকে মাসে তারা কোটি টাকার জাল নোট তৈরি করতেন। কারখানা থেকে ১ হাজার টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের অন্তত ৪৩ লাখ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির বিপুল সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। রহিম শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে কারখানায় জাল নোট ছাপানোর কার্যক্রম বাড়িয়ে দেন। তারা প্রতিমাসে কোটি কোটি জাল টাকা ছাপিয়ে মার্কেটে ছাড়তেন। রিমান্ড শুনানির জন্য আসামিদের আদালতে তোলা হলে তাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে যান কয়েকজন আইনজীবী। ডিবি পুলিশের আবেদনের বিপরীতে তাদের জামিন প্রার্থনা করেন আইনজীবীরা। যদিও আদালত সেটি নাকচ করে দিয়েছেন।
এর আগের কয়েকটি ঘটনা। থানা পুলিশ সেকশন-৭, ব্লক-বি, রোড-৮, বাসা-৪৪ থেকে মোঃ মাসুদ রানা ওরফে নান্নুর কাছ থেকে ১০০০ টাকার ৩৭১টি জাল নোট, ১৭টি ৫০০ টাকার জাল নোট , ১০০টি ১০০ টাকার জাল নোট, ২০ পিস ১০০০ টাকা প্রিন্ট সম্বলিত নোটের কাগজ এবং ১০০ টাকার প্রিন্ট দেয়া ৭ পিস, ১০০০ টাকা নোট তৈরি করার কাগজ ৬৪০ পিস যাতে ১০০০ টাকার নিরাপত্তা সুতা লাগানো ছিলো। ১ বান্ডিল বাংলাদেশ ব্যাংক লেখা নিরাপত্তা স্টিকার যুক্ত জাল নোট তৈরির কাগজ জব্দ করা হয়। এ ছাড়া জাল নোট তৈরিতে ব্যবহৃত ১০০ গ্রাম সোনালি রংয়ের কেমিক্যাল, ২০০ গ্রাম সিলভার রং , ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ লেখা নোট ছাপানোর স্ক্যানার, জাল নোট তৈরির কাজে ব্যবহৃত দুটি প্রিন্টার ও একটি সিপিইউ, একটি কী বোর্ড ও একটি মাউস, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড লেখা পাঁচটি অ্যাকাউন্টের চেক বই জব্দ করা হয়। মাসুদ রানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। কিন্তু পরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর হয়। পরবর্তীতে মহানগর দায়রা জজ আদালতে তার জামিন হয়। আদেশে বলা হয়, আসামির মায়ের দু’টি কিডনি নষ্ট অথচ চিকিৎসার জন্য কেউ নেই। আসামির মায়ের চিকিৎসার বিষয় বিবেচনা করে ১ মাসের জন্য ১০ হাজার ঢাকা মুচলেকায় জামিন প্রদান করা হলো।
মামলায় সরকারপক্ষের কৌসুলি বলেন, আসামির পিতা ও অন্যান্য স্বজন আছে, এজাহার ও এফআইআরে পিতার নামের জায়গায় ‘মৃত’ লেখা নেই। চিকিৎসার জন্য অন্য কেউ নেই এ কথা সঠিক নয়। আসামি মিথ্যা তথ্য দিয়ে জামিন নিয়েছে।
সূত্রটি জানায়, শুধু একজন নান্নু নয়-এভাবেই কোনো না কোনোভাবে জামিনে বেরিয়ে ফেরার হয়ে যাচ্ছে জালিয়াতির কারিগররা।
বিচারে ধীরগতি
ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী জাল টাকা সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রজ্ঞাপন জারি বা আইন সংশোধনের মাধ্যমে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছিলো। মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা হত্যা, ধর্ষণ, আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য ও মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে। এর আগে জরুরি ক্ষমতা বিধিমালা অনুযায়ী সরকার কিছু মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে জরুরি বিধিমালার কার্যকারিতা না থাকায় এসব মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর সুযোগও ছিলো না। পরে মামলাগুলো ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে সাধারণ আদালতে নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর ফলে সাধারণ আদালতে মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হতে সময় লাগছে বছরের পর বছর। জামিনের বিরোধিতা করা হয়। শুনানিতে আইন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। কিন্তু মামলা রুজুর ক্ষেত্রে দুর্বলতা থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আসামিরা এ সুযোগটি গ্রহণ করে।
ঢাকা বারের সিনিয়র এডভোকেট মাহবুবুর রহমান জানান, জাল নোট প্রতিরোধে দেশে পৃথক কোনো আইন নেই। বর্তমানে দন্ডবিধি-১৮৬০ এর ৪৮৯(ক)-(ঘ) ধারা এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর ২৫(ক) ধারা অনুযায়ী এ সংক্রান্ত অপরাধের বিচার চলছে। অনুসৃত আইনে অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে নানা ধরণের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। যেমন : জাল নোট সংক্রান্ত মামলার শুনানির নির্ধারিত দিনে সাক্ষী প্রায় ক্ষেত্রেই উপস্থিত থাকেন না। এ কারণে মামলার কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। জাল নোটের বাহক অনেক ক্ষেত্রে নিরপরাধ হয়ে থাকেন। ফলে অনেক সময় সাধারণ মানুষও অজ্ঞতাবশত জাল টাকা বহন করার দায়ে ফেঁসে যান। জাল নোটের সংখ্যা মাত্র কয়েক পিস হওয়া সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তি ভোগ করা এবং জাল নোট প্রতিরোধে সমন্বিত কার্যক্রম না থাকায় বিদ্যমান আইনে বিচার বিঘ্নিত হচ্ছে।
খসড়ায় ঝুলছে নতুন আইন
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সূত্র জানায়, দেশে জাল টাকা প্রতিরোধ ও এ-সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য ‘জাল মুদ্রা প্রতিরোধ আইন, ২০২৩’ নামে নতুন একটি আইনের খসড়া গত ডিসেম্বরে চূড়ান্ত করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এক সংসদ শেষ হয়ে পরের সংসদ চালু হলেও সেই খসড়া এখনো আইনে পরিণত হনি। বিগত এক দশক ধরে নতুন আইন পাসের প্রশ্নে সরকার আশ্বস্ত করলেও চূড়ান্ত খসড়াটি এখনো আইনে পরিণত হয়নি। ফলে নতুন আইন এখনো প্রয়োগ উপযোগী হয়ে ওঠিন।
খসড়ায় জাল টাকা কারবারিরে সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’। সেই সঙ্গে এ ধরণের অপরাধ সংঘটনের মাধ্যমে অর্জিত সম্পত্তির দ্বিগুণ বা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত যেটি বেশি, সে পরিমাণ জরিমানা করা হবে। এ সম্পর্কিত গুজব ছড়ালে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।
আদালতে চলমান প্রায় সব মামলাই পরিচালিত হচ্ছে দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর ৪৮৯(ক)-(ঘ) ধারা এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর ২৫(ক) ধারা অনুযায়ী। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪-এ এক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে উল্লেখ রয়েছে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। কিন্তু তাতে কী ধরণের অপরাধের কী শাস্তি হবে, তা সুনির্দিষ্ট করা ছিলো না। অনুরূপ দণ্ডবিধি-১৮৬০ অনুযায়ী, এ-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং অর্থদণ্ড। এক্ষেত্রেও শাস্তির বিধানগুলো সুনির্দিষ্ট নয় বলে জানান আইনজ্ঞরা। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, জাল নোট সংক্রান্ত মামলার বিচার সুচারুভাবে সম্পাদন সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ ধরণের অপরাধের পরিধি বেড়েছে। তাই অপরাধের নতুন নতুন ধরন সংযোজন করে অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তি সুনির্দিষ্ট করে এক্ষেত্রে একটি পৃথক নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, ৭ ধরণের অপরাধ করলে অপরাধী সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এর মাধ্যেম অর্জিত সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত যেটি বেশি সেই অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অর্থ অনাদায়ে অতিরিক্ত পাঁচ বছর কারাদণ্ড ভোগ করবেন।
অপরাধগুলো হচ্ছে,– মুদ্রা জালকরণ বা জ্ঞাতসারে মুদ্রা জালকরণ প্রক্রিয়ার যে কোনো অংশ সম্পাদন করা, কোনো মুদ্রা জাল জানা সত্ত্বেও তা মজুত, কেনাবেচা, ব্যবহার, গ্রহণ কিংবা অন্য কোনোভাবে তাকে ‘আসল মুদ্রা’ বলে ব্যবহার বা লেনদেন করা, মুদ্রা জালকরণ কার্যে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে অথবা জালকরণ কাজে ব্যবহার করা হবে জানা সত্ত্বেও কোনো যন্ত্র, হাতিয়ার, উপাদান বা সামগ্রি প্রস্তুত করা বা প্রস্তুত প্রক্রিয়ার কোনো অংশ সম্পাদন করা, কেনাবেচা, ব্যবহার, সরবরাহ, আমদানি-রপ্তানি, মেরামত, বহন, হেফাজত বা নিজের দখলে রাখা, জাল মুদ্রা তৈরি সংক্রান্ত পদ্ধতি উদ্ভাবন বা তথ্য আদান-প্রদান, জাল মুদ্রা তৈরি সংক্রান্ত ফাইল, অডিও ও ভিডিও ক্লিপ ইত্যাদির হার্ডকপি কিংবা সফটকপি দখলে রাখা, জাল মুদ্রা বিদেশ থেকে দেশে বা দেশ থেকে বিদেশে সরবরাহ বা পরিবহন বা পাচার করা এবং ব্লিচড বা টেম্পার্ড বা মিসম্যাচড মুদ্রা কেনাবেচা, ব্যবহার বা লেনদেন বা বহন বা দখলে রাখা।
এছাড়া জ্ঞাতসারে জাল মুদ্রা বা আসল মুদ্রা সম্পর্কিত কোনো গুজব ছড়ানোকেও এ আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। তবে এক্ষেত্রে অপরাধী সর্বোচ্চ ১০ বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অপরাধের আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা প্রসঙ্গে আইনের খসড়ায় বলা হয়, আইনে বর্ণিত আপরাধগুলো আমলযোগ্য, অ-আপসযোগ্য ও অ-জামিনযোগ্য বলে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধ ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী দায়রা জজ আদালত, অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত বা মহানগর দায়রা জজ আদালত, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচার হবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইয়ামালের মাইলফলকের রাতে হারের তেতো স্বাদ বার্সার

ইয়ামালের মাইলফলকের রাতে হারের তেতো স্বাদ বার্সার

আর্সেনালের স্বস্তির ড্র,অ্যাটলেটিকোর দারুণ জয়

আর্সেনালের স্বস্তির ড্র,অ্যাটলেটিকোর দারুণ জয়

হেডের বিধংসী শতকে লন্ডভন্ড  ইংল্যান্ড

হেডের বিধংসী শতকে লন্ডভন্ড  ইংল্যান্ড

পয়েন্ট হারিয়েও শীর্ষে আর্জেন্টিনা,অবনতি বাংলাদেশের

পয়েন্ট হারিয়েও শীর্ষে আর্জেন্টিনা,অবনতি বাংলাদেশের

বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি

বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু

সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু

রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে

রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে

বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত

বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে

বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা

বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা

লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে

রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে

দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা

দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা

জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ

জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ

উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী  প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন

উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন

সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।

পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার

রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল

রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল