বানভাসি মানুষের ভিড় বাড়ছে আশ্রয়কেন্দ্রে
২০ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২০ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম
উজানের ঢল, ভারী বর্ষণ ও সিলেট বিভাগের চার জেলাতে পানি বাড়ছে। এতে বিভাগের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। এছাড়া পৌরসভার বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও দোকানপাঠে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এতে সাধারণ মানুষজন ছুটছে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে।
বড়লেখা উপজেলার টেকাহালি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন সাহেদা বেগম। ৫৫ বছর বয়সী এই নারী বলেন, ‘বন্যার কারণে পানি বাড়ছেই। ঘরে কোমর পানি। দাঁড়াইবার জায়গা নেই। বন্যার পানির স্রোতে আমার ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। ঘরের ভিতরে আর থাকার মতো না। পরিবারের সদস্য নিয়ে বিপাকে পড়েছি। দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে না গেলে বন্যার পানিতে শিশুদের বিপদ বাড়তে পারে। তাই বাড়িঘরের সব ফেলে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাচ্ছি। না ফেলে উপায় নেই সব নষ্ট হয়ে গেছে।
একই কথা বলেন রানু বেগম। ৩৫ বছর বয়সী রানু বেগম বলেন, ‘বন্যার পানিতে আমার বাড়িটা ধসে গেছে। উপায় না পেয়ে গতকাল রাতে এখানে এসে উঠি। এই স্কুলে ৩০টি পরিবার থাকছে।’
গতকাল বুধবার মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৌলভীবাজার জেলায় ৭২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৭টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত। বন্যা কবলিত গ্রামের সংখ্যা ৪৩২। বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯০ জন। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৯৮টি।
সিলেট জেলার সিলেট মহানগর ও ১৩টি উপজেলায় মোট পানিবন্দি ৬ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ। সুনামগঞ্জে পানিবন্দি ৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে সিলেটে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ১৭ হাজার ৮২৫ জন এবং সুনামগঞ্জে ১২ হাজার ৫০০ জন।
জানা গেছে, গত দুদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বড়লেখা পৌর এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও দোকানপাঠে পানি প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি উঠেছে বাড়ির মধ্যে। এতে শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাই ঘরে থাকতে না পেরে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে।
তালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান এখলাছ উদ্দিন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকেছে। কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে পানি ঢুকেছে। এরমধ্যে ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। তিনি সায়পুর আশ্রয় কেন্দ্রে আছে উল্লেখ করে বলেন, ‘এই কেন্দ্রে ১২টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারকে আমরা খিচুড়ি রান্না করে খাইয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার পাঠানো হচ্ছে। তবে রাস্তাঘাটে পানি থাকায় সড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে। এছাড়া পাদদেশ ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে।’
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজরাতুন নাঈম বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি ও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব পরিবারের মাঝে খাবার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শুকনো খাবারও পাঠানো হচ্ছে।’
পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘ত্রিপুরায় গত রাতেও বৃষ্টি হয়েছে। থেকেও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। তাই মনু ও ধলাই নদে উজানের পানি ঢুকছে।’
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
দীর্ঘত্যাগের বিনিময়ে স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে : ডা. রফিক
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল অবকাশে এখন কক্সবাজার-রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনা
প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
খুলনায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুবি শিক্ষার্থী নিহত
সাংবাদিক আনিসের ওপর হামলার ঘটনায় সোনারগাঁ প্রেস ক্লাবের নিন্দা
রাউজানে জুমার নামাজে যাবার পথে দিবালোকে গুলি করে ব্যবসায়িকে হত্যা
শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাসান, সম্পাদক লিটন
পাবিপ্রবির এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রদল কর্মীদের মারধরের অভিযোগ
ছাত্র হত্যার আসামী ধরতে যাওয়া পুলিশের উপর হামলা-মারধর
অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম, মহাসচিব শরফ উদ্দিন
শেরপুরে ছাত্রদল নেতা সাদিদের উদ্যোগে কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী পালন
গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বললেন নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী
মতলবে শহীদ জিয়া স্মৃতি নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব -তথ্য সচিব
'গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল' কাদের উদ্দেশ্যে বললেন মির্জা আব্বাস
আল্লামা আব্দুল হামিদ গুরুতর আহত
স্ত্রীকে সভাপতি করতে বিএনপির দলীয় প্যাডে পাঁচ নেতার সুপারিশ
ফের বিশ্বমঞ্চে ড. ইউনূসের বাজিমাত, এক সফরেই পঞ্চাশের বেশি বৈঠক
ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিতে থানায় হামলা, আহত ৫ পুলিশ
গোয়ালন্দে ওসির মধ্যস্ততায় সাদপন্থী ও জুবায়ের পন্থি মুসুল্লিদের মধ্যে উত্তেজনার অবসান