গরিবের স্কুল নামে খ্যাত চালাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘদিন যাবত পানিতে ডুবে আছে। এর ফলে বছর জুড়ে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কর্যক্রম। সরেজমিনে দেখা যায়, গত এক বছর যাবত সড়কের চরম পানিবদ্ধতার কারণে স্কুল মাঠে কালো হাঁটু পানি জমে আছে। সরকারি এই স্কুলের সামনের সড়কে গত এক বছর যাবত হাটু পরিমান পানি জমে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছে বিদ্যালয়ের ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থী ও এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ১৯৯০ সালে ১৫ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণখান এলাকার চালাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এক সময় সুনামের সহিত মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে ছিলো। সরকারের পক্ষ থেকে নানাবিধ সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও গত এক বছরে উত্তরার দক্ষিণখান এলাকার চালাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪০০ শিক্ষার্থী হইতে কমতে কমতে বর্তমানে ১২৩ জন দাঁড়িয়েছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ ছাড়াও একাধীক সুত্রে জানা যায়, গত ৩/৪ বছরে দক্ষিণখান চালাবন এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান বাড়ার পাশাপাশি মানুষের বসবাসও কয়েকগুণ বেড়েছে। বিনাবেতনে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের সুযোগ থাকা সত্বেও এ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী দিন দিন কমে যাওয়ার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সারোয়ার জাহান ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে বৃষ্টি ছাড়াই এক বছরেরও বেশি সময় পানি জমে রয়েছে। সড়কে দীর্ঘ সময় পানিবদ্ধতার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই স্কুল মাঠ পানিতে সয়লাব হয়ে যায় এবং সেই পানিতে স্কুলের নিচতলায় চারটি শ্রেণীকক্ষে পানি ঢুকে পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেও এখানকার জনপ্রতিনিধিরা দ্বীতল ভবনের এই সরকারি স্কুলটিকে দেখভালের দায়িত্বে উদাসীন।
এসময় প্রধান শিক্ষক বলেন, বর্তমানে ১২৩ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য ১জন পুরুষ শিক্ষক ও ৫ জন শিক্ষিকা রয়েছে। ৬ জন শিক্ষক থাকা সত্বেও এখানকার ছাত্র ছাত্রীরা উপযুক্ত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এমনটাই অভিযোগ করেন অভিবাবকগণ। তারা বলেন স্কুলের সামনের রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যেও কোমলমতি শিশুরা সকাল হলেই ছুটে যায় নিজ বিদ্যালয়ে।
অভিভাবকেরা আরো বলেন, এলাকার গরীব অসহায় পরিবারের লোকজন, নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ ও অসহায় দুস্থ পরিবারের লোকজনের জন্য সরকার প্রতিবছর ভূর্তুকি দিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। অথচ সরকারের বেতন খাওয়া এই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাগণ স্কুলটিকে বাঁচিয়ে রাখতে তাদের কোন ধরনের ভুমিকা দেখা জায় না। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সারোয়ার জাহান বলেন, তাদের শিক্ষকরা যথাসময়ে স্কুলে আসে। গতকালের বৃষ্টির পানিতে পিচ্ছিল হওয়া সড়কে হাঁটতে গিয়ে দুই জন শিক্ষিকা পরে গিয়ে ব্যাথা পাওয়ায় তারা স্কুলে আসতে পারেনি।
দীর্ঘ এক বছর যাবত চালাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সামনের সড়কে জমে থাকা কালো পানি না সরার কারণ, বছর জুড়ে মাঠ ও শ্রেনীকক্ষের ভিতরে পানি এসব বিষয় স্কুলের ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি খায়রুল আলম লিটনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয় প্রধান শিক্ষকই ভালো বলতে পারবে। এসময় এলাকাবাসী জানান, গরীবের স্কুল নামে পরিচিত সরকারি এই স্কুলটিকে বাঁচাতে খুব দ্রুত সড়কের পানিবদ্ধতা দূর করার ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আশা করছেন।