পদত্যাগ করে জাতীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন
৩০ জুলাই ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪, ১২:০৮ এএম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, কোটা সংস্কারের দাবির ছাত্র আন্দোলনে নজীরবিহীন এই দমনপীড়নে শিশু-কিশোর, নারীসহ এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক ছাত্রজনতা হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছে। যা প্রতিদিন বেড়েই চলছে। এই কোটা সংস্কারের দাবির ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করতে গিয়ে এই সরকার পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে এবং জনতার ওপরে ইসরাইলি স্টাইলে বর্বর নির্মমতা চালিয়েছে।
অবিলম্বে গণহত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে পদত্যাগ করে জাতীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকেও গ্রেফতার করা হয়েছে এবং রিমান্ডের নামে চরম নির্যাতন চালানো হচ্ছে। যা সংবিধান ও মানবতা বিরোধী। পীর সাহেব বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নির্যাতন, হয়রানি ও তুলে নেয়া বন্ধ করুন। নির্বিচারে গ্রেফতার বন্ধ করুন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আটক করা ও রিমান্ডে নেয়া বন্ধ করুন। নিহতদের পরিবারকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় ক্ষতিপূরণ দিন। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন এবং পঙ্গুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। কারফিউ তুলে নিন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন। গতকাল সোমবার দুপুরে পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ছাত্র গণজাগরণ এবং তা দমনে সরকারের বর্বরতম নৃশংসতায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলের সহকারি মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, অ্যাডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট এম হাছিবুল ইসলাম।
পীর সাহেব বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার প্রেক্ষিতে সর্বস্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সেই বিক্ষোভ দমনে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজীরবিহীন নৃশংসতা, চরম নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড ও পাখির মত গুলি করে হত্যাকাণ্ডের শুরুতেই এই ছাত্র গণআন্দোলনে আত্মোৎসর্গিত সকল নিহতদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। পীর সাহেব চরমোনাই যারা অন্যায়ভাবে, জুলুম-নির্যাতন, হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বা হচ্ছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলকে আহ্বান করছি। রেজাউল করীম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরে আবারো দমন-পীড়ন শুরু করেছে। আন্দোলনের ছাত্র নেতৃত্বকে তুলে নেয়া, শারিরীক নির্যাতন করা ও ভয়ভীতি দেখানো অব্যাহত রেখেছে। শতশত মামলা দায়ের করে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। গায়েবী আসামী করে আরো হাজার হাজার মানুষকে আটক করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর আরও বলেন, গত ১ জুলাই থেকে শুরু করে যে কোটা সংস্কার আন্দোলন আন্দোলন তা একটি ঐতিহাসিক ছাত্র গণআন্দোলন- যা একটি অত্যাচারী-অবৈধ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্র-জনতাসহ সর্বসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সংগঠিত হয়েছে। এই আন্দোলনে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন, তারা জাতির ইতিহাসে বীর ও সংগ্রামী যোদ্ধা হিসেবে স্বরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকবেন।
এই আন্দোলনে যেভাবে মানুষ হত্যা করা হয়েছে তা পরিস্কার গণহত্যা। যার দায় সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর, তার মন্ত্রী পরিষদ ও তার দল আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে এবং দেশবাসীর নিকটে এজন্য তাদেরকে জবাবদিহী করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সেনাবাহিনীকে দ্রুতই ব্যারাকে ফিরিয়ে নিন। হত্যাকাণ্ডে যারা সরাসরি জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন ও ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারী ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের নিষিদ্ধ করুন। তথ্য প্রবাহ অবাধ করে দিন। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন। অন্যথায় আপনাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।
ইসলামী আন্দোলনের নেতা বলেন, রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে এই সরকারের পতনের একদফা দাবি নিয়ে ঐকমত্য রয়েছে। আমরাও সরকার পতনের একদফা দাবীতে একমত ছিলাম এবং আছি। এই জনবিচ্ছিন্ন ব্যর্থ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার লক্ষ্যে দেশের সকল রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী সংগঠনসহ দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণকে একতা গড়ে তোলার আহ্বান করছি। সময় মতো আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়া হবে বলেও পীর সাহেব চরমোনাই উল্লেখ করেন। এদিকে, গতকাল সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের হামলা ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। প্রতিবাদ বার্তায় তিনি বলেন, ঢাকার সায়েন্স ল্যাব, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেট, প্রেসক্লাব, পল্টন মোড়, উত্তরার বিএনএস সেন্টার, মিরপুরের ইসিবি চত্বর, রামপুরা ও মহাখালী এলাকা থেকে অনেক ছাত্রকে গ্রেফতার করে সরকার জনগণের নাগরিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। সরকারের নির্দেশে পুলিশ প্রশাসন ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গতকাল আবারো হামলা, টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও গ্রেফতার চলমান আন্দোলনে নতুনমাত্র যোগ করবে। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের মুক্তি এবং ছাত্রদের সকল দাবি দাওয়া মেনে নিতে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানান।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য
পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
কারাগারে এস কে সুর
‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’
ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে
অভি খালাস! তাহলে খুনী কে?
জল্পনা উড়াল চীনা সংস্থা টিকটক কিনছেন না মাস্ক
ধামরাইয়ে খাদ্যদ্রব্য তৈরির কারখানায় ফের আবার ডাকাতির চেষ্টা
রাজউক জোনাল অফিস স্থানান্তর আদেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দ্বিতীয় দিনের মতো অনশনে অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা
বন্ধ বেক্সিমকো খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
আধুনিক ডেটা ওয়্যারহাউজ স্থাপন করবে বিবিএস
পরিবারসহ জ্যাকব ও ছেলেসহ সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানির নতুন তারিখ
সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনের বিষয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান ইউজিসি’র
চুক্তিতে নিয়োগের দৌড়ে নওফেলের জালাল উদ্দিন চৌধুরী
পুলিশের চাকরি হারিয়ে ছিনতাইয়ে নামেন হাকিম
ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি
সাকরাইনে মেতেছে পুরান ঢাকা