জমির শ্রেণি পরিবর্তন হয়রানি ঘাটে ঘাটে ঘুষের স্থায়ী খাত

অপরাধ না অধিকার?

Daily Inqilab সাঈদ আহমেদ

১২ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১২ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম

রাজধানীর আফতাব নগর ‘জি’ ব্লকে সাড়ে ৩ কাঠার প্লট কিনেছিলেন সাইদুর রহমান। প্লটটির তিন পাশে উঁচু ভবন। কিন্তু খালি পড়ে আছে তার প্লটটি। বিল্ডিংয়ের কাজ ধরছেন না কেন- জানতে চাইলে তুলে ধরেন তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। বছর দুই আগে প্লট ব্যবহার তথা ভবন নির্মাণের প্ল্যান জমা দেয়ার জন্য রাজউকের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন সাইদুর। কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলেও ২ মাস পর আবেদনটি ফেরত আসে। সেখানে হাতে লেখা কয়েক বাক্যের একটি নোট। ‘‘ জমির শ্রেণি ‘ঝিল’। জেলা প্রশাসক কর্তৃক শ্রেণি পরিবর্তন ব্যতিরেকে বিবেচনার সুযোগ নেই।’’ তিন হাত বদল হওয়া বাউন্ডারিকৃত প্লটটি সাইদুর কেনেন বিদ্যমান বাজার মূল্যে। অথচ রেকর্ডে রয়ে গেছে ‘ঝিল’। অথচ ডোবা, নালা, ভিটা, খাল, ঝিল ভরাট করেই প্রতিষ্ঠা পায় ইস্টার্ন হাউজিংয়ের বেসরকারি এই প্রকল্প। রাজউকের অনুমতি সাপেক্ষেই বাস্তবায়িত হয় প্রকল্পটি। ঝিল ভরাটের সময় রাজউক প্রকল্পটিকে আটকায়নি। যখনই সুবিধাভোগী প্রান্তিক খরিদদার হিসেবে সাইদুর প্লটের প্ল্যান পাসের জন্য রাজউকে গেলেন, তখনই এলো বাগড়া। পরে তিনি ডিসি অফিসে দরখাস্ত করলেন প্লটের শ্রেণি পরিবর্তনের। ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ছোটাছুটি করেন ২ বছর। এর মধ্যে ডিসি পরিবর্তন হয় ৩ জন। এডিসি (রেভিনিউ) কতজন পরিবর্তিত হয়েছে ঠিক নেই। জমির আর ‘শ্রেণি পরিবর্তন’ হয় না। ত্যক্ত-বিরক্ত সাইদুর প্লটটি ফেলে রেখেছেন এভাবেই।

শুধু এক সাইদুর রহমান নন। প্লট বা জমি কিনে মহাবিপাকে পড়ে আছেন দেশের বহু মানুষ। জমির শ্রেণি যদি ডোবা, ঝিল, জলাশয় কিংবা কৃষি হয় রেজিস্ট্রেশন খরচ কিছুটা কম লাগে। এ সুবিধার কারণে স্থাবর সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে অনেকেই বিষয়টি লক্ষ্য করেন না। কিন্তু নিচু জমি যখন ব্যবহারের প্রয়োজনে ভরাট করতে যানÑ তখনই ওঠে আইনি প্রশ্ন। জলাশয়, ডোবা, নাল হিসেবে রেকর্ডীয় জমি ভরাট করা একাধিক আইনে দণ্ডনীয়। যেমন ‘প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০’ অনুযায়ী কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী প্রাকৃতিক জলাধার, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্যকোনো ভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। এই বিধান লঙ্ঘন করলে আইনে ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী ৫ বছর কারাদণ্ড কিংবা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। আবার ২০১০ সালে সংশোধিত ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন’ অনুযায়ীও জলাশয় ভরাট নিষিদ্ধ।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বছরে গড়ে ৫ হাজার ৭৫৭ একর জলাভূমি ভরাট হচ্ছে। এর ফলে উত্তরাধিকার সূত্রে কিংবা ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত জমির মালিক যদি জলাশয় ভরাট করেন তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোটাদাগে দু’টি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা যায়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আইনটির ঐচ্ছিক প্রয়োগ দেখা যায়। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নানা ফাঁক-ফোকরে আইনটিকে উৎরে যেতে পারেন। বিপাকে পড়েন নিরীহ ও দুর্বলরা। রাজউক, জেলা প্রশাসন, এসি (ল্যান্ড), তহশিলদারদের আইনের জালে আটকা পড়েন তারা। দুর্ভোগ, হয়রানিতে পড়ে ঘুষ প্রদানে বাধ্য হতে হয়। ফলে আইন দু’টি কার্যতঃ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে বসে থাকা দুর্জনদের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে বছর দুই আগে দেয়া হাইকোর্টের একটি রায়ে আইনগুলোর লাগাম টেনে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, জমির শ্রেণি পরিবর্তন,হস্তান্তর,ব্যবহার নাগরিকের মৌলিক অধিকার।
কী বলে সংবিধান : সহায়-সম্পত্তি অর্জন, রক্ষা, ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবহার নাগরিকের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার। এ বিষয়ে সংবিধানের ‘তৃতীয় ভাগ’ এ সুস্পষ্ট অনুচ্ছেদ রয়েছে। অনুচ্ছেদ ৪২ (১) এ বলা হয়েছে, ‘আইনের দ্বারা আরোপিত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর বা অন্যভাবে বিলি-ব্যবস্থা করিবার অধিকার থাকিবে এবং আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বা দখল করা যাইবে না। আইনজ্ঞদের মতে,সংবিধান প্রদত্ত এই অধিকার, ‘প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০’, ‘বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০’ এবং ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন’ পরস্পর বিরোধী। ফলে বালু উত্তোলন, জমি ভরাট, শ্রেণি পরিবর্তনসহ ভূমি সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা ক্রমেই বাড়ছে। সংবিধানের মর্যাদা আইনের ঊর্ধ্বে। সংবিধান সংরক্ষণ এবং ব্যাখ্যা করার এখতিয়ার উচ্চ আদালতের। জমির শ্রেণি পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি মামলায় ২০২২ সালে বিচারপতি মো: আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ একটি রায় দিয়েছেন। গত ১৭ এপ্রিল ১৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।

রায়ে আদালত বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২ (১) অনুযায়ী সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইন দ্বারা নাগরিকের উপরোল্লিখিত সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন-এ বিধি-নিষেধ তথা আরোপ করা তথা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২(১) এর মর্মার্থ। সুতরাং এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার। কোনোভাবেই উক্ত মৌলিক অধিকার তথা সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তনে বাধা প্রদান করা যাবে না। নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন-এর অধিকারে পরিবর্তন, বিধি-নিষেধ এবং যেকোনো প্রকারের নিয়ন্ত্রণ কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের মাধ্যমে করতে হবে।

আদালত কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬ অতি দ্রুত আইন আকারে পাস করার জন্যও জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়েছেন। হাইকোর্ট বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খননের বিধিনিষেধ আরোপ করে ‘কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬’ এর খসড়া আইন প্রণয়ন করা হলেও কোনো এক অজানা কারণে এটি এখনো আলোর মুখ দেখছে না। বাংলাদেশের কৃষি জমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড় ইত্যাদি সুরক্ষার জন্য আইনটি দ্রুত জাতীয় সংসদে পাস হওয়া অতি আবশ্যক।

একটি দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আইল্যান্ড ডেভেলমেন্ট অথোরিটি) প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেন আদালত। জাপান ও ফিনল্যান্ডে প্রণীত আইন যতটুকু সম্ভব অনুসরণ ও সমন্বয় করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন গঠন করা যেতে পারে পৃথক এ কর্তৃপক্ষ।

২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুশুম্বা ইউনিয়ন ভূমি অফিস মো: মিজানুর রহমানকে একটি নোটিশ দেন পুকুর খনন বন্ধ করতে। ‘বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০’ মোতাবেক কেন দরখাস্তকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির ৩ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। আগে ওই বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি মিজান জেলা প্রশাসক বরাবর নিজের কৃষি জমিতে পুকুর খননের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। সেই আবেদন নাকচ করে উল্টো তাকে নোটিশ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২২ সালের ২ জন পুকুর খনন বন্ধে দেয়া নোটিশ অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

মতামতে ঝুলছে আইন : কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তনের বিধান সম্বলিত ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার’ আইনটি ‘মতামত’ পর্যায়ে ঝুলছে ৮ বছর হয়। ২০১৪ সালে এ আইনের খসড়া প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালে আইনের ওপর মতামত নেয়া হয়। পরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেটি সেখানেই থেমে যায়। ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এলে আবারো মতামত চাওয়া হয়। এরপর এটির অগ্রগতি সম্পর্কে জানা যায় না।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য আগে একবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পর্যালোচনা কমিটিতে পাঠনো হয়। দুই কমিটি দুই দফা বৈঠক করে কিছু সংশোধনীসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠায়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ভূমি মন্ত্রণালয় আবারো আইনটি মন্ত্রিপরিষদে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। পরে এর অগ্রগতির কোনো তথ্য সূত্রটি জানাতে পারেনি।

খসড়ায় বলা হয়, সরকার ভূমির বিদ্যমান বহুমাত্রিক ব্যবহার, প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য ও এর অন্তর্নিহিত ক্ষমতা এবং গুণাগুণ অনুযায়ী কৃষি মৎস্য সম্পদ, পশুসম্পদ, বন, চিংড়ি চাষ, শিল্পাঞ্চল, আবাসন প্রতিষ্ঠান, পর্যটন, প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা, প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্য বিচরণ এলাকা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভূমির পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারা দেশে পর্যটন, প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা, প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্য এলাকা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভূমির পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করবার লক্ষ্যে সারা দেশে পর্যায়ক্রমে ভূমি জোনিংয়ের ব্যবস্থা করবে। যেসব ক্ষেত্রে ভূমি জোনিং করা হবে তা বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ ভূমি জোনিং বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি থাকবে। কমিটির কার্যক্রম বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে।

আইনটির খসড়ায় ‘কৃষিজমি’ বলতে ফসলি জমি, বনভূমি, গোচারণ ভূমি, খড় উৎপাদনের ভূমি, পশুখাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য ব্যবহৃত ভূমি, চা-বাগান, ব্যক্তিগত বনভূমি, ফলদ উদ্ভিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত ভূমিকে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আইনের মাধ্যমে কৃষিজমি সুরক্ষা করতে হবে এবং কোনোভাবেই তার ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে এবং উদ্দেশ্যপ্রণীত বিধি মোতাবেক অত্র বিধানাবলি পরিবর্তন করা যাবে।

‘অধিকার’ যখন ‘অপরাধ’ : নাগরিক তার প্রয়োজনে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করবেন। এটি সংবিধান প্রদত্ত অধিকার। কিন্তু এ অধিকার বাস্তবায়নের সহজ কোনো পথ নেই। এই সুযোগটিকে ভূমি সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রধান খাত করে রেখে দেয়া হয়েছে জমি রেজিস্ট্রেশন এবং নামজারিতে। ‘চালা’ জমিকে ‘ডোবা’ কিংবা ‘ভিটাবাড়ি’কে ‘কৃষি’ হিসেবে দেখিয়ে জমি হস্তান্তরের দলিল হচ্ছে। এতে জমির ক্রেতা আপাতঃ কিছু আর্থিক রেয়াত পেলেও পরবর্তীতে পড়েন মহাবিপাকে। অন্যদিকে ষোলো আনা মওকা লোটেন সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার, দলিল লেখক ও রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারীরা। এ কারণে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ ওঠে সাব-রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দুর্নীতিগ্রস্ত সাব রেজিস্ট্রাররা। একই কর্মে পিছিয়ে নেই ভূমি অফিসগুলো। ভূমি অফিসের তহশিলদার, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরাও বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন শ্রেণি পরিবর্তন করে। এতে সরকারই শুধু রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে না, জমির মালিককেও বহুমাত্রিক দুর্ভোগে ফেলছে। ‘অপরাধী’ হিসেবে সাব্যস্ত হতে হচ্ছে জমির মালিককে। জেলা প্রশাসন থেকে শ্রেণি পরিবর্তনের নির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই। ফলে সাধারণ মানুষকে পড়তে হচ্ছে অন্তহীন দুর্ভোগে। গুনতে হচ্ছে অপরিমেয় বাড়তি অর্থ। বাড়ি-ঘরের প্ল্যান পাস করাতে রাজউকসহ, নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন ও পৌর প্রশাসনের ঘাটে ঘাটে ঢালতে হচ্ছে অর্থ। ভুক্তভোগীরা মনে করেন, শ্রেণি পরিবর্তন সাংবিধানিক অধিকার হলেও এটিকে ‘অপরাধমূলক কর্ম’ হিসেবে জিইয়ে রেখে সুপরিকল্পিতভাবে দুর্নীতির স্থায়ী খাত হিসেবে রেখে দেয়া হয়েছে। আইন সংশোধনের মাধ্যমে এই অবস্থার অবসান এখন সময়ের দাবি।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নিউইয়র্কের প্রকাশ্যে ১৩ বছরের কিশোরকে গুলি করে হত্যা পুলিশের

নিউইয়র্কের প্রকাশ্যে ১৩ বছরের কিশোরকে গুলি করে হত্যা পুলিশের

বিতর্কে বিপর্যয়ের পরেও বাইডেনের পাশে ডেমোক্র্যাটরা

বিতর্কে বিপর্যয়ের পরেও বাইডেনের পাশে ডেমোক্র্যাটরা

সাংবাদিকদের এসবি প্রধান প্রতিবাদ লিপিতে কোনো নির্দেশনা দেয়নি, আপনাদের কোনো অর্ডার করিনি

সাংবাদিকদের এসবি প্রধান প্রতিবাদ লিপিতে কোনো নির্দেশনা দেয়নি, আপনাদের কোনো অর্ডার করিনি

টেকনাফে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

টেকনাফে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

ডোনেটস্কের দুটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের দখল নিয়েছে রাশিয়া

ডোনেটস্কের দুটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের দখল নিয়েছে রাশিয়া

জঙ্গি দমনে বিশ্বে রোল মডেল পরিচিত পেয়েছে: ডিএমপি কমিশনার

জঙ্গি দমনে বিশ্বে রোল মডেল পরিচিত পেয়েছে: ডিএমপি কমিশনার

মাগুরায় জনগণের প্রচেষ্টায় মৃতপ্রায় খালের প্রাণ ফিরে পেল

মাগুরায় জনগণের প্রচেষ্টায় মৃতপ্রায় খালের প্রাণ ফিরে পেল

মরেও রেহাই নেই! গণপিটুনিতে মৃত মুসলিম যুবকের বিরুদ্ধেই মামলা ভারতে

মরেও রেহাই নেই! গণপিটুনিতে মৃত মুসলিম যুবকের বিরুদ্ধেই মামলা ভারতে

সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা

সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা

ইউরোপে নতুন দক্ষিণপন্থি জোটের ঘোষণা ওরবানের

ইউরোপে নতুন দক্ষিণপন্থি জোটের ঘোষণা ওরবানের

ফ্রান্সে নির্বাচনের প্রথম ধাপে অতি ডানপন্থীদের জয়

ফ্রান্সে নির্বাচনের প্রথম ধাপে অতি ডানপন্থীদের জয়

রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি

রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি

রাজবাড়ীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কায় দর্জির মৃত্যু

রাজবাড়ীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কায় দর্জির মৃত্যু

মাগুরার বেরইল পলিতা থেকে এক তরুণীর খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার

মাগুরার বেরইল পলিতা থেকে এক তরুণীর খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার

৪ দিনের সফরে বাংলাদেশে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান

৪ দিনের সফরে বাংলাদেশে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান

বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ, জঙ্গি হামলার শঙ্কা নেই

বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ, জঙ্গি হামলার শঙ্কা নেই

নড়াইলে শূকর চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু

নড়াইলে শূকর চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু

প্রবল মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টি, বন্দরে ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

প্রবল মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টি, বন্দরে ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

প্রধান দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে নিয়েই চিন্তায় মার্কিন ভোটাররা

প্রধান দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে নিয়েই চিন্তায় মার্কিন ভোটাররা

রাবি শিক্ষক সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে ৪০ ভুল

রাবি শিক্ষক সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে ৪০ ভুল