ব্রহ্মপুত্র-যমুনা জনপদে বন্যা
০৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম
দেশের অন্যতম প্রধান অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা উভয় নদ বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনার শহর-গ্রাম-জনপদে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমেই তলিয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চল-নিম্নাঞ্চল। গতকাল বুধবার বিকাল পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র, যমুনাসহ ৮টি নদী ১৭টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্ষার সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দেশের অভ্যন্তরে অতিবৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে উজানে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে ঢল-বানের তোড় বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিশেষ করে সিকিম, অরুণাচল, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে অতি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আসামে ইতোমধ্যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ভারত নিজেদের বন্যার চাপ কমাতে বাঁধ, ব্যারাজগুলোর গেইট খুলে পানি ছেড়ে দিয়েছে। সেই বন্যার পানি নামছে ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে। এর ফলে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোণাসহ দশটি জেলা কমবেশি বন্যা কবলিত হয়েছে।
গতকাল বিকাল পর্যন্ত বৃহৎ অববাহিকায় অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তিনটি পয়েন্টের সবক’টিতেই বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ২০ সে.মি. এবং চিলমারী পয়েন্টে ৯ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে যমুনা নদীতেও। যমুনা নদ তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সাঘাটা পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সে.মি. ঊর্ধ্বে, ফুলছড়ি পয়েন্টে ১৭ সে.মি. ঊর্ধ্বে এবং বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাছাড়া যমুনায় পানি সিরাজগঞ্জ, কাজীপুর ও সারিয়াকান্দিতে বিপদসীমার খুব কাছাকাছি নিচে রয়েছে। এর ফলে গতকাল প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল। সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি ক্রমাগত বেড়ে গতকাল বিকাল পর্যন্ত মাত্র ২৯ সে.মি. নিচে পৌঁছে গেছে। এ অবস্থায় সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে ভয়াবহ নদীভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উত্তর জনপদের দুধকুমার নদী পাটেশ^র পয়েন্টে ঠিক বিপদসীমায় রয়েছে। ধরলা নদী কুড়িগ্রামে বিপদসীমার মাত্র ২২ সে.মি. নিচে, তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে মাত্র ১৯ এবং কাউনিয়ায় ৩১ সে.মি. নিচে রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা জনপদে বন্যা পরিস্থিতি শুরু হতেই উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলে ডুবে যাচ্ছে আরও বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ চর ও নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, বাগ-বাগিচা, বীজতলা, সবজি খেত, রাস্তাঘাট। নিম্নাঞ্চলের মানুষের কষ্ট-দুর্ভোগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চলের সর্বত্র গবাদি পশু-পাখির খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
নদ-নদীর প্রবাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে গতকাল বুধবার পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকতে পারে। বৈশি^ক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ্আগামী দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর সংলগ্ন উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী এবং ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা নদী সংলগ্ন কতিপয় পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম জেলার ব্রহ্মপুত্র নদ সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি ঘটতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পাউবো’র পর্যবেক্ষণাধীন দেশের ১১০টি নদ-নদীর পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৮৩টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ৮টি নদ-নদী ১৭টি স্থানে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলো হচ্ছেÑ ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, দুধকুমার, সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, সোমেশ^রী।
গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে পাউবো’র তথ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছেÑ রাজশাহীতে ১২৭, নোয়াখালীতে ১১৬, টেকনাফে ১০১, দিনাজপুরে ৯৮, কক্সবাজারে ৮১ মিলিমিটার।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্ষার বাহক দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে জোরালো অবস্থায় রয়েছে।
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, টানা ছয়দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মীরসরাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে সহস্রাধিক পরিবার। কাজ না থাকায় কষ্টে রয়েছে দিন মজুর সহ খেটে খাওয়া মানুষ। পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ভেঙে গেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণ সড়ক।
এছাড়া পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত। পানিবন্দি ৪৫০ পরিবারের মাঝে গতকাল উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জানা গেছে, টানা ছয় দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মীরসরাই পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, জোরারগঞ্জ, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, মীরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, ওসমানপুর ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন ইনকিলাবকে জানান, গত ৬ দিন টানা বৃষ্টিতে মীরসরাইয়ের অনেক এলাকায় পানি উঠে গেছে। গতকাল সকালে উপজেলার ১২ নম্বর খৈয়াছড়া ইউনিয়নে ২৫০ পরিবার ও ৬ নম্বর ইছাখালী ইউনিয়নের ২০০ পানিবন্দি পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, শেরপুর থেকে জানান, শেরপুর সীমান্ত অঞ্চলের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। উজানের পানি নেমে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চলে শত শত বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঝিনাইগাতী উপজেলার দাড়িয়ারপাড়, বাগেরভিটা, দরিকালিনগর. বালুরচর, সাড়িকালিনগর, হাসলিবাতিয়া. বাতিয়াগাও, সুড়িহাড়া, চতল, দিঘিরপাড় ইত্যাদি গ্রাম এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার গোলার পাড়, চেল্লাখালী, সন্ন্যাসিভিটা, খালভাঙ্গাঁ, ফকিরপাড়া ইত্যাদি গ্রামের শত শত বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত মাঝে মধ্যে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তবে সব নদীর পানি কমতে শুরু করলেও উজানে ভারি বৃষ্টিপাত হলে আবারো সীমান্তবর্তী ৩ উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল আলম রাসেল গতকাল উপজেলার দিঘিরপাড় এলাকায় বন্যাদূর্গতদের মাঝে ডেউটিন, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে টইটুম্বুর ফেনীর ফুলগাজী উপজেলাধীন মুহুরী নদীর পানি। রাত যত গভীর হয় ততই বাড়তে থাকে পানির স্রোত। এরপর ঘরের কিছু হালকা মালামাল পার্শ্ববর্তী বাড়িতে সরিয়ে নেওয়া হলেও খাট-বিছানাপত্রসহ অন্যান্য আসবাব সরানো যায়নি। এরমধ্যে আবার পানির প্রবল স্রোতে ঘরের পাশে বড় একটি গাছ উপড়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ভিটে থেকে মাটি সরে পানির চাপে ভেঙে যায় টিনশেডের ঘরটি। ততক্ষণে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন নুরুল করিম। এভাবে ঘর-ভিটে হারিয়ে দিশেহারা এই যুবক।
স্থানীয়রা জানান, ৩৪ বছর বয়সী নুরুল করিম রাজধানীর মহাখালী এলাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। আর ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর এলাকায় বাড়িতে থাকেন স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান সিদরাতুল মুনতাহা এবং মুহতাসিমুল হক ওয়াসিফ। বন্যার খবরে গ্রামে ফিরে আসেন নুরুল করিম। সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি ক্রমেই বাড়ছে। বাড়ি ভেঙে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। মাটি সরে আশপাশের কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়েছে। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সহায়তা দেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তথ্য মতে, ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেছেন ৬ হাজার হাজার লোক পানিবন্দি। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর-দ্বীপ চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো। তলিয়ে গেছে কিছু ঘরবাড়ী ও সবজির ক্ষেত।
গতকাল দুপুরে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ও চিলমারী নৌবন্দর পয়েন্টে ১৯ সে.মি ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০.৭২ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এছাড়া অনান্য নদ নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এদিকে নদ নদনদীর তীরবর্তী রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিরপুর উপজেলার ১৫টি পয়েন্ট দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
বিশ্বনাথ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সিলেটে কয়েক দফা বন্যা পর গত ৩দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতে ফের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল। শ্রমজীবী ব্যবসায়িরা মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এলাকায় সবচেয়ে বেশি গোখাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গত ৩ দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকদফা বন্যায় আক্রমণ করল। বিশ^নাথে বন্যার মূল কারণ হচ্ছে, অতি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও সুরমা নদীর পানি। সুরমা নদীটি উপজেলার উত্তর সীমান্ত দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক হয়ে সুনামগঞ্জের উপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছে। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের কাচা-পাকা রাস্তাঘাটের গর্তের সৃষ্টি ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছোটখাট যানবাহন প্রতিদিন দুর্ঘটনার পতিত হচ্ছে। অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা করা হলেও অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। অভাবি মানুষের অভাব বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এখন জীবন বাঁচাতে ঋণ কর্যধারের উপর নির্ভরশীল। সুযোগে অনেক দাদন ব্যবসায়িরা লাভবান হচ্ছেন। এক মাসের মধ্যে একাধিক বন্যা, এ উপজেলাবাসির নিকট এখন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ।
বিশ্বনাথ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সিলেটে কয়েক দফা বন্যা পর গত ৩দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতে ফের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল। শ্রমজীবী ব্যবসায়িরা মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এলাকায় সবচেয়ে বেশি গোখাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গত ৩ দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকদফা বন্যায় আক্রমণ করল। বিশ^নাথে বন্যার মূল কারণ হচ্ছে, অতি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও সুরমা নদীর পানি। সুরমা নদীটি উপজেলার উত্তর সীমান্ত দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক হয়ে সুনামগঞ্জের উপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছে। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের কাচা-পাকা রাস্তাঘাটের গর্তের সৃষ্টি ও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ছোটখাট যানবাহন প্রতিদিন দুর্ঘটনার পতিত হচ্ছে। অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা করা হলেও অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। অভাবি মানুষের অভাব বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এখন জীবন বাঁচাতে ঋণ কর্যধারের উপর নির্ভরশীল। সুযোগে অনেক দাদন ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। এক মাসের মধ্যে একাধিক বন্যা, এ উপজেলাবাসির নিকট এখন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ।
উখিয়া (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত কয়েকদিনের অতি বৃষ্টিতে একাধিক স্পটে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। মাটি সড়কের ওপরে পড়ে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে বেশ কয়েক ঘণ্টা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে সেনাবাহিনী বুলডোজার দিয়ে মাটি সরালে বেলা ১১টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানা যায়। প্রবল বর্ষণে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, ক্ষেত-খামার, নদী-নালা, খাল-বিল, নিম্নাঞ্চল পানিতে একাকার হয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের অফিস, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বাসস্থান নির্মাণ, ওয়্যারহাউজ নির্মাণসহ অন্যান্য লজিস্টিক সরবরাহের শেড নির্মানের ফলে পাহাড়ি মাটি কর্তন, বনভূমি সাবাড়, চাষযোগ্য ভূমি ভরাট করে উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিত, বাড়ি ঘর, স্থাপনা নির্মাণের কারনে সুষ্ঠু পয়ঃনিষ্কাশন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিবন্দি হয়ে অনেক গ্রাম। আবহাওয়া অধিদদফতর কক্সবাজার স্টেশনের সহকারি আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, লঘুচাপের প্রভাবে গত দেড় সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৭৪ মিলিমিটার। দিনের বেলা বৃষ্টির তীব্রতা কম হলেও মঙ্গলবার মাঝরাত থেকে আবারো ভারী বর্ষণ হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কলকাতায় প্রকাশ্যে মুরগির মাংস বিক্রি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ভারত থেকে অনুপ্রবেশের সময় ফেনীতে সুদানের নাগরিক আটক
ক্ষমতা গ্রহণ করেই বাইডেন আমলের ৭৮ নির্বাহী আদেশ বাতিল ট্রাম্পের
পেকুয়ায় প্রাচীন খাল উদ্ধারে পদক্ষেপ জনমনে স্বস্তি
ঢাকার বাতাস ২৪৬ স্কোর নিয়ে আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘সেকেন্ড লেডি’
গাজা একটি ‘বিশাল ধ্বংসস্তূপ’, পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন: ট্রাম্প
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির প্রথম পদক্ষেপ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
ট্রাম্পের শপথ : যোগ দেন চীনের হ্যান ঝেং ভারতের জয়শঙ্কর
সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
সত্যিই কি মারা গেছেন ম্যাশ? কি বলছে রিউমর স্ক্যানার?
সেই যুবকের বিরুদ্ধে ৯০০ টাকা চুরির মামলা
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা ট্রাম্পের
সাফারি পার্কের দেয়াল টপকে পালিয়ে গেল নীলগাই
জোকোভিচ-আলকারাজ হাইভোল্টেজ লড়াই আজ
বড় জয়ে পয়েন্ট টেবিলে দুই নম্বরে চিটাগাং
সুবর্ণ সুযোগ শুরুর ঘোষণা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ট্রাম্প
ভোটের অধিকার রক্ষায় জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে : সিইসি