ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি

ঢাবিতে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ-সমাবেশ

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৬ মে ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ০৬ মে ২০২৪, ১২:০৬ এএম

সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনে ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পৃথিবী জুড়ে নিপীড়িত মানুষের পক্ষে, মানবতার পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানায় শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলও করেন তারা। এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকসহ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী।

সংহতি সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তথ্যপ্রমাণবহুল গণহত্যা হলো ফিলিস্তিনের গণহত্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এতসংখ্যক নারী-শিশু এর আগে কখনও হত্যা হয়নি। অথচ মানবতার ফেরিওয়ালা বলে দাবি করা পৃথীবির মোড়লরাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ গণহত্যায় মদদ দিচ্ছে।
সমাবেশে উপস্থিত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক নকিব নাসরুল্লাহ বলেন, আজকে আমরা মানবতায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে এখানে এসেছি। আজকে আমাদের অবস্থান নিপীড়িত মানুষের পক্ষে। ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে দাড়াতে আপনাকে মুসলিম হতে হবে না। শুধু মানুষ হলেই হবে। এমন গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত ইতিহাসকে ভেঙে দিয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে কোন যুদ্ধে এত নারী-শিশু এর আগে কখনও হত্যা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, নেতানিয়াহু এবং এই যুদ্ধের সরাসরি মদদদাতা বাইডেন যুদ্ধাপরাধী। ফিলিস্তিনের পক্ষে পুরো বিশ্বে আন্দোলন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলেনে জেগে উঠা উচিত। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের সকল চক্রান্ত শেষ হবে।

সমাবেশে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম অপু বলেন, আমাদের নতুন কিছু বলার নেই। আমাদের এই আন্দোলন কোন নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য নয়। এই আন্দোলন মানবতার বিরুদ্ধে বিষফোঁড়া ওইসব রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। এত পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তথ্যপ্রমাণবহুল গণহত্যা এর আগে পৃথিবী কখনও দেখেনি। এই পরিমাণে তথ্যপ্রমাণবহুল গণহত্যা দেখার পরেও পৃথিবীর মোড়লরা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। ফলে এই ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন তুলতে হবে।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, গাজায় এ পর্যন্ত হতাহত হয়েছে ৩৪ হাজার ৬শত জন মানুষ। যারা ইসরাইলের বাহীনিকে একটি পাথর পর্যন্ত নিক্ষেপ করেনি। বাদ যায়নি শিশু বা নারী। এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছে ১০ হাজার মহিলা। গাজায় ৩৭টি হাসপাতালের মধ্যে ৩০টি হাসপাতালকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা হয়েছে। গাজার ৮৭ শতাংশ স্কুলকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সমাবেশে উপস্থিত হয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, গত অক্টোবরে শুরু হওয়া আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার ফিলিস্তিনি মা-বোনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। গত অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণ ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে আসছে, সেই লড়াই তাদের একার নয়, এ আমাদেরও লড়াই, গোটা বিশ্বের লড়াই। যারা ইসরাইলের সাথে আতাত করবে, যেসব কোম্পানি ইসরাইলের প্রোডাক্ট প্রমোট করবে, তাদেরকে আমরা বয়কট করবো ইনশাআল্লাহ। আমরা গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই, আমরা সবসময়ই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকব ইন শা আল্লাহ।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রব নাসিম বলেন, স্বাধীনতার পর ইসরাইল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেই স্বীকৃতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট’ ইসরাইল শব্দটি যুক্ত করে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমানে ষড়যন্ত্র করে সেই একসেপ্ট শব্দটি আমাদের পাসপোর্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ