রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য অটোমেশনের বিকল্প নেই
০১ মে ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৪, ১২:০৭ এএম
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য অটোমেশনের বিকল্প নেই। বর্তমানে সবাই অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করতে পারে। বাংলাদেশের ইনফরমাল সেক্টর অনেক বড় বিধায় এই সেক্টর থেকে কর আদায় গুরত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, বেসরকারি খাত আমাদের সাথে থেকে সহায়তা করতে পারে।
গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহোরণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয় রূপরেখা’ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা রাহমাতুল মুনীম ও এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পিআরআই’র চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার। প্যানেল আলোচনায় কথা বলেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (মেট্রো চেম্বারের/এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) আশরাফ আহমেদ, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানি মার্কেট, বেসরকারি ও সরকারি ঋণ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ক্যাপিটাল মার্কেট নিয়ে আরো আলোচনা করা দরকার। কিভাবে আরো বেশি ভালো কোম্পানি মার্কেটে আসে, সে বিষয়ে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। তাহলে মানি মার্কেটের ওপর চাপ কমবে। ক্যাপিটাল মার্কেট, ইক্যুইটি মার্কেট ও বন্ড মার্কেট বৃদ্ধি করা জরুরি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপান্তরকারী নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়ন শেষে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলস কাজ করছে বর্তমান সরকার। তার সুযোগ্য পরিচালনায় গত ১৫ বছরে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, সেগুলো থেকে দেশ এখন রিটার্ন পাচ্ছে। আইবাস ব্যবস্থাপনার কারণে বাজেটের বাস্তবায়নের দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্বে বাজেট পাশ হলেও, বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হতে অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিক চলে যেতো। বর্তমানে ১ জুলাই থেকেই অফিসগুলো বাজেট ব্যবহার করছে। আলোচনা অনুষ্ঠান থেকে যেসব পরামর্শ উঠে এসেছে, সেগুলো অর্থ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়াও গত পাঁচ বছরে ১২০ ধরনের করছাড় দিয়েছে সরকার। এভাবে ব্যবসা ও শিল্পে সুবিধার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে করছাড় দেওয়া হচ্ছে। তবে ২৫ বছর ধরে (দীর্ঘদিন) এমন সুবিধা থাকা উচিত নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে করছাড় বাদ দিলে আগামী ৩ থেকে ৪ বছরে ৬০০ বিলিয়ন বা ৬০ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব সংগ্রহ করা সম্ভব। আর্থিক খাতে মধ্যমেয়াদি সংস্কার বাস্তবায়ন করা গেলে আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ ৪৯ ট্রিলিয়ন বা ৪৯ লাখ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে করণীয় নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আহসান এইচ মনসুর। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এই সেমিনার আয়োজন করা হয়। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক এম এ রাজ্জাক। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে কথা বলেন পিআরআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আর্থিক খাত টেকসই করতে করছাড়ের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার বিকল্প নেই। অভ্যন্তরীণ আয় বাড়াতে প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা করে করছাড় বাদ দিতে হবে। এতে ৪ বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা যাবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় তারা নতুন করে টাকা ছাপাবে না। দেশের ব্যাংক খাতে এ বছর সব মিলিয়ে দেড় লাখ কোটি টাকার মতো আমানতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে। ফলে ব্যাংক খাতের পুরো অর্থ সরকারের বাজেট বাস্তবায়নে প্রয়োজন হলে ব্যক্তি উদ্যোগের কী হবে, এই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আহসান এইচ মনসুরের এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমি মনে করি, বেশি ঋণ নেওয়া ভালো জিনিস। যত বেশি ঋণ নেওয়া হবে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তত বাড়বে। আহসান এইচ মনসুর বলেন, বর্তমানে কর জিডিপির অনুপাত ৭ দশমিক ৬ শতাংশ; দক্ষিণ এশিয়ায় এটি সবচেয়ে কম। আমাদের কর জিডিপির হার সোমালিয়া বা ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর কাছাকাছি। সংস্কার না করা হলে আগামী বছরে এই হার আরও কমবে। আর ১০ শতাংশের কম কর-জিডিপির অনুপাত নিয়ে উচ্চ আয়ের দেশে উত্তরণ সম্ভব নয়। এ বক্তব্যের সঙ্গেও দ্বিমত পোষণ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সবাই উৎসাহের সঙ্গে বলেন, দেশে কর-জিডিপির অনুপাত হতাশাজনক; কিন্তু তিনি বিষয়টি সেভাবে দেখেন না। কর জিডিপি নিয়ে সোমালিয়া কঙ্গোর সঙ্গে তুলনা করা ঠিক নয়। সে সব দেশের সঙ্গে তুলনা করলে সব কটি মানদণ্ড নিয়ে তুলনা করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যাদের কর জিডিপি হার বেশি, তাদের রাজস্ব আয়ের উৎস দেখতে হবে। যেমন মালদ্বীপের কর-জিডিপির হার বেশি। সেখানে রাজস্ব আদায়ের মূল উৎস পর্যটন খাত। আমাদের কিন্তু এমন উৎস নেই।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় স্ট্যান্ডে চাঁদার দাবীতে হামলার অভিযোগ; আহত-১৩
শুটিংয়ে গিয়ে আপত্তিকর আচরণ করায় নির্মাতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা
সালাম মুর্শেদীর ৪ মামলার জামিন নামঞ্জুর
সম্প্রীতির জন্য রাখাইন রাজ্যে টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অপরিহার্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
গবিসাসের নতুন সভাপতি সানজিদা, সম্পাদক ইভা
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার গুদামে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
খুবির উৎকর্ষ সাধনে পাশে থাকবে ইরান
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নাম বদলে হলো ‘যমুনা রেলসেতু’
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের দাবি হরিরামপুর-শিবালয়বাসীর
গোয়ালন্দে সুইট হাট জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের
হঠাৎ কেন দোয়া চাইলেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া!
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে ফেলছে : শিক্ষা উপদেষ্টা
এবার ৯৭ বলে অপরাজিত ২০১ রিজভির
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক
বাংলাদেশী রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত, সমালোচনার ঝড়
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে নিয়ে জনগণের অসন্তোষ
ইসরায়েলে হামলার জবাবে এবার ইয়েমেনে বিমান হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র
কাপ্তাই লেকে জেগে ওঠা ভাসামান তীরে সবুজ ফসলের সমারোহ
বেনাপোলে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীর টাকা ছিনতাই, ৩ দালাল আটক
ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করলেন বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকরা