বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান তার সার্টিফিকেট জালিয়াতির বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে কিছু অসাধু সাংবাদিক ও দুদকের কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গতকাল শনিবার মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানসহ বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তারা বছরের পর বছর টাকার বিনিময়ে যেসব সনদ ও মার্কশিট বিক্রি করেছে, বিক্রি করা সনদগুলো কীভাবে শনাক্ত করা যায়, সেই তথ্য শামসুজ্জামান আমাদের দিয়েছে। আমরা সেই তথ্য বোর্ডের কাছে দেব, যাতে তারা সেগুলো বাতিলের ব্যবস্থা নেয়। পাশাপাশি বুয়েটের এক্সপার্টদের যুক্ত করে কাজটি কীভাবে করা যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শামসুজ্জামান প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে জাল সনদ দিয়েছে। এমনকি তার সঙ্গে বোর্ডের বহু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও জড়িত রয়েছে বলেও জানান হারুন অর রশীদ।
সংবাদিক ও দুদক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে শামসুজ্জামান সনদ বিক্রি করে আসছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয় রমজানের শেষের দিকে। তিনি আমাদের কাছে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় অনেক সাংবাদিক তাকে ফোন দিয়ে ঈদের সালামি চেয়েছিলে। এর প্রেক্ষিতে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। শামসুজ্জামান খোলামেলাভাবে জানিয়েছে, পদে থাকতে তার অনেককে ম্যানেজ করতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফা রিমান্ডে তিনি জানিয়েছে কোন সাংবাদিককে কখন, কীভাবে কত টাকা দিয়েছে। আমাদের ডিবির কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কোনো সংবাদিক যদি শামসুজ্জামানের মুখোমুখি বসে কথা বলতে চান, আমরা তাকে সেই সুযোগ দেব। আমরা মনে করি, অন্যায়ভাবে কেউ হয়রানির শিকার না হোক। পাশাপাশি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা তাদেরও বলেছি, দুদক সম্পর্কে শামসুজ্জামান যে তথ্য দিয়েছে, চাইলে আপনারাও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।