রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার ম্যুরাল নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা। তাদের গ্রেফতার এবং পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশের আইজিকে এ নির্দেশ প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে। আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো: সেলিম এবং বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিএম আব্দুর রাফেল। তিনি জানান, রাজশাহী মহানগরীর পাউবোর নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ কাজে বাধা দেয়ার ঘটনা আদালতে উপস্থাপন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত চাঁদাবাজদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে কি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে দাখির করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামি ৪ জুন।
এর আগে এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো: ওজিউল্যাহ। এ সময় সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আব্দুর রাফেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বিনয় কুমার ঘোষ।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চাঁদা না পেয়ে রাজশাহী পাউবো কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার ম্যুরাল নির্মাণের কাজ সন্ত্রাসীরা বন্ধ করে দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঠিকাদার কাজ করতে পারছেন না। এ নিয়ে পাউবোর পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ঘটনার দিন রাতে পাউবো রাজশাহী পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ শাখার উপ-সহকারী প্রকৗশলী সুকেশ কুমার নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় এই জিডি করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে,ওইদিন দুপুরে সন্ত্রাসী জনি, রফিক ও মোস্তাকের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল পাউবোর অফিস চত্বরে প্রবেশ করে। পরে তারা ঠিকাদার ও তদারকি প্রকৌশলীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। সন্ত্রাসীরা শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রেখে চলে যেতে বলে। ভয়ে শ্রমিকরা পালিয়ে যান। গত ২৭ মে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেননি। ম্যুরাল নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। ম্যুরাল নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করছে রাজশাহীর মেসার্স খন্দকার কনস্ট্রাকশন। কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি মো: পলাশ জানান, নগরীর বিহারি কলোনি, শালবাগান, উপশহর ও সপুরা এলাকার একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্যাং কয়েক দিন আগে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনদিনের মধ্যে চাঁদার টাকা পৌঁছে দিতে বলেছিল সন্ত্রাসীরা। রাজশাহী পাউবোর একজন প্রকৌশল কর্মকর্তা জানান, গত রোববার সন্ত্রাসীরা কর্মকর্তাদের কক্ষে প্রবেশ করে পাউবো ভবন জ্বালিয়ে দেয়ারও হুমকি দিয়েছে। তাদের ভয়ে কাজ শুরু করতে পারছেন না ঠিকাদার।