তিস্তা নিয়ে মুখ খুলছে না কেউ
২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৩ এএম
চীনের ইয়ালুজাংবু (ইয়ালুজাংবুর বাংলাদেশ অংশের নাম ব্রহ্মপুত্র) নদের তিনটি স্টেশনের বন্যা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশকে সরবরাহ করছে বেইজিং। ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) রয়েছে, তার মেয়াদ চলতি বছরের জুলাইয়ে শেষ হবে। নতুন করে সহযোগিতার লক্ষ্যে এমওইউটি নবায়ন করতে চায় চীন। বাংলাদেশেরও এতে সম্মতি রয়েছে। চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নয় সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান পরিকল্পনাকারী উ ওয়েনজিং। প্রতিনিধিদলটি আগামী কাল শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। সফরকালে প্রতিনিধিদলটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ সেন্টার, হাইড্রোলজিক্যাল স্টেশন, সেচ প্রকল্প এবং পদ্মা নদীর ঊর্ধ্বসীমা এবং নিম্নসীমা পরিদর্শনের কথা রয়েছে। সফররত চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সংক্রান্ত সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় ‘টু’ শব্দও হয়নি। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং যৌথ নদী কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পানি সম্পদের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মূল বিষয় ছিল— ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সংক্রান্ত সহযোগিতা। যৌথ নদী কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, এটা একটা রুটিন বৈঠক ছিল। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পানি সম্পদ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে একটি সমঝোতা রয়েছে। সমঝোতার আলোকে চীন তার ভূ-খণ্ডে অবস্থিত ইয়ালুং জাংবু/ব্রহ্মপুত্র নদের তিনটি স্টেশন থেকে আমাদের ডাটা দিয়ে থাকে। যার আওতায় আমরা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ তথ্য পাই। এই যে ব্রহ্মপুত্র নদের তিনটি স্টেশন থেকে আমরা যে তথ্য-উপাত্ত পাই; এ সংক্রান্ত সমঝোতার মেয়াদ জুলাইয়ে শেষ হয়ে যাবে। এটাকে কীভাবে অব্যাহত রাখা যায় বা বাড়ানো যায়, এটা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। চাইনিজরা চায় এটার কনটিনিউশান(চলমান) হোক। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ডাটা সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চায়। আর আমাদেরও এটার প্রয়োজন আছে। যৌথ নদী কমিশনের তথ্য বলছে, সমঝোতার আলোকে বাংলাদেশের ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে চীন তার ভূ-খণ্ডে অবস্থিত ইয়ালুং জাংবু/ব্রহ্মপুত্র নদের তিনটি স্টেশন; নুসিয়া, নাগেসা ও ইয়াংকানের বন্যা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত ২০০৬ সালের জুন মাস থেকে বাংলাদেশকে সরবরাহ করছে চীন। আনুষ্ঠানিকভাবে বন্যার তথ্য-উপাত্ত প্রেরণের নিমিত্ত ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারকটি ২০১৪ সালের জুনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুদেশের পানি সম্পদ সচিব/ভাইস মিনিস্টার পর্যায়ের বৈঠকে পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। এ সমঝোতা স্মারকের আলোকে তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ সংক্রান্ত বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ২০১৫ সালের মার্চে চীনে অনুষ্ঠিত দুদেশের মধ্যে এক বৈঠকে স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরপর ২০১৭ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত পানি সম্পদ মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় দুদেশের সহযোগিতা বৃদ্ধিকরণের নিমিত্ত বন্যা প্রতিরোধ, খরা মোকাবিলা ও প্রতিরোধ এবং ভূমি ক্ষয় প্রতিরোধের বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। ইয়ালুজাংবু নদে অবস্থিত তিনটি স্টেশনের বন্যা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশকে সরবরাহ বিষয়ে ‘প্রিভেনশন অব হাইড্রোলোজিক্যাল ইনফরমেশন অব দ্যা ইয়ালুজাংবু/ব্রহ্মপুত্র রিভার ইন ফ্ল্যাড সিজনস বাই চায়না টু বাংলাদেশ শীর্ষক একটি সমঝোতা স্মারক ও এর বাস্তবায়ন পরিকল্পনা উভয়পক্ষ কর্তৃক পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। ২০১৯ সালের ৪ জুলাই চীনে অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক। চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পানি সম্পদ সচিবের বৈঠকে বেইজিংয়ের প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনার গুঞ্জন ছিল। তবে বৈঠকে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে যৌথ নদী কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, তিস্তা প্রকল্প আমাদের কোনো এজেন্ডায় ছিল না। যার জন্য তারা কোনো প্রশ্ন করেনি আর আমরাও তুলিনি। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কোনো আলোচনায় ছিল না। চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল গত সোমবার থেকে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে। নয় সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশটির পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান পরিকল্পনাকারী উ ওয়েনজিং। প্রতিনিধিদলটি আগামী কাল শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। সফরকালে প্রতিনিধিদলটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ সেন্টার, হাইড্রোলজিক্যাল স্টেশন, সেচ প্রকল্প এবং পদ্মা নদীর ঊর্ধ্বসীমা এবং নিম্নসীমা পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
হল্যান্ডে-রিয়ালের রাতে হ্যাটট্রিক রোনালদোর, নাসেরের গোল উৎসব
চার ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগা চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
ঘুরে দাঁড়িয়ে বার্সাকে হারিয়ে জিরোনার ইতিহাস
হল্যান্ডে একাই দিলেন চার গোল,সিটির দাপুটে জয়
নারী বিশ্বকাপের সূচির জন্য শেষ মুহূর্তের অপেক্ষা
সরকার হটাতে গণবিপ্লব ঘটাতে হবে : আমিনুল হক
যুদ্ধ সভ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে: ভিসি ড. মশিউর রহমান
শ্রমিকদের নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা - বদিউজ্জামান সোহাগ
ব্রাহ্মণপাড়ায় পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিতে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা
‘পানি তাল খাইয়া শরীরডা ঠান্ডা কইরা যায় সবাই’
বাজিতপুরে বিশাল মাহফিল আজ
শ্রীনগরে ৭টি ঘর পুড়ে ছাই
অসহনীয় গরম ও লোডশেডিংয়ে চরম জনভোগান্তি
দৈনিক ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পর নদীর বাঁধ অপসারণ
ভোলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ২৫
বড়াইগ্রামে নিজ ঘরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
কাপ্তাই হ্রদ শুধু দেশের নয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সম্পদ
রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-ঢাকা রুটে কমিউটার রেলের যাত্রা শুরু
ফ্রি ফায়ারে পরিচয়ে বিয়ে ৬ মাস পর লাশ
দৌলতপুরে আগুনে পুড়লো ব্যবসায়ীর ৫ ঘর ও নগদ ১২ লাখ টাকা